কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রো ভাই রাউল ক্যাস্ত্রোর হাতে ২০০৮ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এরপর থেকে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান তিনি।
সর্বশেষ নিজের ৯০তম জন্মদিনে চলতি বছরের আগস্টে জনসম্মুখে এসেছিলেন ফিদেল ক্যাস্ত্রো। হাভানার কার্ল মার্কস থিয়েটারে জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
এই বিপ্লবীর কণ্ঠে মানুষ সর্বশেষ ভাষণ শুনেছেন চলতি বছরের ১৯ এপ্রিলে, কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনে।
সম্মেলনে দেয়া বিরল ভাষণে ফিদেল কাস্ত্রো আধুনিক সময়কে স্বীকার করে নেন। ‘কিউবার কমিউনিস্ট ধারণা এখনো কার্যকর।’
তিনি আরো বলেন, ভাষণে নতুন প্রজন্মকে দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই আমার বয়স ৯০ বছর হয়ে যাবে। তখন আমিও অন্যদের মতো হয়ে (মারা) যাব।’
সেখানেই শিগগিরই মারা যাবেন এমন ইঙ্গিত দিয়ে ফিদেল ক্যাস্ত্রো কিউবার জনগণের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেন।
তিনি বলেন, ‘কিউবার কমিউনিস্ট দলের ধারণা, এই পৃথিবীতে আজীবন রয়ে যাবে। বিশ্ববাসী জানবে, যদি তারা সততার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে তারা মানবসভ্যতার জন্য ভালো জিনিস ও সংস্কৃতি তৈরি করতে পারবে। আর এসবের জন্য আমাদের ক্রমাগত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’
সপ্তম কংগ্রেসের উদ্বোধন করে আগামী ২০২১ সালে পরবর্তী কংগ্রেসের ঘোষণা দেন এই বিপ্লবী। সেই কংগ্রেসকে নতুন প্রজন্মের নেতারা নেতৃত্ব দেবেন আশা প্রকাশ করে ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেন, এবারের কংগ্রেসই হচ্ছে ঐতিহাসিক প্রজন্মের শেষ কংগ্রেস।
এছাড়া আগামী পাঁচ বছরে কিউবার অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ভাষণে বর্ষীয়ান এই বিপ্লবী বলেন, ‘আমি হয়তো শিগগিরই মারা যাবো। কিন্তু বিপ্লব নিয়ে আমার পরিকল্পনাগুলো বেঁচে থাকবে।’
সেই ভাষণের ঠিক সাত মাস পর সত্যিই চলে গেলেন কিংবদন্তি এই নেতা। শুক্রবার কিউবার রাজধানী হাভানায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।