প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার কক্সবাজারের ঐতিহাসিক জনসভায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাবের পর উখিয়া-টেকনাফে দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক, গোয়েন্দা সংস্থা সহ প্রশাসনের মাঝে তৎপরতা আশংকাজনক ভাবে বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে চট্রগ্রামের ডিআইজি উখিয়া-টেকনাফ থানা পরিদর্শন করেছেন। দিয়ে গেছেন কঠোর নির্দেশনা। এতে দু,উপজেলার চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক। অনেকে বিদেশ পাড়ি দিতে তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন বলে বিভিন্ন সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উখিয়া উপজেলার ক্রাইমজোন খ্যাত কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে আলিসান বাসা ভাড়া নিয়ে কোটি টাকার ইয়াবা লেনদেন করে থাকেন রোহিঙ্গা জিয়াবুল, তার দাপটে স্থানীয়রা অসহায়। স্থানীয় এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এই রোহিঙ্গা যুবক মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। অরপদিকে রাজাপালং ইউনিয়নের খয়রাতিপাড়া গ্রামের আতাউল্লাহ, মির আহমদ, হিজলিয়ার মিয়া ও মোক্তার আহমদ লম্বাঘোনার খোকা,ঘুমধুমের সাহাব উদ্দিন, জলপাইতলির ইমাম হোসেনসহ এক ডজন ইয়াবা গডফাদার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার পরই গোপনে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সুত্রে জানাগেছে। একই ভাবে টেকনাফ উপজেলার লেদা এলাকার মৃত জালাল সওদাগরের ছেলে চিহ্নিত ইয়াবা গডফাদার হেলাল উদ্দিন ইতিমধ্যে বিদেশ পাড়ি দিতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে স্বরাস্ট মন্ত্রনালয় ও দুদকের তালিকায় নাম আসায় হেলাল উদ্দিন অনেকটা আত্বগোপনে চলে গেছে। কিন্ত তার হয়ে ঠিকই গোপনে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তার স্ত্রী খালেদা আকতার ও স্ত্রীর ভাই হ্নীলা পুরাণ বাজার এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ ও মোঃ বাদল। তাদের বিরুদ্ধেও টেকনাফ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে টেকনাফ থানার ওসি মাঈন উদ্দিন জানিয়েছেন।
উখিয়া-টেকনাফ এলাকার বিভিন্ন লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উখিয়ার চিহ্নিত ব্যবসায়ীরা এবং টেকনাফের হেলাল উদ্দিনের টেকনাফ থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবা ঢাকায় সরবরাহের কাজে নিয়োজিত রয়েছে আব্দুল্লাহ ও বাদল। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ২ বছর পূর্বে হেলাল উদ্দিন ঢাকায় র্যাবের হাতে ৪০ হাজার ইয়াবা, ১৪ লক্ষ নগদ টাকা, ১৩ টি মোবাইল নিয়ে আটক হয়েছিল। পরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জামিনে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও মামলা উচ্চ আদালতে চলমান রয়েছে। উক্ত মামলা থেকে রেহাই পেতে কোটি টাকার মিশন নিয়ে ঢাকায় তদবির করছে জানা গেছে। সে এলাকা ছেড়ে আশ্রয় নিয়ে চট্রগ্রাম ও ঢাকায় বসেই টেকনাফের তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজারের লম্বা হেলালের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগর দিয়ে তার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে দুদকের তালিকায় নাম উঠে আসে হেলাল উদ্দিনের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকায়ও তার নাম রয়েছে। সে থেকে হেলাল উদ্দিন তার সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে অনেকটা গোপনে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষনার পর বিদেশ পাড়ি দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। হেলাল উদ্দিনের ইয়াবা ব্যবসা করে অর্জিত সম্পদের মধ্যে রয়েছে চট্রগ্রামের মইজ্জার টেক এলাকায় ৫ তলা প্লাট,বহদ্দার হাট এলাকায় ৪ তলা প্লাট, চট্রগ্রাম ১কিলোমিটার এলাকায় ৩ তলা প্লাট, হোয়াংক্যং ও হৃীলা ইউনিয়নে স্ত্রী খালেদা আকতার সহ নামে বেনামে ২,শ কানি সম্পত্তি,কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে ৪ টি স্পেশাল বাস, ৩ টি ট্রাকসহ বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কার। একই ভাবে উখিয়ার ইয়াবা ব্যবসায়ী খেকো রয়েছে কোটি টাকার বিলাস বহুল বাড়ী, ২টি নোহা সহ নামে-বেনামে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ, এছাড়াও বাকী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। যাহা দুদক সহ আইনশৃংখলা বাহিনী তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল। উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাদক,জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী সমাবেশে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, অতিতের কথা ভুলে গিয়ে এখন থেকে কোন মতেই মাদক ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবে। আপনার ভাল হয়ে যান, না হয় কাউকে খুজেও পাওয়া যাবেনা।
এ ব্যাপারে উখিয়া-টেকনাফের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মার্মা বলেন, উখিয়া-টেকনাফে বেশ কয়েকজন ইয়াবা গডফাদার রয়েছে। তাদের যেকোন সময়ে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।