সিলেটে ১৩ বছরের এক কিশোরকে খুঁটিতে বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর শুরু হয়েছে তোলপাড়। পৈশাচিক এ হত্যা মামলার তিন আসামিকে চার দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
ইউটিউবে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শেখ সামিউল আলম রাজন নামের ওই কিশোরকে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে কয়েকজন লোক নির্মমভাবে প্রহার ও নির্যাতন করছে।
এ ঘটনায় জালালাবাদ থানা পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার রাতেই আটক মুহিদ আলমসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে। অপর আসামিরা হল মুহিদ আলমের ছোট ভাই কামরুল ইসলাম (২৪), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না (৪৫)। মৃত রাজন সদর থানার বাদেয়ালী গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের ছেলে।
নিহত শিশুটির বাবা আজিজুর রহমান আলম জানান, তার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না – স্ত্রীর কাছ থেকে এ খবর পেয়ে তিনি প্রথমে এখানে ওখানে খোঁজ করেন। পরে থানায় গেলে পুলিশ তাকে জানায়, তারা একটি কিশোরের মৃতদেহ পেয়েছে। পরে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে অজ্ঞান হয়ে যান আজিজুর রহমান।
রাজনকে নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে শেখপাড়া গ্রামে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ১৩ বছরের শিশুটিকে নির্যাতনের একপর্যায়ে ছাড়া পাওয়ার জন্য শিশুটি পাষণ্ডদের কাছে আকুতি জানায়। তার আর্তচিৎকার ও অনুনয়-বিনয়ের পরও তাকে অব্যাহতভাবে পেটানো হচ্ছে এবং প্রহাররত পশুরা জোরে জোরে হাসছে। কিন্তু শিশুটির সেই আকুতিতে কারোরই মন গলেনি। উল্টো তাকে আরো নির্মভাবে পেটানো হয়। এক পর্যায়ে শিশুটি একটু পানির আকুতি জানালে তারা তাকে শরীরের ঘাম আর চোখের পানি খেতে বলে। এর পর শিশুটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ সময়ে হত্যাকারীরা নানা ঠাট্টাও করে।
নির্যাতনকারীরা ‘ভিডিও ঠিকমতো করা হচ্ছে কিনা’ সেটাও জিজ্ঞেস করছে বলে শোনা যায়, জবাবে একজন ফেসবুকে ওই ভিডিও ছেড়ে দেবার কথাও বলে।
এ ব্যাপারে রাজনের পিতা একটি মামলা করেছেন। পুলিশ জানায়, বাকি নির্যাতনকারীদের কেউই এখনো ধরা পড়েনি, তবে তাদের ধরার জন্য অনুসন্ধান চলছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।