কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আড়ালে ৫শ’র বেশি ইয়াবা ব্যবসায়ী বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। এর বাইরে ইয়াবার ক্যারিয়ার রয়েছে আরো এক হাজারের বেশি। গেলো তিন মাসে কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ায় মাদক পাচারের ৯২টি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ১৯৫ জন রোহিঙ্গাকে। এ অবস্থায় এসব মাদক ব্যবসায়ী বাংলাদেশে ইয়াবার কারখানা তৈরি করে ইয়াবার বিস্তার ঘটাতে পারে বলে শংকা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর।
গেলো রবিবার আঞ্জুমান পাড়া সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাদের দেহ তল্লাশী করতে গিয়ে বিজিবি সদস্যরা উদ্ধার করে ১২শ পিস ইয়াবা। আর এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। শুরু হয় সাধারণ রোহিঙ্গাদের আড়ালে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সন্ধান। অথচ আগে কোনো রকম তল্লাশী ছাড়াই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এ সুযোগে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
কক্সবাজার উখিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ‘যেহেতু প্রচুর লোকজন আসছে, এটা আমাদের জন্য ঝুঁকির ব্যাপার।
কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক জানান, ‘আমরা আনুমানিক ২০০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে সনাক্ত করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের আড়ালে এক হাজারের বেশি ইয়াবা ক্যারিয়ার বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। যারা মূলত আগে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছে পুনরায় মিয়ানমারে ফিরে যেত। এছাড়া চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী রয়েছে অন্তত ৫শ। যারা বর্তমানে অনেকটা গোপনে আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে।
কক্সবাজার টেকনাফ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ আশরাফুজ্জামান জানান, ‘এই রোহিঙ্গাদের সুযোগ নিয়ে অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার কাজ করাতে পারে।’
এদিকে রোহিঙ্গাদের আড়ালে ঢুকে পড়া ইয়াবা ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে ইয়াবার বিস্তারে আরো বেশি ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিজিবি। এতদিন পর্যন্ত মিয়ানামার সীমান্তে গড়ে উঠা কারখানা থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচার হতো। কিন্তু এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী বাংলাদেশে চলে আসায় বাংলাদেশে ইয়াবা কারখানা গড়ে তোলার শংকা থেকে যাচ্ছে।
৩৪ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ জানান, ‘বাংলাদেশে এসে তারা বসে থাকবে না তারা যেকোনভাবে ব্যবসাকে আরো বেশি ত্বরাণ্বিত করবে।’
এর আগে বিগত ২০১৬ সালে ৭০টি মামলায় ১৩৯ জন এবং ২০১৫ সালে ৮৬টি মামলায় ২৯০ জন রোহিঙ্গাকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়েছিলো। কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়া দিয়ে পাচারের পর চট্টগ্রামকে ট্রানজিট রুট হিসাবে ব্যবহার করে এসব ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।