কক্সবাজার প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের চকরিয়ায় চাঞ্চল্যকর সড়ক দুর্ঘটনায় পিকআপ চাপায় পাঁচ ভাই নিহতের ঘটনায় ঢাকায় র্যাবের হাতে আটক হওয়া চালক সাহিদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
রবিবার বেলা দেড়টার দিকে হাইওয়ে পুলিশ আটক সাইফুলকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন। আদালতে সড়ক দুর্ঘটনার নিহত ৫ ভাইয়ের হত্যা মামলার ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা ও মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের (এসআই) আবুল হোসেন পিকআপ চালক সাইফুলের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত রিমান্ড শুনানী শেষে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বিষয়টি আমলে নিয়ে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের (এস আই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ধৃত আসামীকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক রাজিব কুমার দেব সাইফুলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
প্রসঙ্গতঃ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ ভাই নিহতের ঘটনায় পিকআপ চালক সাহিদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে গত শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে ঢাকা মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আটক করেছে র্যাব। গত পনের দিন আগে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ ভাইয়ের বাবা সুরেশ চন্দ্র শীল পরলোক গমন করেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুরেশ চন্দ্র শীলের সন্তানেরা তাদের বাবা’র শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের জন্য সনাতন ধর্মমতে সাত ছেলে ও এক মেয়ে ভোরবেলা শ্রাদ্ধ কর্ম সম্পন্ন করতে মালুমঘাট হাসিনাপাড়া থেকে কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্ব পাশে শশ্মানে যান। শশ্মান থেকে শ্রাদ্ধকর্ম শেষে বাড়ি ফেরার পথে ওইদিন ভোর ৫টার দিকে মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট বাজার সংলগ্ন নার্সারি এলাকায় দ্রুতগামী একটি পিকআপ গাড়ির চাপায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলে একই পরিবারের ৫ সহোদর নিহত হন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ডস্থ হাসিনা পাড়া এলাকার মৃত সুরেশ চন্দ্র শীলের ছেলে অনুপম শীল (৪৬), তার ভাই নিরুপম শীল (৪০), দীপক শীল (৩৫), চম্পক শীল (৩০)। ওই ঘটনায় আহত তাদের অপর ভাই স্মরণ শীল (৩৬) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। এসময় আহত হন সুরেশ চন্দ্রের আরও দুই ছেলে ও এক মেয়ে।
অপরদিকে, পিকআপ চাপায় নিহত ৫ ভাইদের বেঁচে য়াওয়া মারাত্মক আহত দুই ভাই-বোন পৃথক দুটি হাসাপাতালে বেডে কাতরাচ্ছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত দুই ভাই-বোনেরা হলেন, রক্তিম শীল ও হীরা শীল। তৎমধ্যে গুরুতর আহত রক্তিম শীল জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে পাঁচ বিভাগের সমন্বয়ে চলছে রক্তিমের চিকিৎসা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর জ্ঞান ফেরানোর লক্ষে পাঁচটি বিভাগের সমন্বয়ে (নিউরো, মেডিসিন, আইসিইউ, অর্থোপেডিক ও রেসপেরিটরি) চিকিৎসাসেবা চালাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার ভগ্নিপতি সাংবাদিক খগেষ চন্দ্র। এদিকে, সড়ক দুর্ঘটনায় অপর আহত নিহতদের বোন হীরা শীলও স্থানীয় ডুলাহাজারা মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রীষ্টান হাসপাতালে তার একটি পা অস্ত্রোপচার পরে কেবিনে রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের বোন সাংবাদিক খগেশ চন্দ্রের স্ত্রী মুন্নি শীল ভাগ্যক্রমে এই দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যান। তিনি দাবী করেছেন, প্রথমে পিকআপ চালক চাপা দেওয়ার পর পুনরায় এসে আবারো চাপা না দিলে তাদের পরিবারে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটতো না বলে দাবী করেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।