বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারে হোটেল কক্ষে আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত করে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া সিসিটিভির ফুটেস দেখে সেই ঘাতক যুবককে ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করায় প্রশংসায় ভাসছেন জেলা পুলিশের দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান ও সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল হুদা। তাঁদের দুইজনের নেতৃত্বে পুলিশের পৃথক টিম সাইফুদ্দিন হত্যার ক্লু বের করতে সক্ষম হয়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ।
এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা সকল শ্রেণী পেশার কাছে যেন প্রশংসার পঞ্চমুখ। ঘটনার ১২ ঘন্টার পার না হতেই জেলার আলোচিত সাইফ উদ্দিন হত্যাকান্ডে জড়িতকে গ্রেফতার পুরো ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে প্রশংসায় ভাসছেন এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক মহসীন শেখ তাঁর ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছে,প্রসঙ্গ সাবেক ছাত্রনেতা সাইফ উদ্দিন হত্যাকান্ড-
পুলিশের ভালো কাজকে সাধুবাদ জানালে অপরাধ দমনে তারা আন্তরিক হবেন সৎ পুলিশ সদস্যরা।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব এবং কর্তব্য। তবে আমরা যে যার পেশায় কি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করি?
গত সোমবার প্রাক্তন ছাত্রলীগ পরিষদ এর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ উদ্দিনের ঘটনায় আমরা সকলেই শোকাহত এবং খুনিকে গ্রেফতার করা যাবে কি-না তা নিয়ে হতাশায় ভুগছিলাম।
কিন্তু পুলিশসহ সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ২৪ ঘন্টা পার না হতেই খুনি ধরা পড়েছে।
ঘটনার মূল রহস্য এবং জড়িতদের ধরতে অভিযানে সার্বিক বিষয়গুলো কাছ থেকেই দেখার চেষ্টা করেছি সাইফ উদ্দিনের বন্ধু হিসেবে।
হোটেল সানমুনে লা*শ উদ্ধার থেকে শুরু করে জড়িত রো*হিঙ্গা যুবককে গ্রেফতার সহ এ পর্যন্ত খুবই আন্তরিকভাবে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করতে দেখেছি কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি(তদন্ত) নাজমুল হুদা সাহেবকে। অবশ্যই সদর সার্কেল মিজান সাহেবের তৎপরতাও লক্ষ্য করেছি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সংগঠন প্রাক্তন ছাত্রলীগ পরিষদ এর পক্ষ থেকে নাজমুল হুদা এবং পুলিশ প্রশাসককে ধন্যবাদ আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তবে একজন পুলিশ অফিসার হয়ে কোনো ধরনের গাফলতি না করে এ ঘটনায় সার্বক্ষণিক এতো বেশি আন্তরিকতার সঙ্গে কার্যকর চালিয়েছেন নাজমুল হুদা সাহেব। খুবই ঠান্ডা মাথায়, নিজের দায়িত্ববোধ থেকে তিনি সব বিষয় মোকাবিলা করলেন।
ওনাদের মতো দক্ষ, সাহসী, আন্তরিক এবং চৌকস পুলিশ অফিসারের সংখ্যা বাড়ালে কক্সবাজার জেলায় সম্পূর্ণরূপে অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আশা রাখছি।
বন্ধু সাইফ উদ্দিন হত্যাকান্ডে পুলিশ সুপার মহোদয়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহোদয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেসকল সদস্য, মিডিয়ার সহকর্মীবৃন্দ, বন্ধু বান্ধব সহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
পাশাপাশি সাইফ উদ্দিনের আত্নার মাগফিরাত কামনা করছি, আমীন।
মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা সংবাদকর্মী এমরান ফারুক অনিক তাঁর এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা থাকবে কক্সবাজারের পুলিশ প্রশাসনের। ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ১২ ঘন্টা পার না হতে যেভাবে পুলিশ ঘাতককে আটক করেছে, প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই এবং কক্সবাজারের সচেতন নাগরিক হিসেবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এমনভাবে প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিবে সেই প্রত্যাশা রইলো পুলিশ প্রশাসনের।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এইটি পুলিশের নিয়মিত কাজ। ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক তত্ববাধানে সিসিটিভির ফুটেসে দেখা যাওয়া যুবককে শনাক্ত করতে চেষ্টায় ছিলাম। সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতায় সফল হয়েছি। তাঁর জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গতঃ সোমবার সকালে কক্সবাজার শহরের হলিডের মোড় সংলগ্ন আবাসিক হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে মিলে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনের মরদেহ। তার হাত বাঁধা অবস্থায় পাওয়া মরদেহটির শরীরে কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং শরীরের নানা অংশে জখম রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হোটেল থেকে সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনায় জড়িত যুবককে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
নিহত সাইফুদ্দিন (৪৫) কক্সবাজার শহরের ঘোনার পাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশরের ছেলে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।