মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ততা দাবি করা বাংলাদেশের স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর তৎপরতা বাড়ছে বলে মানবাধিকার বিষয়ক এক মার্কিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদেশি জঙ্গি সংযোগের দাবি করা এসব সংগঠন ধর্মীয় সংখ্যালঘু, শিক্ষক, বিদেশি নাগরিক, মানবাধিকার কর্মী ও অন্যান্য গ্রুপের মানুষদের ওপর হামলা চালিয়ে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মানবাধিকার বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ সরকার শক্তিশালী জঙ্গিবাদ-বিরোধী অভিযান চালানোর ফলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, অবৈধভাবে আটক এবং অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে।’ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সীমিত করার ক্ষেত্রে সরকার জঙ্গিবাদ-বিরোধী অভিযানের বিষয়টি ব্যবহার করছে বলেও প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়।
ওই প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার সমস্যা হলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, অবৈধ আটক, রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সংযোগে গুম, জঙ্গি মতবাদে উদ্বুদ্ধ গ্রুপের হত্যাকাণ্ড, বাল্য বিয়ে, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং শ্রমিক নির্যাতন।
কয়েকজন সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠনের বরাত দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, সাংবাদিকরা নিরাপত্তা বাহিনীর ভয়ে নিজেদের মধ্যে সেলফ-সেন্সরশিপ আরোপ করছেন। যদিও সরকারের সমালোচনা করাটা খুবই সাধারণ ঘটনা, কিন্তু কিছু সংবাদমাধ্যম সরকারিভাবে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে রয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ক্রমাগত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। এসব হামলাকারী গ্রুপ যেমন বিদেশি জঙ্গি সংগঠনে প্রভাবিত, তেমনি এর সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণও জড়িত।
হামলাকারীরা নিজেদের আইএস বা আল-কায়েদার সহযোগী বলে দাবি করে থাকে। এদের হামলায় আটজন হিন্দু, দু’জন খ্রিস্টান, দু’জন বৌদ্ধ, একজন সুফি এবং একজন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ নিহত হয়েছেন। আরও চারজন হিন্দু ও দু’জন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী গুরুতর আহত হয়েছেন।
ওই প্রতিবেদনের ভূমিকায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, মানবাধিকার রক্ষা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রধান লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, ‘একটি দৃঢ়, নিরাপদ এবং কার্যকরী সমাজ গড়ে তোলার ভিত্তিই হলো এই বিষয়গুলো। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র শুধু নৈতিক উপদেশ নয়, বরং এটি বিশ্বকে আরও দৃঢ় ও নিরাপদ করার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।