কক্সবাজার পৌরসভায় কাজী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই এলাকার স্থায়ী ঠিকানার লোকই কাজী নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও, কিন্তু তা না করে উল্টো স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে আবেদন করা ব্যক্তিকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
জানা যায়, কক্সবাজার জেলায় সম্প্রতি মুসলিম নিকাহ ও তালাক রেজিষ্ট্রারের লাইসেন্স গ্রহণের প্রতিযোগিতা চলছে। ইতিমধ্যে অনেকে উক্ত লাইসেন্স মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গ্রহণ করেছে, আবার অনেকে ঢাকায় তদবিরে আছেন। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি দুই ওয়ার্ডে ১জন করে কাজী নিয়োগের কথা থাকলেও, এখন পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভায় কাজী নিয়োগ হয়েছেন ৪ জন। তার মধ্যে- ১১ ও ১২নং ওয়ার্ডে একজন, যিনি কয়েক বছর আগে নিয়োগ পেয়েছেন। সম্প্রতি ৯ ও ১০নং ওয়ার্ডে সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ তারেক, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে গিয়াস উদ্দিন এবং ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে মাওলানা সাইফুল্লাহ কাজী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া ৩ জনের মধ্যে ২ জন কক্সবাজার পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা নন। কক্সবাজার পৌর এলাকার ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের গিয়াস উদ্দিন এবং ৯ ও ১০নং ওয়ার্ডের সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ তারেক নিজেদের স্থায়ী ঠিকানা গোপন করে কাগজপত্র বানিয়ে নিকাহ রেজিস্টারি কাজী পদে নিয়োগ পেয়েছেন। ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে নিয়োগ পাওয়া গিয়াস উদ্দিনের স্থায়ী ঠিকানা পার্শ্ববর্তী রামু উপজেলা রাজারকুল ইউপি’র পশ্চিম নয়াপাড়া গ্রামে এবং ৯ ও ১০নং ওয়ার্ডে নিয়োগ পাওয়া সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ তারেক দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউপি’র ৪নং ওয়ার্ডের মনোহর আলী গ্রামে। এই দু’জনই জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে স্থানীয় নাগরিকত্ব দেখিয়ে ভূঁয়া ঠিকানা ব্যবহার করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পান।
অভিযুক্ত সালাহ উদ্দিন মোহাম্মদ তারেক কক্সবাজার পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার সহ-সুপার। তিনি একজন এমপিও ভূক্ত শিক্ষক, যার বেতন কোড নং- ৯, ইনডেক্স নং- ২০২৫৭৬০। তিনি সরকারি সুযোগ ভোগ করার পরও নানা চল-চাতুরি করে ভূঁয়া জাতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে কাজী নিয়োগ পান। সালাহ উদ্দিন ২০১৩ সালে কাজী নিয়োগের আবেদনে নিজেকে ২নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা উল্লেখ করেন।
নিয়োগ পাওয়া সালাহ উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, প্যানেল প্রস্তুতি কমিটি, দুর্নীতি দমন কমিশন, আইন ও বিচার বিভাগে অভিযোগ দায়ের করার পরও অদৃশ্য শক্তিতে তাদের কিছুই হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গিয়াস ও তারেকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।