২২ এপ্রিল, ২০২৫ | ৯ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২৩ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

পুলিশ-বিজিবির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্তঃ আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের


টেকনাফে থানা পুলিশের একটি দল বসত-বাড়িতে ইয়াবা বিরোধী অভিযানের নামে নগদ টাকা ও মহিলাদের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকারসহ সহোদর ব্যবসায়ীদের আটকের প্রতিবাদে খারাংখালী বাজারে বিক্ষুদ্ধ জনসাধারণ প্রধান সড়কে খুঁটি ফেলে ও টায়ার জালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে ৩ঘন্টা যাবত যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়ার খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি ও বিজিবি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত করে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন। আটক ব্যবসায়ীদের মুক্তি না হওয়ায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ আটককৃতদের বিরুদ্ধে মাদক ও পুলিশী কাজে বাঁধার দানের মামলা দায়ের করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,২মে ভোররাত ৩টারদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং খারাংখালীতে স্থানীয় কতিপয় চিহ্নিত দালালদের ইন্দনে টেকনাফ মডেল থানার একদল পুলিশ পূর্ব মহেশখালীয়া পাড়ার ঠান্ডা মিয়ার পুত্র বিকাশ ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম (৪০) প্রকাশ ভূলুর বাড়ি ইয়াবা বিরোধী অভিযানে গিয়ে তল্লাশী চালিয়ে বিকাশ ব্যবসার প্রায় ১০লক্ষ টাকাসহ আটক করে। এরপর আটক ব্যক্তির বড় ভাই মুদি দোকানদার আবুল কাশেম প্রকাশ হাছিম সওদাগরের বাড়িতে গিয়ে তল্লাশী চালিয়ে মহিলাদের ব্যবহৃত ৩ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও নগদ ৪২হাজার টাকা নিয়ে আটক করে নিয়ে যায় বলে গৃহবধু হালিমা আক্তার দাবী করেন। দালালের ইন্দনে এই ঘটনার পর স্থানীয় জনসাধারণ ক্ষুদ্ধ হয়ে খারাংখালী ষ্টেশনে টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি ফেলে, গাছপালা কেটে এবং টায়ার জালিয়ে প্রায় ৩ঘন্টাব্যাপী অবরোধ সৃষ্টি করে। এমতাবস্থায় আতংকে স্থানীয় ব্যবসায়ী দোকান-পাট বন্ধ করে নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিক্ষুদ্ধ জনসাধারণ পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া করে। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকাগুলি বর্ষণ করে। পরে খবর পেয়ে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপাধিনায়ক মেজর আবু রাসেল ছিদ্দিকী ও ওসি মাঈন উদ্দিন খাঁনের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ-বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেন। এরপর স্থানীয় ব্যবসায়ী,জনপ্রতিনিধি ও জনতার সাথে আলাপকালে ভূক্তভোগী পরিবার পুলিশী অভিযানের বর্ণনা দেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান এবং প্রধান সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্থ করেন ওসি মাঈন উদ্দিন। এইদিকে আটক দুই সহোদরকে মাদকসহ পৃথক দুইটি মামলায় আটক দেখানো হয়েছে। এই ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার জাহেদ হোছাইন বলেন,ঘটনার রাত থেকে আমি বাইরে রয়েছি। স্থানীয় লোকজন হতে জানতে পারি যে,বিকাশ এবং মুদি দোকানদারকে টাকা- স্বর্ণালংকারসহ আটক করে নিয়ে যায়। সকালে বিক্ষুদ্ধ জনতা সড়ক অবরোধ সৃষ্টি করার বিষয়টি জানতে পেরে নিষেধ করার পরও জনতা মানেনি। হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, পুলিশ ও দালালদের যোগ-সাজশে দীর্ঘদিনের এই জাতীয় কর্মকান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন আইন-শৃংখলা সভায় বার বার বলা হলেও কোন পদক্ষেপ না থাকায় এই জাতীয় ঘটনার সুত্রপাত। পুলিশ ইয়াবা বিরোধী অভিযানের নামে নিরীহ দুই ব্যবসায়ীদের আটকের জেরধরে জ্বালাও-পোড়াও এবং অবরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় আগামীতে আরো বড় ধরনের সহিংস ঘটনার সুত্রপাত হতে পারে। টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন,পুলিশ দুইজন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আটকের জেরধরে অপর ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মিলে সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ-বিজিবির বিশেষ টহলদল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বভাবিক করেন।


এলাকার লোকজন জানান,পুলিশ এলাকার কতিপয় চিহ্নিত দালালের ইন্দনে ইয়াবা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের নিকট মোটাংকের টাকা বাণিজ্য করে আসছে। গত ২৯এপ্রিল স্থানীয় স্থানীয় বাছু মিয়ার পুত্র আমির হোছনকে আটক করে দালালের মধ্যতায় সাড়ে ১০লক্ষ টাকায় ছেড়ে দেন বলে আমির হোছন জানান। গত দুই সপ্তাহ আগে জাফর আলীর পুত্র ইসমাঈলকে আটক করে ৩লক্ষ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। ৩সপ্তাহ আগে মৃত মীর কাশেমের পুত্র মোহাম্মদ আলমকে আটক করে ৩লক্ষ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন বলে জানান। আসল অপরাধীদের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া এবং টাকা দিতে না পারলে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। তাই মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে। তাই সাধারণ মানুষ ক্ষুদ্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ,জ্বালাও-পোড়াওর মত ঘটনার আশ্রয় নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন। উপরোক্ত ঘটনাকে পুঁজিকরে এলাকায় বিদ্যমান দুইটি গ্রুপ পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে নেমেছে বলে সুশীল সমাজ মনে করেন।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।