এম.জিয়াবুল হক,(চকরিয়া): চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর চিরিঙ্গা পয়েন্টে নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে এবার আন্দোলনে নেমেছে নানা শ্রেণী-পেশার হাজারো মানুষ। “ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর বারবার সংস্কার নয়, চাই নতুন ২য় মাতামুহুরী সেতু” এমন দাবীতে গতকাল বুধবার (৩১ জানুয়ারী) সকালে টিআইবির সহযোগি প্রতিষ্ঠান সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চকরিয়া এবং সহযোগী সংগঠন স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক (স্বজন) এর আহবানে সাড়া দিয়ে শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহনে চকরিয়া পৌরশহরের মহাসড়কে স্বতঃফূর্ত ভাবে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
কক্সবাজার-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া শহরের চিরিংগা নিউ মার্কেটের স¤রুখে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সনাক চকরিয়ার সভাপতি অধ্যাপক এ.কে.এম. শাহাবুদ্দিন। মানববন্ধনের দাবীর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সেখানে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, সনাক সদস্য মোহব্বত চৌধুরী, সাংবাদিক আবদুল মজিদ, স্বজন সমন্বয়ক শহীদ উল্লাহ, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি প্রতিনিধি মঈনুল ইসলাম বাবুল, সময়ের সংবাদের শাহরিয়ার মাহমুদ ও টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার এ.জি.এম. জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যাবসায়ী, সনাক-স্বজন-ইয়েনস নেতৃবৃন্দসহ সকল শ্রেণির পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভঙ্গুর, ক্ষতিগ্রস্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর পরিবর্তে ২য় মাতামুহুরী সেতু নির্মানের দাবী এখন শুধু মাত্র অধিকার নয় বরং বাস্তবতা। কারণ এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকারের সংস্কার করে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত বালির বস্তা দিয়ে নড়বড়ে মাতামুহুরী সেতুর ধ্বস ঠেকানোর চেষ্ঠা করা হচ্ছে। কয়েক বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলে আসছে। গাড়ী চলাচলের সময় মাতামুহুরী সেতু প্রতিনিয়ত ঝাঁকুনি দেয়, ভয়ে শরীর আঁৎকে উঠে। যে কোন সময় এই সেতু ধসে পড়ে বড় ধরনের প্রাণহানি হতে পারে বলে সকলের আশংকা। যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত এই সেতু ভেঙ্গে প্রাণহানি হয় সেই দায় কে নেবে? আমরা প্রতিনিয়ত শুনে আসছি এই সেতু নির্মানের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান কিছুই চোখে পড়ছে না। আমরা বিশ^াস করি বাংলাদেশ যেখানে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মান করতে পারে সেখানে নতুন মাতামুহুরী সেতু নির্মান মামুলি বিষয়। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আগে আমরা ২য় মাতামুহুরী সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। এই দাবী বাস্তবায়নে কক্সবাজারের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সরকারের দ্রত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
মানববন্ধনে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু বলেন, এই সেতু শুধু কক্সবাজার নয় সারা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেতু। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রবেশ মুখে এই সেতুর অবস্থান। পর্যটন শহর কক্সবাজারের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ সচল রাখতে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু বারবার সংস্কার না করে নতুন সেতু নির্মানের বিকল্প নেই। তিনি কক্সবাজারের সকল রাজনীতিবিদকে মাতামুহুরী নদীতে দ্রুততম সময়ে নতুন সেতু নির্মানে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে সনাক চকরিয়ার সভাপতি অধ্যাপক এ.কে.এম. শাহাবুদ্দিন বলেন আজকের মানববন্ধনে চকরিয়াবাসীর স্বতঃফূর্ত অংশগ্রহনে বারবার সংস্কারের পরিবর্তে নতুন মাতামুহুরী সেতু বাস্তবায়নের যে দাবী উঠেছে তা সকলের প্রাণের দাবী। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এই মাতামুহুরী সেতুর বিষয়ে সাংবাদিক ভাইদের লেখনিতে উঠে আসলেও কিছুই হয়নি। একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন, লক্ষ-লক্ষ মানুষ চলাচল করছে। আমরা আগামী ১ মাসের মধ্যে মাতামুহুরী সেতু নির্মানের দৃশ্যমান কিছু না দেখলে প্রয়োজনে সেতুমন্ত্রীসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করব।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।