১৯ এপ্রিল, ২০২৫ | ৬ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২০ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

ঠিকাদাদের গাফেলতি শাহপরীর দ্বীপ সড়কে মানুষ দুর্ভোগের শিকার

রহমত উল্লাহ, টেকনাফ

টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়কের সংস্কার কাজ শেষ না হওয়াতে দ্বীপের বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিগত ২০১২ সালের দ্বীপের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি ঢুকে শাহপরীর দ্বীপ থেকে হারিয়াখালী পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক বিলীন হয়ে যায়। বেড়িবাঁধ অরক্ষিত থাকায় ভাঙা সড়কের ওই পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হতো নৌকায়। দ্বীপের বাসিন্দাদের চরম দূর্ভোগ ও সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হয়েছে ।

সরকারের ১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বীপের বেড়িবাঁধ নির্মানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সড়ক সংস্কারের জন্যও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ২০১৮ সালে ৬৭ দশমিক ৭৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়। কাজ পেয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে,কে এন্টারপ্রাইজ শুরু থেকে ঢিলেঢালাভাবে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করেন। ২০২১ সালের জুন মাসে সড়কের পুরো কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এতদিনে অর্ধেকের এর বেশি কাজ শেষ করতে পারেনি তারা। এখন কাজ শেষ করতে আরও এক বছর সময় বাড়িয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, শাহপরীর দ্বীপ বড়খাল নামক জায়গায় একটি বড় ব্রিজ নির্মাণের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। খালের উপর জনসাধারণের চলাচলের জন্য সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন একটি ড্রাম সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন। যা দূর্ভোগের অনেকটা লাঘব করেছে। এছাড়া ওই নির্মাণাধীন ব্রীজের আগে ও পরে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক সংস্কার কাজের সাববেজ ও কম্পেকশনের কাজ শুরু হয়নি এখনো। ওই দেড় কিলোমিটার পথ এতই বেহাল যে, হেঁটে পথ চলতে নারী পুরুষের কান্নায় চোখ ভেসে যায়। বর্ষার বৃষ্টিতে সড়কের এই অংশ কর্দমাক্ত হয়ে যাওয়ায় দেখে বুঝার উপায় নেই, এটি সড়ক না চাষের জমি !

দ্বীপবাসীর অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরুতে কাজে মনোযোগী ছিলেন না। শেষ মুহুর্তে এসে তড়িগড়ি করে কাজ শেষ করতে চেয়েছেন। সড়কের কাজে নি¤œমানের ইটের খোয়া ও লবণাক্ত পানি ব্যবহারেরও অভিযোগ করেছেন তারা। এছাড়া গাইডওয়াল নির্মাণ ও অন্যান্য কাজে অদক্ষ রোহিঙ্গা শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাস্টার জাহেদ হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে একনেক সড়ক সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দিলেও প্রায় দুই বছরের বেশি সময়েও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী বর্ষাকালে অন্তত হেঁটে চলাচলের জন্য আপাতত ইটের খোয়া বসিয়ে সাববেজ ও কম্পেকশন শেষ করার দাবি করেছিল। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জনগণের দূর্ভোগের বিষয়টি গুরুত্বই দেয়নি। আগেথেকে গুরুত্ব দিলে বর্ষার আগে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার সড়কের সাববেজ শেষ করতে পারতেন।

সড়ক সংস্কারের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জে,কে এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুল জব্বার চৌধুরী বলেন, শাহপরীর দ্বীপের মানুষের কষ্টের চিত্র আমি নিজেই দেখেছি। প্রায় পাঁচ কিলোমিটর সড়ক সংস্কারের মধ্যে বড় খালের এপার ওপারে প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক সাববেজ হয়ে গেছে। বাকি অংশটুকুতে বৃষ্টির জন্য কাজ করা যাচ্ছেনা। মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা সত্য। কিন্তু আমরাও সাধ্যমত চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য।

শাহপরীর দ্বীপে বাসিন্দা ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা সোনা আলী বলেন, সরকার দ্বীপের বেড়িবাঁধ ও সড়ক নির্মাণের জন্য আলাদা দুটি বড় প্রকল্প দিয়েছেন। কিন্তু প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার অভাব এবং ধীরগতির কারণে শাহপরীর দ্বীপের মানুষকে আরও এক বর্ষা কষ্টভোগ করতে হচ্ছে।

স্থানীয় কলেজ ছাত্র মো. ইসমাইল বলেন, সড়ক সংস্কারে সরকার একটি বড় প্রকল্প দেয়ার পরও ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের অবহেলার কারণে আমাদের চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে শাহপরীর দ্বীপ-টেকনাফ সড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ এখনো কাদাযুক্ত ও অত পিচ্ছিল থাকে। যেখান দিয়ে নারী, শিশু, রোগী ও বৃদ্ধদের যাতায়ত অনেকটা অসম্ভব হয়ে ওঠছে।

সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কক্সবাজার’র উপ সহকারী প্রকৌশলী কীর্তি নিশান চাকমা বলেন, এ বর্ষার পর দ্বীপের মানুষের আর কষ্ট পেতে হবেনা। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের আগেই সড়কের কাজ শেষ হবে। বর্ষায় কিছুটা দূর্ভোগ হবে, এটা অসত্য নয়। তারপরও আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্টানকে জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলবো।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।