বাংলাদেশ -মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। শুরু হবে দোহাজাহারী -ঘুমধুম রেল লাইন প্রকল্পের কাজ। এবার স্থল বন্দর ও সীমান্ত হাট! তাও আবার মিয়ানমার লাগোয়া ঘুমধুমে। অজঁপাড়া গাঁ আর পাহাড়ের বাঁকে। একের পর এক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলছে ঘুমধুমের সীমান্ত জনপদ। আজ ১০ মার্চ রচিত হচ্ছে সম্ভাবনার আরেক নতুন দিগন্ত। আসছেন নৌ -পরিবহনমন্ত্রী। ঘুমধুমে যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আরেক দ্ধার উম্মোচিত হতে যাচ্ছে, তা আনুষ্ঠানিক জানান দেবেন নৌ -পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প ঘুমধুমের মাটির উপর দিয়ে বয়ে চলা বাংলাদেশ -মিয়ানমার মৈত্রীসড়ক নির্মাণ কাজ, শ্রীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে দোহাজাহারী -ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের কাজ। এবার হতে যাচ্ছে বৃহত্তর পার্বত্য অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর প্রানের দাবী স্থল বন্দর ও সীমানা হাট। ঘুমধুমে স্থল বন্দর ও সীমান্ত হাট বাস্তবায়ন হতে চলছে শুনে উৎফুল্ল -উৎসবে ঘুমধুমের সীমান্ত অঞ্চলবাসী।যেহেতু ঘুমধুমে রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ইতিমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে দক্ষিণ এশিয় বৃহত্তম কুমির প্রজনন কেন্দ্র, নানা প্রজাতির বনজ -ফলদ বাণিজ্যিক বাগান। রয়েছে মনো মুগ্ধকর প্রাকৃতিক সুন্দর্য্যেের বিপুল সম্ভাবনার সমাহার। আছে চোঁখ ধাঁধাঁনো পর্যটক স্পট। এসব স্পটে প্রতিনিয়ত পর্যটক -সাধারণের বিচরণ রয়েছে। এসব এলাকায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট জনরা কোটি -কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। সরকারও রাজস্ব আদায়ের বিশাল একটি খাত নাগালে পেলো। এসবের
কারণে ঘুমধুম এখন আলোচিত একটি নামে পরিনত হতে চলছে। শুধু প্রয়োজন সরকারের নীতিনির্ধারকদের সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। জরুরী ভিত্তিতে সরকারের
নজর দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথায় ভেস্তে যেতে পারে অপার সম্ভাবনার খাত। বহুমুখী আয়ের উৎস দৃশ্যমান হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক ভাবেও ঘুমধুম সমৃদ্ধ জনপদ।
পাশাপাশি বাংলাদেশ -মিয়ানমার দু – দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হবে। দু -দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে মিয়ানমার ,থাইল্যান্ড, ভুটান,চীন,নেপাল,ভারত,মালয়েশিয়া সহ বহির্বিশ্বে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নজির সৃষ্টি করবে। ঘুমধুমের চলমান ও প্রক্রিয়াধীন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঘুমধুমের মত পাহাড়ি
প্রত্যান্ত স্থান আন্তর্জাতিক ভাবে পরিচিত লাভ করবে। স্থানীয় পর্যায়ে আত্মা কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহ বহুমুখী উন্নয়নে ভুমিকা রাখবে সীমান্ত জনপদ। সরকারি পাবে বিপুল রাজস্ব। আন্তর্জাতিক ভাবে বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রসারিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের খাত। সবকিছু মিলিয়ে নৌ -পরিবহনমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে তাকিয়ে সরকারের প্রতি। নতুন দিগন্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বাণিজ্যের দ্বার আরো একধাপ উম্মোচন করতে ১০ মার্চ ঘুমধুম সফরে আসছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খাঁন। এদিন সকাল সাড়ে আটটায় কক্সবাজার থেকে গাড়ি যোগে রওয়ানা হয়ে প্রথম মন্ত্রী নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নে সরকারি কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের চাকঢালায় সীমান্ত হার্ট, ঘুমধুমে স্থল বন্দর এর জন্য নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করবেন। এরপর কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের অধিগ্রহণ করা জায়গাও পরিদর্শন করার কথা রয়েছে মন্ত্রীর।পরবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজের গুণগত মান ও অগ্রগতি পরিদর্শন করে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।এদিকে ঘুমধুমের শিক্ষক হামিদুল হক বলেন,ঘুমধুমে স্থল বন্দর, সীমান্ত হাট যেটিই হউক প্রত্যাশার প্রতিফলন চাই। ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি খালেদ সরওয়ার হারেজ বলেন,বর্তমান সরকারের আমলে অজঁপাড়া গায়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ক্ষেত্র সৃষ্টি মানে বড় পাওয়া।মন্ত্রী পরে উখিয়া-টেকনাফের কিছু কর্মসূচিতে অংশ করবেন। ইতিমধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রীর নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও ঘুমধুম ইউনিয়নে আগমন সফল করার লক্ষ্য মন্ত্রীর সফর সুচীর স্থান সমুহ পরিদর্শন করেছেন বলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল জানান এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ত্রী মহোদয়ের আগমনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন শুধু বরণের অপেক্ষায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাবাসী।
সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় চার লাখ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দু’দেশের প্রয়োজন মাফিক আমদানী-রপ্তানির নতুন এক দিগন্ত উম্মোচিত হবে। ঘুমধুমে স্থল বন্দর ও চাকঢালায় সীমান্ত হাট নির্মাণে কাজ করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং। সম্প্রতি নৌ-মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি স্থল বন্দর নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। বান্দরবানে স্থল বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গুরুত্ব পায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম। ঘুমধুমে স্থল বন্দর নির্মাণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। যাহা ঘুমধুম ইউনিয়নবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল। কারণ বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক পয়েন্ট যেহেতু ঘুমধুম তাই স্থলবন্দর ঘুমধুমে হওয়াটা শতভাগ যৌক্তিক বলে মনে করেন এখানকার সাধারণ মানুষ। বিশেষত ঘুমধুম নোয়াপাড়া, তুমব্রু যাতায়াত পথে তেতুঁল গাছ তলা কিংবা তুমব্রু বাজারের উত্তর পাড়া হয়ে বাইশফাঁড়ি পর্যন্ত ৩টি স্থানের যেকোন একটি অংশ স্থল বন্দর স্থাপনের জন্য উপযোগী বলে মনে করছেন ঘুমধুমের বিভিন্ন শ্রেণী -পেশার মানুষ। আর নাইক্ষ্যংছড়ির সদর ইউনিয়নের চাকঢালা আমতলীর দুটি স্থানের যেকোন একটি অংশে সীমান্ত হাট করা যায়। তাতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ রয়েছে। সুফল ভোগ করবে বান্দরবান, কক্সবাজার জেলার মানুষ। সরকারের রাজস্ব আয়েও উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে।সম্ভাবনা তাই স্থল বন্দর ঘুমধুমে স্থাপন করার জন্য ঘুমধুমবাসি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন- প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে আমি ইতিমধ্যেই ঘুমধুম এবং চাকঢালা পয়েন্ট পরিদর্শন করেছি। ঘুমধুমের স্থল বন্দর নির্মাণের সম্ভাবনা রয়েছে! তবে চাকঢালাতে সীমান্ত হাট নির্মিত হবে। এছাড়াও সরকারের নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খাঁন নিজেই সম্ভাব্য স্থান গুলো পরিদর্শনে আসছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ সাংবাদিকদের বলেন- পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় স্থল বন্দর নির্মাণের জন্য ঘুমধুম’ই উপযুক্ত স্থান। এটি স্থাপিত হলে পাশ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়িসহ উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ উপকৃত হবে। যেটি আমাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।