বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য চলমান কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে গত এক মাস যাবত মজুরীর টাকা পায়নি ৬৪০ শ্রমিক। এ নিয়ে তাদের মাঝে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। যার কারনে পরিবারের ভরণ পোষন যোগান দিতে বাধ্য হয়ে অনেক শ্রমিক ভিন্ন কাজে যোগ দিচ্ছে। এতে করে আগামী সপ্তাহ নাগাদ এককালীন টাকা বিতরণকালীন সময়ে বিভিন্ন কায়দায় অনিয়ম করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান একাধিক শ্রমিক। উপজেলার পাচঁ ইউপি চেয়ারম্যনের দেওয়া তথ্যমতে, কর্মসৃজন কর্মসূচীর অনুকূলে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ১৮২ জন দোছড়ি ইউনিয়নে ১২৮জন, বাইশারী ইউনিয়নে ১২০জন, ঘুমধুম ইউনিয়নে ১০৯ এবং সোনাইছড়ি ইউনিয়নে ৩টি প্রকল্পের অধীনে ৭০ জন মোট ৫৩৯ শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। সরকারী বিধি মতে ৭দিন কাজ করার পর প্রতি বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের পারিশ্রমিকের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিগত প্রায় এক মাসে তাদের টাকা দেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনুপস্থিতি অতপর বদলীর কারনে এবং শ্রমিকদের টাকা উত্তোলনের রেজুলেশনসহ মাষ্টার রোলে স্বাক্ষর না করায় শ্রমিকেরা তাদের টাকা পায়নি। এছাড়াও কাজের তদারকির জন্য নিয়োগকৃত ট্যগ অফিসারও তাদের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি জানেনা বলে জানান ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ। অপরদিকে পিআইও ও ট্যগ অফিসারের সরেজমিন তদন্ত না থাকায় অধিকাংশ কাজে গড়ে ৪-৫জন হারে শ্রমিক অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের সহকারী কর্মকর্তা জানান, উপজেলায় ৩৯টি প্রকল্পের বিপরীতে ৬৪০জন শ্রমিক কাজ করছে। এছাড়াও সরকারী নিয়মানুযায়ী শ্রমিকদের ব্যংক একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও অনেকাংশে তা মানা হচ্ছেনা।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ, সোনাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বাহান মার্মা, দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রশিদ আহামদ ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সৈয়দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের মধ্যে কেউ কেউ শ্রমিকের মজুরী পেতে বিলম্ব হওয়ায় উপস্থিতি কম থাকার কথা স্বীকার করলেও আবার কেউ জানিয়েছেন কাজের গুনগত মানের লক্ষ্যে তারা সর্বাত্মক শ্রমিক উপস্থিতি রেখেছেন।
শ্রমিকদের মজুরী না পাওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ বলেন- ‘কর্মসূচীর কোন ধরনের অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব’ এছাড়াও পিআইও’র বদলী জনিত কারনে হয়তো মজুরী পরিশোধে বিলম্ব হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
অপরদিকে প্রত্যেক শ্রমিকের ব্যাংক একাউন্ট আছে কিনা এবং মজুরী না পাওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু শাফায়াৎ মুহাম্মদ শাহে দুল ইসলাম বলেন- প্রত্যেক শ্রমিকের ব্যংক একাউন্টে টাকা তাদের নিজ নিজ মজুরী জমা হওয়ার কথা। উপজেলা পিআইও’র বদলির কারনে মজুরী পরিশোধ হয়নি। তবে আগামী সপ্তায় শ্রমিকরা টাকা পাবেন বলে তিনি জানান।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।