এম.এ আজিজ রাসেলঃ পূজার আনন্দে বর্ণিল সাজে আগেই সেজেছে জেলার পূজা মন্ডপগুলো। পূজা মন্ডপের আলোকসজ্জা অনেকটা দূর থেকেই জানিয়ে দিচ্ছিল শারদীয় দুর্গোৎসবের বর্ণিল আবহ। ঘাটতি নেই নিরাপত্তায়ও। মায়ের আগমণে ঝিলমিলি হাসি সবার মুখে। আনন্দে মাতোয়ারা দেখা গেছে ছোট-বড় সকলকে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে ২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মহা-অষ্টমীতে পূজা মন্ডপ গুলোতে ভক্তদের ঢল নামে।
শহরের বঙ্গপাহাড়, জাদিরাম পাহাড়, ইন্দ্রসেন, কৃষ্ণানান্দধাম, স্বরসতী বাড়ি, লাবণী বিচ ও কালিবাড়ি পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, মায়ের পায়ের কাছে বসে পুরহিতরা বিতরণ করছেন চরণামৃত। কপালে মায়ের আশির্বাদের চিহ্ন নিয়ে দেবী দর্শনে মন্ডপগুলোতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে পুণ্যার্থী ও পূজারীরা। দেবীর চরনে প্রাণের অর্ঘ নিবেদনে আবাল-বৃদ্ধবণিতা ঘুরছেন মন্ডপে মন্ডপে। ঢাক-ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার মূর্চনা ও মাঙ্গলিক মন্ত্রোচ্চারণে সর্বত্র উৎসবের আমেজ। মন্ডপ থেকে ভেসে আসা ধুপের গন্ধ জানান দিচ্ছে শারদীয় দূর্গা উৎসবের সার্বজনীন আনন্দ বারতা।
সনাতনী ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি মন্ডপ গুলো এক নজরে দেখতে ভীড় করতে দেখা গেছে মুসলিম, বৌদ্ধ ও খিষ্টানদেরও। এছাড়া পর্যটকরাও আসছে দেখতে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই ক্ষণে ক্ষণেই বদলে যাচ্ছিল পূজা মন্ডপের প্রতিমার আলোকসজ্জা। কখনো লাল, কখনো নীল, আবার কখনো ঝলসানো হলুদ আলোতে সে প্রতিমা দেখে মা দূর্গার একাধিক রূপের কথা মনে পড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক দর্শনার্থীদের জন্য। অপরদিকে এতো বড় এই আয়োজনের নিরাপত্তা দিতেও কোনো কার্পণ্য করেনি নিরাপত্তাবাহিনী। র্যাব, পুলিশ, আনসারবাহিনীর দায়িত্বরত সবাই সবার সাধ্যমতো সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করছে।
এছাড়াও দর্শনার্থীদেরকে বাড়তি সাহায্য করার জন্য মন্ডপের ভেতরে পূজা কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকরাও অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি মায়ানমারের আরাকানে ঘটে যাওয়া রোহিঙ্গা হত্যার প্রতিবাদের ব্যানারও ছিল বিভিন্ন মন্ডপের আঙিনায়। আজ মহানবমী। কাল বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে বিসর্জন অনুষ্ঠানে ঢল নামবে সর্বস্তরের মানুষের।
কক্সবাজার জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সভাপতি এড. রণজিত দাশ, বাবুল শর্মা ও সদর সভাপতি দীপক দাশ জানান, সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দূর্গা পূজা বাঙালির প্রাণের উৎসব। সুষ্ঠুভাবে চলছে সার্বজনীন এই পূজা। দেবী দুর্গা দুর্গতিনাশিনী জগতে আসেন মানুষেরই কল্যাণে। মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ ভেদ-বিভেদ দূর করার জন্যই তার আগমন। তাই এই পূজায় মায়ের সরনাপন্ন হয়ে ভাঙতে হবে বৈষমের দেয়াল। নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য প্রশাসন ও জেলা পুলিশ প্রশংসার দাবিদার।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।