মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন আসছে শিগগির। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিআরডি) এবং সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের দফতর পরিবর্তন এখন অনেকটা সময়ের ব্যাপারমাত্র। এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তন আসছে। একই সাথে কয়েকটি নতুন মুখ আসতে পারে মন্ত্রিসভায়। মতাসীন দল আওয়ামী লীগের সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতিমণ্ডলীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তনের প্রভাব সরকারের মন্ত্রিসভায় পড়তে যাচ্ছে। এরই ফলে মন্ত্রিসভায় এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ এ পরিবর্তন আসতে পারে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সরকার ও দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ওই সূত্র মতে মন্ত্রিসভার এ পরিবর্তনের সম্ভাব্য তালিকায় স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ আরো কিছু মন্ত্রণালয়ে পরিবর্তন আসতে পারে। একই সাথে মন্ত্রিসভায় পুরনোদের মধ্যে দলের সভাপতিমণ্ডলীর নবাগত সদস্য সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব:) ফারুক খান এমপি, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দীপু মনি এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপিসহ একাধিক নারী নেত্রীও আসতে পারেন বলে জানা গেছে। এমনকি বঙ্গবন্ধু পরিবারের ঘনিষ্ঠ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের মধ্যে যেকোনো একজন আসতে পারেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, জাসদের একাংশের নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি অথবা নাজমুল হক প্রধান এমপির নামও শোনা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় তার এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী মতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে থাকেন। কারণ স্থানীয় সরকারের ইউনিটগুলো দেখভাল করে থাকেন এলজিআরডি মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই দলীয় মন্ত্রী হিসেবে মতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সারা দেশের মাঠপর্যায়ের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। যদিও বর্তমান সরকারের এ মেয়াদে তার ব্যত্যয় ঘটিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সরিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সারা দেশে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সৈয়দ আশরাফের যেভাবে যোগাযোগ থাকার কথাÑ তার অনেকটাই ঘাটতি ছিল। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাাৎ দিতেন না বলে অভিযোগ ছিল। ফলে তাকে এলজিআরডি থেকে সরিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। আর সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে। সেই থেকে তিনি এ পদে বহাল আছেন। কিন্তু সম্প্রতি দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ায় এ পরিবর্তনের সম্ভাবনা জোরাল হয়েছে। এ হিসাবে ওবায়দুল কাদেরকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হলে সে েেত্র ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে বেশ কয়েকজন নেতা দতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে সফলতার স্বার রেখেছেন। নজরকাড়া কর্মকাণ্ডের কারণে তারা দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদও পেয়েছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনÑ ড. আব্দুর রাজ্জাক, কর্নেল (অব:) ফারুক খান, মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা: দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ। ফলে তাদের মধ্য থেকে যে কেউ মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। বিশেষ করে ড. আবদুর রাজ্জাক ও ডা: দীপু মনির সম্ভাবনা বেশি। এ পরিবর্তনে ড. রাজ্জাককে আবারো খাদ্য অথবা বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং ডা: দীপু মনিকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে দলের একাধিক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।