কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি পুলিশ) এর এক দারোগার বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, উক্ত দারোগা ইয়াবা উদ্ধারের নামে রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী হয়রানী, যাত্রীদের সাথে অশ্লীল আচরণ, শারীরিক নির্যাতন সহ ইয়াবা উদ্ধার করে সিংহভাগ গায়েব করারও গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সময়ে তার নির্যাতন ও নানা অপকর্মের শিকার হয়ে অহরহ সাধারণ মানুষ আর্থিক হয়রানীর পাশাপাশি শারীরিক ভাবেও লাঞ্চিত হয়েছে। তার অমানবিক অত্যাচার থেকে বাঁচতে একাধিক বার তার বিরুদ্ধে সিনিয়র কর্মকর্তাদের মৌখিক ভাবে অভিযোগ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে জানায় একাধিক ভুক্তভোগি। শুধু সাধারণ মানুষের সাথে নয়, প্রায় সময় তার নেতৃত্তাধীন টিমের এএসআই ও কনেস্টবলের সাথেও খারাপ আচরণের কারনে একাধিক পুলিশ সদস্য তার সাথে মাদক উদ্ধার অভিযানে যেতেও অনিহা প্রকাশ করে বলে জানায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এএসআই ও কনেস্টবল।
জানা যায়, গত বছরের ৬ মার্চ এস.আই কামাল আব্বাস কক্সবাজার মডেল থানায় থাকাকালীন অবস্থায় কলাতলীর টিএনটি অফিসের সামনে থেকে ২ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা সহ দক্ষিন ডিককুল এলাকার নজির আহমদ এর পুত্র মোঃ কবির(২০), একই এলাকার ছৈয়দ আহমদ এর পুত্র ফজল করিম(২২) ও মহেশখালী ধলঘাটার শরইতলী এলাকার আবুল হোসেন এর পুত্র কায়মুল ইসলাম কায়েম(৩২) ও ঢাকা পল্লবী থানার মীরপুর বেনারশি এলাকার মৃত ওবাইদুল হক এর পুত্র মোঃ ফয়সালকে (২২) আটক করে। পরে নগদে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একজনকে ছেড়ে দিলেও অপর তিন জনের কাছ থেকে পৃথক ভাবে দেড় লাখ টাকা নিয়ে দ্রুত জামিন হওয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়ে নাম মাত্র ৪২৫ পিস ইয়াবা দেখিয়ে ইয়াবা মামলায় আদালতে চালান দেয়া হয়। এর পর পরেই ইয়াবা নেশা মাথায় ডুকিয়ে নানা তদবিরের মাধ্যমে কক্সবাজার ডিবি পুলিশে পুষ্টিং নেয়। ডিবি পুলিশে যোগদানের পর থেকে প্রায় দেড় বছরে একাধিক অভিযান থেকে সিংহ ভাগ ইয়াবা গায়েব করে কোটি টাকার মালিক হয়েছে এ দারোগা।
একই ভাবে উক্ত দারোগা চলতি বছরের ১৪ মার্চ বিকেলে হিমছড়ি রোডে চেক পোষ্ট বসিয়ে একটি নোহা (মাইক্রোবাস) আটক করে। পরে তল্লাশি চালিয়ে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করে। ইয়াবা উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল থেকে গাড়ির মালিকের সাথে মোটা অংকের লেনদেন করে চালক, হেলপার ও গাড়িটি ছেড়ে দেয়। এদিকে নগদে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার হওয়ার পরেও কোন মামলা দেয়নি উক্ত দারোগা। এ ব্যাপারে কামাল আব্বাস জানান, ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনা সত্য, তবে গাড়ির চালক ও হেলপার এ অভিযানের সোর্স হওয়ার কারনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। তাছাড়া উদ্ধারকৃত ইয়াবার ব্যাপারে ওসি স্যারের সাথে কথা হয়েছে। তা পরে ধ্বংস করা হবে। কিন্তু উদ্ধারের ১ মাস পার হলেও এ ২০ হাজার ইয়াবার ব্যাপারে আদালতে কোন প্রতিবেদন দাখিল করেনি উক্ত দারোগা। এছাড়া সর্বদায় উখিয়ার কুতুপালং, শহরতলীর বসুন্ধরা সিটি, পর্যটন এলাকার দরিয়া নগর ও চকরিয়ার মেধাকচ্চপিয়া এলাকায় ইয়াবা উদ্ধারের নামে চেক পোষ্ট বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ সহ নানা ভাবে হয়রানী করার গুরুতর অভিযোগও ওঠেছে। গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে মেধাকচ্চপিয়ায় দুইটি বাসের যাত্রী নামিয়ে চেক করার সময় আবুল কালাম ও সুমন নামে দুই যাত্রী দ্রুত তল্লাশি করার তাগিদ দিলে আচমকা তাদের গালে তাপ্পর লাগিয়ে দেয় এ দারোগা। পরে পরিস্থিতি একটু বেসামাল হলে স্থান ত্যাগ করে। এভাবে প্রতিনিয় নানা ভাবে হয়রানী করে যাচ্ছে এ অসাধু দারোগা। পাশাপাশি তার অসাধু আচরণ থেকে বাদ যাচ্ছেনা পুলিশ সদস্যরাও। ডিবি পুলিশের একাধিক অফিসার জানান, দীর্ঘদিন যাবত ডিবি পুলিশে কর্মরত থাকার কারনে কাউকে সম্মানের চোখে দেখেনা এ অফিসার। এ ব্যাপারে নানা অপকর্মকারি কামাল আব্বাস জানান, কাজ করতে গেলে কিছু অভিযোগ থাকবে এটা দেখার বিষয় নয়। উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়টি তার সরণ নেই বলে প্রতিবেদককে জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।