টেকনাফের নাফনদীতে সম্প্রতি মিয়ানমার বর্ডারগার্ড পুলিশের (বিজিপি)’র উৎপাত চরম পর্যায়ে পৌঁেছছে। এতে মাছ শিকার করতে গিয়েই বাংলাদেশী জেলেরা অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে। এই ব্যাপারে ভূক্তভোগী জেলেরা এই নদীতে মাছ শিকার সহজ করতে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়-গত ৯ অক্টোবর ভোররাতে মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্ডু থানার একটি ব্যাটালিয়ন সদরসহ বিজিপি চৌকিতে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলায় অস্ত্র-বুলেট লুট ও হতাহতের ঘটনা এবং বাংলাদেশে খাল,নদী,সাগর হতে ২২দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন নাফনদীতে মাছ শিকার বন্ধ ছিল। গত ১০অক্টোবর হতে শুরু হয়ে ২নভেম্বর এই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে নিত্যদিনের মতো নাফনদী নির্ভর বাংলাদেশী জেলেরা মাছ শিকারে বের হয়। মিয়ানমারে অপ্রীতিকর সন্ত্রাসী হামলার জেরধরে নাফনদীতৈ বিজিপির নৌটহল জোরদার করা হয়। এরপর ৫২কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নাফনদীর শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া, সাবরাং নয়াপাড়া, সাবরাং, টেকনাফ জোলিয়াপাড়া, নাইট্যংপাড়া, হ্নীলার জাদিমোরা, নয়াপাড়া, লেদা, রঙ্গিখালী, হ্নীলা জালিয়াপাড়া, গুদামপাড়া, সুলিশপাড়া,হোয়াব্রাং, মৌলভীবাজার হোয়াইক্যং নয়াবাজার, মিনাবাজার, কাঞ্জরপাড়া, উনছিপ্রাং, লম্বাবিল, হোয়াইক্যং,খারাইগ্যাঘোনা,উলুবনিয়ার মাছ শিকারী জেলেরা নাফনদীতে মাছ শিকারে গেলে বিজিপির নৌটহল দল আটক করে নিয়ে হাজতে দিচ্ছে আবার অনেকের নিকট হতে মোটাংকের মুক্তিপণ নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে। ১৩ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় নাফনদীতে মাছ শিকারে সময় বিজিপি টহলদল বাংলাদেশ সীমান্তের চৌধুরীপাড়া পয়েন্ট থেকে টেকনাফের হ্নীলা দক্ষিণ ফুলের ডেইলের মৃত নজির আহমদের পুত্র জাফর আলম প্রকাশ সোনা মিয়া (৩৫)কে নৌকা জালসহ আটক করে নিয়ে যায়। এরপর বিজিপি সদস্যরা বাংলাদেশে অবস্থান করা মলা রাখাইনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা পাকা করে। উক্ত মলা রাখাইন মিয়ানমার নাগাকুরার আপুম্মা এলাকার বাসিন্দা হলেও অবৈধ অনুপ্রবেশ করে হ্নীলা পুরান বাজার রাখাইন পল্লীতে বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করে তথ্য পাচারের মত নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত বলে স্থানীয় সুত্রে অভিযোগ রয়েছে। পরে অপহৃত সোনা মিয়ার বড় ভাইয়েরা বাংলাদেশে অবস্থান করা মিয়ানমারের বিজিপির সোর্স মলা রাখাইন নামে এক ব্যক্তির মারফতে যোগাযোগ করে ১১হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। চলতি মাসের শুরু হতে অদ্যবধি বিভিন্ন পয়েন্ট হতে নৌকা-জালসহ জেলে আটক করে নিয়ে গেলেও দালালের মাধ্যমে টাকা দেওয়া ছাড়া এমনিতে ছাড়া পাচ্ছেনা। এভাবে চলতে থাকলে যুগ যুগ ধরে নাফনদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা জেলেদের পরিবারে অভাব যন্ত্রণা নেমে আসবে। তাই ভূক্তভোগী জেলেরা নাফনদীতে বাংলাদেশী জেলেদের মাছ শিকার সহজতর করতে নদীতে বিজিবি টহল জোরদার করার দাবী উঠছে। অন্যথায় নাফনদীতে বাংলাদেশী জেলেদের মাছধরা সহজতর ও বিজিপির অপতৎপরতা কঠোর হাতে দমনে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী বলে মনে করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।