বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে মার্মা সম্প্রদায়ের ৩৬০ পরিবারের সাথে মিয়ানমারে চলমান সহিংসতার রেশ, বৌদ্ধ বিহার গুলোর নিরাপত্তা কমিটি গঠন, পাড়া, মহল্লায় পাহারা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকাল ৩ টায় ধাবনখালী মার্মা পাড়াস্থ বৌদ্ধ বিহারের মাঠে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবু মুসা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাইশারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবু মুসা মার্মা সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি, একাত্বতা ও পারষ্পরিক সহযোগীতা-যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজন উল্লেখ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে ঘটে যাওয়া চলমান সহিংসতা নিয়ে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে রয়েছে। তাছাড়া তিনি সকলকে কোন ধরনের গুজবে কান দিয়ে আতংকগ্রস্থ না হয়ে প্রশাসনকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহযোগীতা প্রদানের পাশাপাশি এ সম্প্রদায়ের বৌদ্ধ বিহার সমুহের নিরাপত্তা কমিটি গঠন ও রাত্রিকালীন নিয়মিত পাহারা দেওয়ার বিষয়ে অধিক গুরুত্বারোপ করেন।
এসময় বক্তারা পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারে চলমান সহিংসতার জের ধরে অত্র এলাকায় যাতে কোন ধরনের সহিংসতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখা সহ উস্কানি বা ধর্মীয় অনূভূতিতে আঘাত আসে- এ জাতীয় কোন বক্তব্য, বিবৃতি বা কার্য চালিয়ে সম্প্রীতি বিনষ্ট করা থেকে সকলকে বিরত থাকার আহবান জানান। বক্তারা আরো বলেন, ইতিপূর্বে বান্দরবানের বাইশারীতে পাহাড়ী-বাঙ্গালী সবাই এক মায়ের সন্তান হিসেবে বসবাস করে আসছে। আমাদের ভিতর কোন ধরনের বিরোধ নেই এবং ছিল না। আগামীতেও আমরা যেন এক পরিবারের সদস্য হিসেবে সকল ভেদাভেদ ভূলে থাকতে পারি, সেজন্য সকলের প্রতি আহবান জানানো হয়। পাশাপাশি এলাকায় অপরিচিত লোকজনের আনাগোনার খবর পেলে পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত খবর দেওয়ার পরামর্শ দেন।
মাষ্টার মংলাগ্য মার্মার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম। বক্তব্যে তিনি বলেন, ভিক্ষু ও বৌদ্ধ বিহারের নিরাপত্তায় কমিটি গঠন পূর্বক পাহারা দেওয়া দরকার। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও সার্বিক সহযোগীতা করার আহবান জানান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী ইনচার্জ এ এস আই সোলাইমান ভূইয়া, ইউপি সচিব আবু হানিফ রাজু, ইউপি সদস্য থোয়াইছাহ্লা চাক, নুরুল আজিম, আনোয়ার ছাদেক, থোয়াইলাপ্রু মার্মা, ছাগ্য মার্মা মংছাচিং মাষ্টার, মংলাছিং মাষ্টার, সাংবাদিক আব্দুর রশিদ, আব্দুল হামিদ, মুফিজুর রহমান, থোয়াইমংচিং মার্মা সহ মার্মা সম্প্রদায়ের ৩৬০ পরিবারের নারী-পুরুষ, গনমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও সামাজিক নেতৃবৃন্দরা।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বরও চাক সম্প্রদায়ের ২০৮ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হেডম্যান পাড়াস্থ বৌদ্ধ বিহারের মাঠে একই বিষয়ের উপর পুলিশ প্রশাসনের সাথে জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।