ম্যাচ শেষে মিরপুর ইনডোরের এক কোনায় চুপচাপ বসে রইলেন খেলোয়াড়েরা। হৃদয়, সোহাগ আর সাগরের চোখে জল। কেউ একজন সাগরকে সান্ত্বনা দিতে ইনডোরের বাইরে নিয়ে গেলেন। খেলোয়াড়দের বিধ্বস্ত চেহারাই বলে দিচ্ছিল, কতটা হতাশ নিজেদের খেলায়। রোলবল বিশ্বকাপের পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশ আজ সেমিফাইনালে ১১-৩ গোলে হেরে গেছে শক্তিশালী ইরানের কাছে। সন্ধ্যায় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ খেলবে কেনিয়ার সঙ্গে।
কিন্তু ওই ম্যাচের ফলে কিছু যায়–আসে না। হোক না খেলাটা রোলবল। বিশ্বকাপ তো! আর বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারাটা বাংলাদেশের জন্য হতো অনেক বড় কিছু। এখন যে ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইরান ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত।
একদিক দিয়ে দেখলে এত দূর আসাটাও অনেক। টুর্নামেন্ট শুরুর আগেও কেউ ভাবেনি বাংলাদেশ বিশ্বকাপে এত ভালো খেলবে। কিন্তু প্রতিটি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে বাংলাদেশের স্বপ্নের পরিধি বাড়িয়ে দিয়েছিল এই খেলোয়াড়েরাই। একসময় মনে হচ্ছিল, এই বাংলাদেশ বুঝি ফাইনালেই খেলবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বপ্নভঙ্গের বেদনা।
বাংলাদেশ আসলে হেরেছে ইরানের কৌশল ও অভিজ্ঞতার কাছে। এমনিতেই উচ্চতায় অনেক এগিয়ে ইরান। এর সঙ্গে ভুল পাস, পেনাল্টি মিস তো ছিলই। ইরানের খেলোয়াড়েরা ডি বক্সের সামনে এমনভাবে রক্ষণ দেয়াল সাজিয়ে ছিলেন, দেখে মনে হচ্ছিল চীনের প্রাচীর। বাংলাদেশও সামর্থ্যের শত ভাগ খেলতে পারেনি আজ। অথচ আজ নিজেদের সেরাটারও বেশি কিছু দেওয়া দরকার ছিল খুব।
বাংলাদেশের তিনটি গোলই করেছেন হৃদয়। এখন পর্যন্ত ২৯ গোল করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গোলদাতাও তিনি। যদিও গোল করার চেয়ে আজ গোল ঠেকানোতেই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচের ৯ মিনিট পর্যন্ত তাতে সফলও হয়েছিল। এমনকি প্রথমার্ধ শেষেও স্কোর ছিল ৩-১। বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর আশা ছিল তখনো।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াবে কী, উল্টো বিধ্বস্ত চেহারায় বাংলাদেশ। দুটি পেনাল্টির সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি হৃদয়।
অবশ্য ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের ভারতীয় কোচ সুনীল ধাগে প্রশংসায় করলেন খেলোয়াড়দের, ‘বিশ্বের ৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন চতুর্থ। তা ছাড়া ইরান গত বিশ্বকাপের রানার্সআপ। সব মিলিয়ে এই ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশ অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে। ভবিষ্যতে এই দল আরও ভালো করবে।’
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।