কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ বাংলা টিভির সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপি সদর দফতরের সামনে অবস্থান নেন সাংবাদিকরা। পরে একটি স্মারকলিপি নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে যান সিনিয়র সাংবাদিকরা। ডিএমপি কমিশনার তাদের এ আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক নির্যাতনের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিএনপির বিভোক্ষ মিছিল ছত্রভঙ্গের সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়ায় পুলিশ। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাংলা টিভির রিপোর্টার আরমান ও ক্যামেরাপারসন মানিককে হেনস্তা করা হয়।
সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও তাদের পুলিশের গাড়িতে তুলে পল্টন থানায় নেয়া হয়। অবশ্য পরে অন্যান্য মিডিয়ার সাংবাদিকরা থানায় উপস্থিত হলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ডিএমপি সদর দফতরের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন সাংবাদিকরা। এ সময় তারা মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেনকে ক্লোজ এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নির্বাহী সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব বলেন, আমরা ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশের এমন আচরনে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
‘ডিসির মতো একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে কোনোভাবেই এ ধরনের আচরণ মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি তদন্তপূর্বক মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেনের শাস্তি দাবি করছি আমরা’- যোগ করেন তিনি।
চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সিনিয়র রিপোর্টার রাশেদ নিজাম বলেন, ‘সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে নিরাপত্তা দরকার। এখন পর্যন্ত সাংবাদিকদের ওপর যে কয়টি হামলা হয়েছে সেগুলোতে কারও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি। সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা ও লাঞ্ছনার ঘটনায় ডিসি আনোয়ার এবং তার ফোর্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
অবস্থান কর্মসূচির পরে চার দফা দাবিতে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে স্মারকলিপি প্রধান করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত সোমবার নয়াপল্টন এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের সময় বাংলা টিভির রিপোর্টার আরমান ও ক্যামেরাপার্সন মানিক নির্যাতনের শিকার হন। এতে নেতৃত্ব দেন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন ও তার ফোর্স। দায়িত্বরত অবস্থায় একজন সংবাদকর্মীকে যেভাবে প্রকাশ্যে নির্যাতন করা হয়েছে, সেটা পেশাদার বাহিনীর জন্য লজ্জার।’
‘আপনার কার্যকালে গত তিন বছরে ঢাকায় পুলিশ কর্তৃক আরও বেশ কয়েকটি সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নামমাত্র তদন্ত কমিটি গঠন এবং ক্লোজড করার মতো হাস্যকর কিছু শাস্তির ব্যবস্থা আমরা দেখেছি। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। কোনো সাংবাদিক দায়িত্বরত অবস্থায় পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছিত করেছে- এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল। সোমবারের ঘটনা সামনে রেখে অতীতের সব নির্যাতনের ঘটনার শাস্তি দাবি করছি। অতি দ্রুত বাংলা টিভির রিপোর্টার ও ক্যামেরাপার্সনসহ বিএনপি অফিসের সামনে নির্যাতনের শিকার হওয়া সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ওই ঘটনায় দোষী ডিসি মতিঝিল ও তার অধস্তন পুলিশ সদস্যদের শাস্তি দাবি করছি।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।