২৫ নভেম্বর, ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

তদন্তে অভিযুক্ত শের আলীর খুটির জোর কোথায়?

বিশেষ প্রতিবেদক:

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিগত ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর তারিখে ব্যবসায়ীদেরকে লাইসেন্স পাইয়ে দেয়ার নামে বিনা রশিদে টাকা উঠানোর সময় জনতা কর্তৃক হাতেনাতে আটক হওয়া লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলী এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছে। বিনা রশিদে টাকা উঠানোর ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য তৎকালীন সময়ে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় এবং কমিটির নিরপেক্ষ ও সুষ্ট তদন্তে ঘটনার সত্যতা মেলে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বাশখালী কর্তৃক সিভিল সার্জনকে জমা দেন শের আলীর বিরুদ্ধে প্রতিবেন। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত শের আলী র বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সিভিল সার্জন কর্তৃক একই সালের ১৬ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণসহ জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনিক ব্যবস্হা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হলেও রহস্যজনক কারণে শের আলীর ফাইলটি এখনো চাপা পড়ে আছে।
ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলী ২০১৬ সালে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। একই সালের ১ অক্টোবর বাঁশখালীর বাহাড়ছড়াস্থ বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজারে ব্যবসায়ীদেরকে লাইসেন্স পাইয়ে দেয়ার নামে বিনা রশিদে টাকা উঠানোর সময় জনতা শের আলীকে হাতেনাতে ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তৎকালীন বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাহাঙ্গীর আলমকে আহবায়ক, মেডিকেল অফিসার ডা. তুষিত কুমার বড়–য়াকে সদস্য সচিব ও মেডিকেল অফিসার ডা. আবদুর রহিমকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পরদিন ২ অক্টোবর কমিটির নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর তৎকালীন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত ১৯৪৮৪(১৩) স্মারকের আদেশে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলীকে সন্ধীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী করে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হয়। এদিকে বদলীর আদেশ পাওয়ার পর স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলী সন্ধীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করে। সেখানে দুই মাস চাকুরী করার পর সুকৌশলে তদবীর করে সে পুনঃরায় লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলে আসে। স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলী ২০১৬ সাল হতে অদ্যাবধি লোহাগাড়া উপজেলায় কর্মরত রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে নিজ বেতনে কর্মরত স্যানিটারী ইন্সপেক্টরদের কাছে তথাকথিত সমিতির নামে মাসিক চাঁদা দাবী ও চাঁদা দিতে কেউ অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগে বেনামী দরখাস্ত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে শের আলীর বিরুদ্ধে। তার এহেন কর্মকান্ডে স্বাস্থ্য বিভাগে ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হতে চলেছে। শের আলী র নানা কর্মকান্ডে মাঠ পর্যায়ে কর্মচারীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হচ্চে বলে জানা যায।এ ব্যাপারে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়গুলো অস্বীকার করেন। তাহলে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলীর খুঁটির জোর কোথায়?
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ও লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।

শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নয়, প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে থাকার বিধান থাকলেও স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলীর বাসা কক্সবাজার জেলার চকরিয়ায়। তিনি একদিকে অনিয়মিত ও অন্যদিকে চকরিয়া থেকে কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে চকরিয়ার বাসা থেকে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মস্থলে যাওয়া-আসার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। বাঁশখালীতে ব্যবসায়ীদেরকে লাইসেন্স পাইয়ে দেয়ার নামে বিনা রশিদে টাকা উঠানোর সময় জনতা কর্তৃক হাতেনাতে আটক হওয়া লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর শের আলীর বিরুদ্ধে অচিরেই বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী বলে মনে করছেন তদন্ত কমিটি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।