বিশেষ প্রতিবেদকঃ বিনা ওয়ারেন্টে ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতিকে আটকের ঘটনায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীর ক্রাইমজোন কালারমারছরা। এ ঘটনায় পুলিশসহ গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন অন্তত ১৫। পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ উত্তাপন করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। পুলিশের দাবি একটি গুলিভর্তি ম্যাগজিন লুট করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার বিকেল ৩টায় এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যার পর থেকে ম্যাগজিন উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
কালারমারছরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু আহমদ গাজী দাবি করেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর কালারমারছরা পরিষদ এলাকা থেকে তালিকাভূক্ত আসামী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেফতার করেন তারা। এখবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে শতাধিক এলাকাবাসী ফাঁড়িতে আক্রমন চালায়। তারা এএসআই অহিদুর রহমানসহ অপর ৪ কনস্টেবলকে প্রহার করে আসামী ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা চালায়। প্রহারের আঘাতে এএসআইসহ অন্যরা গুরুতর আহত হয়েছে। আত্ম রক্ষার্থে পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালায়।
অপর দিকে, কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তারেক বিন শরীফ দাবি করেন, গত সপ্তায় কালারমারছরা ও পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের দু’শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মাঝে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। বিষয়টি সমাধানে ব্যবস্থা নিতে জুমার নামাজের পর ইউনিয়ন শ্রমিকলীগ সভাপতি গোলাম মোস্তফা তার (চেয়ারম্যানের) সাথে পরিষদে বসেন। এমন সময় এসআই রাজু পরিষদে ঢুকে গোলাম মোস্তফাসহ অন্যদের পরিষদ থেকে বের করে দিতে নির্দেশ দেন। তার কথা মতো পরিষদটি বন্ধ করতে সহকারিকে নির্দেশ দিয়ে আমি বাসায় চলে আসি। এরপরও মোস্তফরা পরিষদ থেকে বের না হওয়ায় পুলিশ ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন আসবাব ভাংচোর করে মোস্তফাকে টেনে হেচড়ে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। দিন দুপুরের ঘটনা হওয়ায় বাজার ও আশপাশের শত শত লোক জমা হয়ে যায়। খবর পেয়ে আমি বাড়ি থেকে দ্রুত ফাঁড়ির উদ্দেশে আসি। সেখানে গিয়ে মোস্তফাকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানতে চাইলেই অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এবং আমাকে ফাঁড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আমাকে গুলি করতে নির্দেশ দেন এসআই রাজু। অন্য পুলিশ সদস্যরা নির্দেশ পাওয়া মাত্র গুলি চালালে আমাকে কর্ডন করে ফেলে স্থানীয়রা। তখন এলাকার দশজনের মতো সাধারণ জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধারকরে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠান।
তিনি আরো জানান, সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনে এমপি সমর্থিত দলীয় প্রার্থী তার কাছে পরাজয়ের পর থেকে একেকটি ইস্যু বানিয়ে এলাকার পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলছেন তারা। এতে পুলিশকে কৌশলে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে মহেশখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হোছাইন ইব্রাহিম, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সিএনজি-টেম্পু শ্রমিকদের মাঝে সংগঠিত ঘটনায় মামলার আসামী গোলাম মোস্তফাকে আটকের পর এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ৮ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লুট হওয়া অস্ত্র ম্যাগজিন উদ্ধারে অভিযানে নেমেছে পুলিশ। কবে নির্বাচনি ইস্যুনিয়ে পুলিশ ব্যবহার হচ্ছে না বলে দাবি করেন ওসি।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।