এএইচ সেলিম উল্লাহ,(সম্পাদক): জাতিগত নিধনের পাশবিকতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে টেকনাফের পর উখিয়ায় এসেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থার বিশেষদূত ইয়াং হি লি। রোববার বেলা দুপুরে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসে দেড়টার পর্যন্ত বিভিন্ন ব্লক ঘুরে দেখেন তিনি। এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাসহ (আইওএম) ও দাতা সংস্থার অফিসে বসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ইয়াং হি লি। তবে ইয়াং হি লি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় বা পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেননি।
উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা সর্দার লালু মাঝি (৫০) বলেন, ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় ইয়াং হি লি জানতে চান, আমরা মিয়ানমারে ফেরত যাবো কিনা। উত্তরে আমরা বিভিন্ন শর্তের কথা জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বস্থ করেছেন রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
বালুখালী ক্যাম্পের মাঝি আয়ুব আলী (৪০) বলেন, এক সঙ্গে আমরা ৩০ জন রোহিঙ্গা ইয়াং হি লি’র সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবী-দাওয়া তুলে ধরেছি। তিনি আমাদের ধৈর্য্য ধরতে বলেছেন।
পরিদর্শনকালে তাঁর সাথে ছিলেন উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা, উখিয়া উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়েরসহ পদস্থ কর্মকর্তারা।
শনিবার টেকনাফের নয়াপাড়া ও রইক্ষ্যং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন ইয়াং হি লি। তিনি বুধবার রাতে ঢাকায় পৌছান এবং শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার আসেন। চলতি মাসে তার মিয়ানমার সফরের কথা থাকলেও সে দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি মিয়ানমারের পরিবর্তে বাংলাদেশে সফরে আসেন। এবার সাত দিনের সফরে ৫ দিন বাংলাদেশে থেকে ২৪ জানুয়ারি থাইল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সন্ত্রাস দমনের নামে রাখাইন রাজ্যে হিংস্র অভিযান চালায়। এ সময় তারা নির্যাতন, বাড়িঘরে আগুন ও গণধর্ষণ চালালে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। এ অভিযান শুরুর পর থেকে প্রায় ৮ লাখ রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এখনো আসা অব্যাহত রয়েছে। তাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এ চুক্তির পরও সীমান্ত পাড়ি দি্েচ্ছ রোহিঙ্গারা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।