২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের মিশনে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি এনাম

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মস্বীকৃত চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘাত ক্রমশ: বাড়ছে। গত ১৫মে টেকনাফের নাজিরপাড়া

মৌলভী পাড়ায় চিহ্নিত দুই ইয়াবা কারবারিদের সংঘর্ষে নুরুল হক ভূট্টো নিহত হওয়ার পর থেকে সংঘাত এখন প্রকাশ্যে রূপনিয়েছে। মৃত্যুকে পুঁজি করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে আধিপত্য বিস্তারে হামলা, লুটপাট শুরু হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, আত্মসমর্পণকারি ইয়াবা কারবারি টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হকেরনেতৃত্বে প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের বসত

বাড়িতে হামলা, মারধর লুটপাট শুরু করেছে। ইতিমধ্যে ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ এবং আহত অনেকেই টেকনাফ থানায় লিখিতঅভিযোগও দায়ের করেছেন।

যেখান থেকে রক্ষা পাচ্ছে না গত নির্বাচনে এনামের বিরোধীতাকারি সাধারণ মানুষও।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইয়াবা কারবারের অর্থ লেনদেন, নিয়ন্ত্রণ এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা নিয়ে আত্মসমর্পণকারি ইয়াবাকারবারি এনামুল হক

চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি মোহাম্মদ একরামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধওে বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষেরহামলায় নিহত হন অপর

আত্মসমর্পণকারি ইয়াবা কারবারি নুরুল হক ভূট্টো। সে (ভূট্টো) সম্পর্কে এনামের মামাতো ভাই। এদিকে ভূট্টোর মৃত্যুকে পুঁজিকরে প্রতিপক্ষের লোকজনকে ঘায়েল করতে মিশনে নেমেছে এনামুল হকের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ একটি

চক্র। তারা প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়ী ঘরে হামলা লুটপাট অব্যাহত রেখেছে।

টেকনাফ থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ এবং স্থানীয়দের দেয়া তথ্য মতে, গত ১৫ মে নুরুল হক ভূট্টো প্রতিপক্ষের হামলায়ঘটনাস্থলে পা হারানো পর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার দুইদিন পর ( ১৭মে ) থেকে নাজিরপাড়া মৌলভী পাড়ায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি এনামুল হকের নেতৃত্বে শুরু হয়প্রতিপক্ষের উপর হামলা, মারধর লুটপাট। এর মধ্যে ১৭ মে বুধবার দুপুরে হামলায় আহত হন মৃত আমির হামজার পুত্র জাফরআহমদ। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। একই দিন বিকালে মোহাম্মদ ছিদ্দিকেরবসত ঘরে ভাংচুর লুটপাট করা হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিরা লুট করে নিয়ে যাওয়া য়ায় তাদের গৃহপালিত টি গরু। একইদিন স্থানীয় আবু বক্কর, হাজি জমিলের বসতঘর ভাংচুর মালামাল লুটপাট করা হয়। এসময় হামলাকারিরা মৌলভী পাড়ায়নুরানী মাদ্রাসায় ঢুকে শিক্ষককে হেনস্তাও শিশু শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি এই ইউপিসদস্যের নেতৃত্বে হামলাকারিদের বিরুদ্ধে।

এছাড়া ১৭ মে রাতে স্থানীয় মৃত মো. আমিনের মালিকানাধীন একটি ভাড়া বাড়িতে এনামুল হকের নেতৃত্বে তান্ডব চালানোও হয়।এসময় মালামাল লুটপাট ভাংচুর করে তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। ব্যাপারে টেকনাফ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনমৃত আমিনের স্ত্রী সনজিদা বেগম।

সনজিদা বেগম জানিয়েছেন, প্রথম হামলা লুটপাটের ব্যাপারে পুলিশকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় শনিবার (২১ মে) রোববার (২২ মে) দুই দফায় তার বসত বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এসময় হামলাকারিরা আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, এসি মজুদ রাখা সুপারিসহ অন্যান্য মামলা লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাড়িটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। বতর্মানেজানমালের নিরাপত্তাহীনতার কারণে ভূক্তভোগী ওই নারী এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।

ঘটনায় সোমবার সকালে ভূক্তভোগী নারী সনজিদা বেগম বাদী হয়ে এনামুল হককে প্রধান আসামী করে টেকনাফ থানায় ২০জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

রোববার ( ২২ মে ) এনামুল হকের নেতৃত্বে পৃথকভাবে আরো ব্যক্তির বাড়িতে হামলা, ভাংচুর চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেনস্থানীয়রা। এর মধ্যে মৃত ইউসুফের পুত্র বরিউল আলম, বদিউল আলম এর বাড়িও তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। একই সঙ্গে হামলাচালিয়ে ফরিদ আলমের স্ত্রী আনোয়ারাকে মারধর করা হয়েছে। আনোয়ারা বেগম এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতালেচিকিৎসাধীন রয়েছে।

এদিকে রোববার ( ২২ মে ) রাতে এনামুল হকের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়ার বাসিন্দামৃত মো. ইউছুপের ছেলে মো. ছলিমের বসত বাড়ীতে। এসময় হামলাকারিরা স্ত্রীসহ বাড়ীর লোকজনকে মারধর চালানোরপাশাপাশি লুটপাট সংঘটন করে। হামলাকারিরা চলে যাওয়ার মো. ছলিমকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে মো. ছলিম এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে

অভিযোগ স্বজনদের।

ঘটনায় সোমবার সকালে মো. ছলিমের স্ত্রী রুজিনা আক্তার বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় এনামুল হকসহ ২০ জনের বিরুদ্ধেঅভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

নুরুল হক ভূট্টোর হত্যার মামলার আসামি এবং এসব আসামির স্বজনদের এলাকা ছাড়া করতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে এনামুলহকের নেতৃত্বে তান্ডর অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আত্মসমর্পণকারি ইয়াবা কারবারি নুরুল হক ভূট্টো নিহতহওয়ার পর থেকে অব্যাহত সংঘাতসংঘর্ষ অব্যাহত থাকায় এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ভীতিকর পরিস্থিতি। এতে সাধারণ মানুষওনিরাপত্তাহীনতায়

ভূগছেন।

আশংকা করা হচ্ছে, আত্মস্বীকৃত এবং চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিদের অধিপত্য বিস্তারের সংঘাতে নাজিরপাড়া মৌলভী পাড়ারপাশাপাশি হাবির পাড়া এলাকায় আবারো প্রাণহানির মতো ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে। ব্যাপারে প্রকাশ্যে কথা বলতেওভয় পাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এলাকাবাসীর দাবি, প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার মিশন চালাচ্ছে আত্মস্বীকৃতইয়াবা কারবারি এনাম।

অভিযোগের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে এনামুল হক বলেন, ভুট্টোকে হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মামলারআসামীসহ একটি চক্র ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে। ধরনের কোন ঘটনার সাথে তার কোন ধরণের সম্পৃক্ততানেই। মূলত ভুট্টোকে শেষ করার পর আমাকে কিভাবে ঘায়েল করবে সেই চেষ্টা চালাচ্ছে হত্যা মামলার আসামিসহ তাদেরস্বজনরা।

ব্যাপারে প্রশাসন এবং গণমাধ্যম কর্মিদের বিভ্রান্ত করতেই তার ( এনামুল হক ) বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে দাবিকরেন এনামুল হক।

নিয়ে টেকনাফ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, গত ১৫ মে টেকনাফে প্রতিপক্ষের হামলায় নুরুল হক ভূট্টো নামেরএক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনার পর থেকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন সংঘাতের ঘটনার খবর শুনেছেন। খবরে পুলিশ পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। এতে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্তভূক্তভোগী কারো অভিযোগ পুলিশ হাতে পায়নি এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানওসি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।