নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ২৭৫নং ভাল্লুকখাইয়া মৌজার প্রজাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় ভূমিতে বন বিভাগের সামাজিক কার্যক্রমের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। সম্প্রতি তিনি এ সংক্রান্ত ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত ৩জুলাই বিরোধকৃত ভূমির প্রজা ও স্থানীয় অন্তত ৪৫জন বাসিন্দার গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে প্রেরণের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
৪৫জন বাসিন্দার স্বাক্ষরিত অভিযোগ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুস সবুর ভুইয়া ও তুলাতলী বিট কর্মকর্তা বেলাল যোগদানের পর থেকে ২৭৫নং ভাল্লকখাইয়া মৌজার তুলাতলী এলাকায় ৪০ একর ও বড়ইতলী ছড়ায় ৫০ একর পাহাড়ি-বাঙ্গালীর ভোগ দখলীয় ভূমিতে সামাজিক বনায়নের নামে ভূমি দখলের তৎপরতা চালিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার দোহাই দিয়ে বন বিভাগ মৌজার প্রজাদের ভূমি জবর দখল করলেও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কিংবা সংশ্লিষ্ট কোন প্রশাসনের সুনিদিষ্ট কোন কাগজপত্র দেখাতে পারছেনা বন বিভাগ।
তবে উপ-প্রধান বন সংরক্ষণের গত ৮ফেব্রুয়ারীর একটি চিঠি বন বিভাগ বৈধতা হিসেবে দেখালেও উক্ত চিঠিতে শুধুমাত্র তিন পার্বত্য জেলার মৌজা এলাকায় সামাজিক বনায়ন করার পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ আছে।
এ বিষয়ে ভাল্লুকখাইয়া মৌজা হেডম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মংশৈফ্রু চৌধুরী জানিয়েছেন হিলট্রাক্স ম্যনুয়াল অনুযায়ী মৌজার প্রজাদের সার্বিক কাজে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন বিভাগ সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে অতি উৎসাহী হয়ে প্রজাদের দীর্ঘকালের ভূমি জবর দখলের পায়তারা করছেন। মৌজার প্রজা উচ্ছেদ করে সামাজিক বনায়ন করার নির্দেশনা কোথাও আছে কিনা এর প্রশ্ন তোলে এ বিষয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জানাবেন বলে জানান।
স্থানীয়দের অভিযোগ মতে প্রশাসনের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তা ও কয়েক জন জনপ্রতিনিধি বন বিভাগের সাথে লিয়াজো করে ভূমি জবর দখলের এ তৎপরতা অব্যাহত রখেছে।
এদিকে গত ১৪জুন বিরোধকৃত ভূমিতে উভয় পক্ষকে না যাওয়ার জন্য বান্দরবান জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশনায় নোটিশ দিলেও ৮জুলাই বন বিভাগ নির্দেশ অমান্য করে ভূমিতে কার্যক্রম চালায় বলে অভিযোগ তুলেছে স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য বন বিভাগ ইতিপূর্বে রেজু মৌজায় স্থানীয় তংচঙ্গ্যা, চাকমা ও বাঙ্গালীদের দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় ভূমিতে সামাজিক বনায়নের চেষ্টা করলেও জনপ্রতিরোধের মুখে পড়ে বন বিভাগ। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে বন বিভাগ ঐ স্থানে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।