২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

প্রাথমিকের ৬০ লাখ বই এখনও ভারতে আটকা

প্রাথমিকের ৬০ লাখ বই এখনও ভারত থেকে আসেনি। অথচ ১ জানুয়ারি সারাদেশে পালিত হয়েছে পাঠ্যপুস্তক উৎসব। এনসিটিবির দায়িত্ব অবহেলা আর খামখেয়ালিতে ভারতে আটকে আছে বিনামূল্যের এসব পাঠ্যপুস্তক।

এ কারণে অনেক স্কুলে দুই বা তিনটি বই নিয়েই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

পাঠ্যপুস্তক উৎসবের এক অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেছিলেন, নির্ধারিত সময়ে দেশের সব স্থানে প্রাথমিকের বই পৌঁছে গেছে। এ কারণে জাঁকজমকভাবে বই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অথচ বাস্তব চিত্র ভিন্ন।

জানা গেছে, প্রাথমিকের ৯৮ লটের মধ্যে ১৬ লটে ১ কোটি ৮০ লাখ বই ছাপার কাজ পায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। বাকি বই দেশে তৈরি করা হয়। ইতোমধ্যে ভারত থেকে ১ কোটি ২০ লাখ বই পাঠানো হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গাফিলতির কারণে বর্তমানে ভারতে আটকে রয়েছে অবশিষ্ট ৬০ লাখ বই। এ কারণে চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের প্রায় সব স্কুলের শিক্ষার্থীদের দুই বা তিনটি করে বই দেয়া হয়। ফলে তাদের কাছে বই উৎসবের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। সময়মতো বই না পাওয়ায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম বলেও জানান শিক্ষকরা।

সূত্র জানায়, নোট-গাইড ব্যবসায়ীদের কাছে উচ্চহারে কমিশন নেয়ায় এনসিটিবির কর্মকর্তারা প্রাথমিকের বইয়ের সংকট সৃষ্টি করেছে। এ কারণে ভারতে বিলম্ব করে কার্যাদেশ পাঠানো হয়েছে। ফলে অর্ধ কোটির বেশি বই এখনও বাকি রয়েছে, যা আসতে আরও এক মাস লাগবে।

বিষয়টি গোপন রাখতে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাহিদা অনুযায়ী বই পাঠালেও চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ স্কুলেই বই সংকট দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান এনসিটিবিতে। এ কারণে বই উৎসবের পরই তড়িঘড়ি করে ভারত সফর করেছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের একাধিক প্রাথমিক উপজেলা শিক্ষা অফিসার জানান, অধিকাংশ উপজেলায় এখনও বাংলা, ইংরেজি ও অঙ্ক বই পাঠানো হয়নি। প্রতিদিন বই নিতে বিভিন্ন স্কুল থেকে শিক্ষক তাদের কাছে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন।

শিক্ষা অফিসাররা বারবার বইয়ের জন্য এনসিটিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বই যাচ্ছে, যাবে বলেই তাদের বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি বই না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নীরব থাকতেও এনসিটিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এ কারণে উপজেলা কর্মকর্তারা নাম না প্রকাশে বারবার এ প্রতিবেদককে অনুরোধ জানান।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে এনসিটিবিতে নোট-গাইড ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের রুমে ঢুকতে দেখা যায়। চেয়ারম্যানের দফতরে গিয়ে দেখা যায়, বই সংকটের সমস্যা সমাধানে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জরুরি সভা করেন।

বিষয়টি স্বীকার করে প্রাথমিক বই সরবরাহকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল মজিদ বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতে কিছু বই আটকে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রুত এসব বই দেশে পৌঁছে যাবে।

অন্যদিকে ভারতে কোনো বই নেই, বেনাপোল বন্দরে বেশকিছু বই আটকে আছে বলে বিকালে ফোনে জানান এনসিটিবির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, প্রক্রিয়াজনিত কারণে বন্দরে ভারত থেকে আসা বেশকিছু বই আটকে গেছে। শিগগিরই এসব বই খালাস করা হবে।

উল্লেখ্য, চলতি শিক্ষাবর্ষে ৪ কোটি ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য মোট ৩৫ কোটি ৭ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৭টি বই ছাপার জন্য দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।