২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা   ●  রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক চোরা চালানের গডফাদার ফরিদ ফের সক্রিয়

বাংলার দার্জিলিং বান্দরবানে


বান্দরবান শহরের কাছে উঁচু পাহাড়ের উপর গড়ে তোলা হয়েছে নীলাচল নামে একটি পর্যটন স্পট। পর্যটন স্পটটি এত সুন্দর যে দূর থেকে দেখতে নীল আকাশের সঙ্গে মিশেছে মনে হওয়ায় স্থানীয়রা এর নামকরণ করেছে নীলাচল। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৬০০ ফুট। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে টাইগার পাহাড় এলাকায় অবস্থিত নীলাচল থেকে সমগ্র বান্দরবান শহরটি এক নজরে দেখা যায়। রাতে আলোকিত শহরটি ছবির মতো মনে হয়। তাই অনেকেই এই এলাকাটিকে বাংলার দার্জিলিং বলে থাকেন।
নীলাচল থেকে সূর্যাস্ত যাওয়ার দৃশ্য ও নির্মল বাতাসে মনে এক স্বর্গীয় অনভূতি আনে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নীলাচলে শত শত পর্যটক বেড়াতে যান। তারা শহর থেকে উঁচু পাহাড়ের উপর তৈরি এ পর্যটন স্পটটির মনোরম পরিবেশ দেখে মুগ্ধ। শহর থেকে উঁচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য উপভোগ করেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০০৩ সালে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ওই সময়ের) হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া পাহাড়টিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। পরে ১ জানুয়ারি ২০০৬ সালে দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শেখ আলাউদ্দিন বান্দরবান সদর উপজেলার ১০০ একর জমির উপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে এই পর্যটন স্পটে ২ কক্ষবিশিষ্ট একটি রেস্ট হাউস নির্মাণ করা হয়। পাহাড়ের উপরে এই পর্যটন স্পটে ওঠা ও নামার অত্যাধুনিক একাধিক ছোট বড় সিঁড়ি রয়েছে। প্রতিটি সিঁড়ি নানা কৌশলে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। পর্যটন স্পটের উপর থেকে নিচে নামার জন্য অত্যাধুনিক সিঁড়ি, বসার নানা বেঞ্চ রয়েছে। এই পর্যটন স্পটের উপর থেকে আকাশের সাদা কালো-মেঘ, আর নিচের দিকে অসংখ্য ছোট ছোট পাহাড় দেখা যায়। অদূরে নিচে দেখা যাচ্ছে বান্দরবান শহরটি।
স্থানীয়দের মতে, বান্দরবানের অত্যাধুনিক এই পর্যটন স্পটটি দেশের পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত সুন্দর ও যেতে কোন ঝামেলা বা বিশৃঙ্খলা হয় না। তাই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বহু দেশি পর্যটক বান্দরবান যান। তারা একনজর এই স্পটে ঘুরে বেড়ান। শহরের কাছে ও রাস্তাঘাট ভালো থাকার কারণে অনেকেই প্রতিদিন সন্ধ্যায় সেখানে যান। শিশু-কিশোররা মনোরম দৃশ্য দেখে বেশি খুশি হয়। এই স্পটটি ছাড়াও বান্দরবানে আরও বহু পর্যটন স্পট রয়েছে। সেই পর্যটন স্পটগুলোও ভালো। পাহাড়ঘেরা বান্দরবান জেলার পর্যটন স্পটগুলো যাতায়াত ব্যবস্থা আরও উন্নত হলে তাও নীলাচলের মতো পর্যটন আকর্ষণীয় হবে।
অনেকেই বলছে, বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো সরকার আন্তর্জাতিক মানের করলে দেশ যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবেন, তেমনি দেশি পর্যটকরা বিদেশে ঘুরতে না গিয়ে বান্দরবানে ছুটে যাবেন। আর বিদেশিরা বান্দরবান পর্যটন স্পটে আসতে উৎসাহী হবেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক বলেন, জেলার পর্যটন স্পটগুলো উপভোগ করতে এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, শৈলপ্রপাতসহ সরকারি ও বেসরকারিভাবে অংসখ্য পর্যটন স্পট রয়েছে বান্দরবানে। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রান্তিক লেক এবং চিম্বুক পর্যটন স্পটকে নতুন করে সাঁজানো হয়েছে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মনে করেন, বান্দরবানে পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সম্মিলিত উদ্যোগ নিলে পর্যটন শিল্প থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আসবে। দেশ হবে লাভবান। মানুষের বিদেশমুখী ঘোরা কমবে। কারণ ছুটির দিন ছাড়াও গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, বসন্ত ছয় ঋতুর সব সময় বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের আগমন ঘটে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।