২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

পলিথিনের ঝুপটিতে শত কোটি টাকার মালিক

শফিক আজাদ,(চীপ রিপোর্টার): রাখাইনের ফকিরাবাজার ৪টি স্বর্ণের দোকান ছিল। চাষাবাদের জমি ছিল ৮০কানি। গরু-মহিষ-ছাগল ছিল অগণিত। ১০/১২জন কৃষক সারা বছর কাজ করত। দু’তলা গাছের বাড়ীতে ৬জন স্ত্রী পরিজন কামলা সহ ১৮/২০জনের সংসার সুখে কাটছিল। মিয়ানমার জান্তারা একদিনেই আগুণ দিয়ে নিঃস্ব করে ফেলেছে। এখন কুতুপালংয়ের ঝুপড়িতে ত্রাণের জন্য কাঙ্গলের মতো চেয়ে থাকতে হচ্ছে। এসব কথা গুলো বলছিলেন মিয়ানমারের মংডু থানার ফকিরা বাজার গ্রামের বিত্তশালী রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ(৬০)।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় চোঁখে পড়ে এক ভদ্রলোক ছোট শিশুদের সাথে লাইনে দাড়িয়েছে ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছে। প্রথমে দেখে প্রতিবেদক একটু বিচলিত হলেও সামনে গিয়ে তার নিকট থেকে জানতে চাওয়া হলে সে আরো বলেন, এলাকায় সম্পদশালী ও তৎকালীন হুক্কাট্টা(চেয়ারম্যান) হিসেবে আইনপ্রয়োগকারী সহ রাখাইনের লোকজন তাকে সমিহ করে চলতো। প্রশাসনের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের সাথে তার মেলামেশা ছিল চোঁখে পড়ার মতো। তারা আমাকে কথাও দিয়েছিল এখানে নির্ভয়ে থাকা যাবে, কেউ কিছু করবেনা। কিন্তু কথায় আর কাজে মিল খোঁজে পাওয়া যায়নি। গত ১৫ দিন পুর্বে এক রাতেই মিয়ানমার সেনারা আমাকে বাড়ী থেকে ডেকে তুলে, মনে করছিলাম হয়তো তারা বিষয় নিয়ে তার সাথে আলাপ করতে এসেছে। এমন মনে করে আমি বাড়ীর লোকজনদের চাঁ-নাস্তা তৈরী করতে বলি। এ ফাঁেক রাখাইনের সশস্ত্র যুবকেরা আমার স্বয়ং কক্ষে ঢুকে র্স্বণালংকার লুট করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমার বুকে বন্দুক তাক বলে এ মুহুর্তে বাড়ী থেকে বের হয়ে যাও নইলে সবাইকে পুড়ে মরতে হবে। এসময় আমার হিতাহিত জ্ঞান শূণ্য হওয়ার মতো অবস্থা। প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে সবাইকে নিয়ে বাড়ীর বের হওয়ার সাথে সাথে মিয়ানমার সেনারা দ্বিতল বাড়ীতে আগুণ ধরিয়ে দেয়। সেই আগুণের আলোতে আমরা অনেক দুরে চলে এসেছি। কথা গুলো বলতে বলতে তার দু’চোঁখ বেয়ে পানি ঝরছিল। সে আরো জ¦ানায় এর আগে হায়েনার দল আমার স্বর্ণের দোকান লুটপাট করে জ¦ালিয়ে দেওয়ার ঘটনা আমার মুঠেই মনে ছিলনা। আসার সময় পাড়ার প্রতিবেশিরা ব্যবসা প্রতিষ্টান লুটপাট ও জ¦ালিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। ওই দোকান গুলোতে প্রায় শত কোটি টাকার (কিয়াতের) স্বর্ণালংকার ছিল বলে সে জানায়।
কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছি গত বৃহস্পতিবারে। আমার গ্রামের লোকজন এসে একটা থাকার জন্য পলিথিনের ঘর নির্মাণ করে দেয়। সে ঘরে অবস্থান নিলেও আমার অন্তর আত্মা বারবার কেপে উঠছিল সেই মিয়ানমারের সেনাদের বর্বরোচিত আচারণ ও চোঁখের সামনে বাড়ী ঘর জ¦ালিয়ে দেওয়া দৃশ্যটি। কথা প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে গরু,মহিষ পাওয়া যাবে কিনা? জবাবে দিল মোহাম্মদ জানায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট হয়ে গেছে সেখানেই গরু ছাগলের লোভ করে লাভ কি? আল্লাহ উপর ভরসা রেখে যতদিন থাকতে হয় এখানেই থাকবো। সে জানায়, বাংলাদেশের উপর আমার অনেক আস্থা ও ভরসা রয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে এখানকার অনেক বড়বড় লোকজনদের আমার বাড়ীতে আশ্রয় দিয়েছি। খাওয়া-দাওয়া করিয়েছি। এমনকি অনেকেই দীর্ঘ সময় রাত-যাপনও করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম মরহুম শমশের আলম চৌধুরী, মরহুম বিকম আলী আহমদ, মরহুম ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রামের লে. কর্ণেল হারুন অর রশিদ সহ আরো অনেক নাম না জানা লোকজন ছিল। তাদের স্ত্রী,পুত্র অথবা স্বজনদের কেউ যদি আমার পরিচয় জানতে পারে বা আমি যে কুতুপালং ক্যাম্পের আশ্রয়ে রয়েছি তাহলে নিশ্চয়ই তারা আমায় সহানুভূতি জানাতে এগিয়ে আসবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।