১৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৮ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

নতুন জীবনযুদ্ধে বাবুল

kabirদুর্বৃত্তদের হামলায় স্ত্রী হারানোর পর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়া সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের জীবনযুদ্ধের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন স্ত্রী হারানোর শোকে কাতর ও নিজের চাকরি নিয়ে টানাপোড়নে ছিলেন তিনি। তবে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে নতুন উদ্যমে অনেকটা নতুন জীবনই শুরু করেছেন।

সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখে এসপি পদ থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর অনেকটাই লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান বাবুল আক্তার। তবে সর্বশেষ তথ্য হচ্ছে- গত ১ নভেম্বর তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে তার পারিবারিক সূত্র।

বাবুলের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন পরিবর্তন ডটকমকে জানান, গত এক মাস ধরে সে (বাবুল) একটা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করছে। সকালে বাসা থেকে বের হয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরছে।

তিনি বলেন, ‘সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাবুলের কিছু না কিছু করতেই হতো। তাই সে নতুন চাকরিতে যোগদান করেছে। এতে বাবুল তার মানসিক চাপ থেকে কিছুটা হলেও বের হয়ে আসতে পারছে।’

তবে কোন হাসপাতালে কোন পদে বাবুল আক্তার চাকরি করছেন তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে তার শ্বশুর বলেন, ‘সময় হলে সব কিছু জানতে পারবেন।’

সন্তানদের দেখা শোনা কে করছে জানতে চাইলে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমিই স্কুলে আনা-নেওয়া করি। বাবুল ছুটির দিনে সময় দেয়।’

এ ব্যাপারে বাবুল আক্তারের ভাই অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান পরিষ্কার কিছু না বললেও বাবুলের বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমাদেরও বাবুল বলেছে, সে কাজ করছে। তবে কোথায় কাজ করছে তা বলেনি। আমরাও চাই, সে কাজ করুক এবং তার আগের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। সব কিছু ভুলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এটাও জানি তার অতীতে ঘটে যাওয়া কোনো কিছুই ভোলার নয়; কিন্তু বাস্তব দিক চিন্তা করলে তো সব কিছুই মেনে নিতে হয়। সব কিছু ভুলে সে নতুন জীবন শুরু করুক সে প্রার্থনাই করি উপরওয়ালার কাছে।’

বাবুলের সততা সম্পর্কে তার বাবা বলেন, ‘‘সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা আর সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে বলেই অল্প সময়ে চাকরি জীবনে একবার পুলিশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক- বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল-বিপিএম (সাহসিকতা), দু’বার প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম), একবার আইজি ব্যাজ ও চারবার চট্টগ্রাম রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার নির্বাচিত হয়েছিল বাবুল আক্তার। নতুন কর্মস্থলেও অবশ্যই সে ভালো করবে বলেই আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।’

তবে নতুন চাকরির ব্যাপারে বাবুল আক্তারের মতামত জানার জন্য তার মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

চট্টগ্রামে মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ওআর নিজাম রোডের বাসার কাছে ৫ জুন সকালে শিশুসন্তানের সামনে গুলি ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মিতু হত্যা নিয়ে নানা রহস্য ঘুরপাক খেতে শুরু করে। বিশেষ করে তদন্তের একপর্যায়ে ঘটনার তিন সপ্তাহ পর এসপি বাবুলকে ডিবি অফিসে নিয়ে টানা ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় ‘স্ত্রী হত্যায় জড়িত থাকায় বাবুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে’ এবং ‘এসপি বাবুল পদত্যাগ করেছেন’ বলে কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু সে সময় এমন খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন আইজিপি মো. শহীদুল হক। সর্বশেষ ২১ জুলাই আইজিপি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন ‘বাবুল আক্তার এখনও চাকরিতে বহাল আছেন।’

কিন্তু ৬ সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এসপি বাবুল আক্তারকে (২৪তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে যোগদানকৃত, বিপি-৭৫০৫১০৯০২৯) তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মিতু হত্যাকাণ্ডের পর এসপি বাবুল তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকার রামপুরা মেরাদিয়ায় তার শ্বশুর বাড়িতে থাকছেন। বাংলাদেশ পুলিশের ২৪তম ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা বাবুল আক্তার ২০০৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। ২০১৫ সালে চট্টগ্রামে পাঁচ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে প্রশংসিত হন তৎকালীন এডিসি বাবুল আক্তার।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।