মহেশখালী উপজেলার অধীন শাপলাপুর বনাঞ্চলে নির্বিচারে উজার করে চলছে সামাজিক বনায়ন ও সরকারি রির্ভাজ বনাঞ্চলের মুল্যবান গাছ কেটে পাচারের মহোৎসব। বনবিভাগের লোকজনের অসহযোগিতা ও ক্ষেত্র-বিশেষে যোগসাজসে বর্তমানে উপজেলার বেশিরভাগ বনবিট এলাকায় সামাজিক বনায়ন লোপাটের হিড়িক পড়েছে। এ অবস্থার কারনে বনায়ন রক্ষা করতে গিয়ে উপকারভোগীরা বর্তমানে চরম আতঙ্ক ও উৎকন্ঠায় রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সামাজিক বনায়নের পাশাপাশি সংরক্ষিত বনাঞ্চলও উজার হচ্ছে। চলছে বনভুমি দখল বিক্রির প্রতিযোগিতা।
স্থানীয় পরিবেশ সচেতন মহল জানিয়েছেন, পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পকে টার্গেট করে এক শ্রেণীর বনদস্যুরা ইতোমধ্যে উপজেলার শাপলাপুর রেঞ্জের প্রায় বনবিটে সৃজিত সামাজিক বনায়ন নিধনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। মাতারবাড়ী-বদরখালী পাচারকালে পুলিশ হাতে গাছ ভর্তি গাড়ী আটক হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে।
উপকারভোগীরা অভিযোগ করেছেন, বনবিভাগের লোকজনের অসহযোগিতা এবং বনকর্মী ও হেডম্যানদের যোগসাজসে একাধিক কাঠ চোর চক্র দিব্যি হানা দিয়ে সামাজিক বনায়নের মুল্যবান গাছপালা নিধন করে ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও স-মিলে বিক্রি করছে। বর্তমানে উপজেলার প্রায় বনায়নে চলছে নিধনের মহোৎসব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লাকড়ী ব্যবসায়ীরা বলেন, বনবিভাগের কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে চলছে তাদের ব্যবসা।
অভিযোগ রয়েছে, শাপলাপুরের বনবিটের কর্মকর্তা ও ভিলেজারদের যোগসাজসে বর্তমানে শাপলাপুর ইউনিয়নের বনদস্যু হাসান, আলতাফ, সরওয়ারসহ ৬জনের একটি সিন্ডিকেট চক্র সামাজিক বনায়ন ও সরকারি রির্ভাজ বনাঞ্চল থেকে গাছ সংগ্রহ করে মাতারবাড়ীও বদরখালী ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও স-মিলে বিক্রি করছেন। বর্তমানে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকার ডিপো গুলোতে মজুদ করা হচ্ছে সামাজিক ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজার করে মুল্যবান গাছপালা। কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে সড়ক নিমার্ণ কাজে পানি ঢেউ না পড়তে চোরাইকৃত গাছ বলদি দিয়ে সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে জানা গেছে, যারা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে গাছ কিনছেন তারা আদৌও জানেন এসব গাছ পাহাড় থেকে কেটে চোরাই করে এনে তাদের বিক্রি করছে। এ অবস্থার কারনে উপজেলায় পরিবেশগত ভাবে চরম হুমকির মুখে পড়েছে সরকারি এসব বনাঞ্চল।
জানতে চাইলে শাপলাপুর বিট কর্মকর্তা প্রেম আনন্দ সরকার বলেন, বনাঞ্চলের কাঠ সামাজিক বনায়ন ও সরকারি রির্ভাভ বনাঞ্চলের গাছপালা উজার হচ্ছে। তবে গাছ চোরদের সাথে আমাদের কোন আঁতাত নেই। তিনি আরোও বলেন, সরকারি বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়নের সম্পদ রক্ষার স্বার্থে অবশ্যই বনবিভাগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।