কক্সবাজারের মহেশখালীতে সন্ত্রাসের একটি পর্ব শেষ হলে উঠে আসছে আরেকটি বাহিনী। কারিগরদের হাতে তৈরি অনন্ত দুই ডজন অস্ত্রের কারাখানা তৈরি কৃত অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মহেশখালী থানার নবাগত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (পিপিএম বার) সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদকের কারখানা ও অস্ত্রের কারখানার সন্ধান পেয়ে উদ্ধার করে মাদক ও অস্ত্র। ওসির দুঃসাহসিক অভিযানের ঝাঁকুনিতে নিজেদের রক্ষা করতে সন্ত্রাসীদের একটি বিশাল অংশ গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, ক্রাইমজোন বড় মহেশখালী ছাড়া সম্প্রতি হোয়ানকের কেরুনতলী, মাতারবাড়ীতে কয়েকদফা অভিযান চালিয়ে ১৪ টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি উদ্ধারসহ এক সন্ত্রাসী পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত ৫ সন্ত্রাসী গ্রেফতার করলেও এখনো অস্ত্রের মূল উৎস ও গডফাদার বরাবরে পৌঁছতে পারেনি প্রশাসন। যার কারনে অস্ত্রের দাপটে সাধারণ জনগণ অসহায় হওয়ায় সন্ত্রাসীরা এখন রাজা মহেশখালীতে। তাদের কাছে অনেকটা অসহায় জমির মালিকরা। নিজের জমি হয়েও দীর্ঘদিন ধরে জমির দেখা পায়নি এমন মালিকের সংখ্যা ও অনেক। সম্প্রতি হোয়ানক ইউনিয়নে অনন্ত ৩ হাজার এককর জমি দখল করে রেখেছে একটি দাপটু সন্ত্রাসী বাহিনী। আওয়ামীলীগের আমলে এখনও চলছে তাদের শাসন। ওই বাহিনীর আস্তানায় র্যাব-পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে অনন্ত ৩ ডজন খানিক অস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে জনশ্রুতি আছে। বিভিন্ন সন্ত্রাসীর বাহিনীর তত্বাবধানেই তৈরি হচ্ছে এসব অস্ত্র। কারখানায় তৈরি অস্ত্র গডফাদার নিয়ে যুব সমাজের হাতে তুলে দিয়ে তাদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গডফাদাররা ভবিষ্যৎত নেতৃত্বে আসবে টার্গেট করে ধবংস করে দেওয়ার জন্য বেকার যুবক, স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছাত্র, রাজনৈতিক ছাত্র নেতাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে বলে জানা গেছে। যার ফলে সন্ত্রাসের একটি পর্ব শেষ হলে উঠে আসছে আরেকটি বাহিনী। যেন সন্ত্রাসের শেষ নেই।
গত ২০০৬ সালের পর থকে একটি হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে একই অবস্থা কালারমারছড়া বিরাজ করলেও সম্প্রতি অশান্ত কালারমারছড়া শান্ত হতে চলেছে বলে জানিয়েছেন কালারমাছড়া বাজারের ব্যবসায়ী সনজিত কুমার।
সচেতন লোকজন জানান, এই কালারমারছড়া ৪ বছর আগে সকালে ঘুম ভাঙত গুলির বিকট শব্দে। এখন গুলির তেমন শব্দ শোনা যায় না। আওয়ামীলীগ বিএনপি সমর্থিত দুই গ্রুপের লোকজন এই ইউনিয়নের তুমূল বন্দুক যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। দুই পক্ষের মধ্যে খুন ও হয়েছে ডজনখানি লোক। কালামারছড়া সন্ত্রাসীদের ভয়ে জানাযার নামাজ পড়তে যেতে ভয় পেত লোকজন। এখন নিজেদের মধ্যে বিবেক সৃষ্টি হওয়াতে এক পক্ষ অপর পক্ষকে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা না ঘটানোর কারনে এখন কালারমারছড়াকে নিয়ে তেমন পত্রিকার পাতায় শিরোনামও হয়না। তবে বিএনপি সমর্থিত খসরু ঘোষ্টির লোকজন এলাকায় ফিরে যেতে পারলে কালারমারছড়া তেমন দাঙ্গা হাঙ্গামা ঘটবে না বলেও এমন কথার উদয় হচ্ছে। তবে যে কোন মূহুর্তে কালারমারছড়া আবার রণক্ষেত্র রূপ নিতে পারে বলেও আশংকা রয়েছে।
তবে স্থানীয় একাধিক সূত্রে দাবী পুলিশ, সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান সাধারণ জনগণ আন্তরিক হয়ে কালারমারছড়ার মোহাম্মদ শাহঘোনা গ্রামের খসরু ও কমলাবর এ দুইটি গোষ্ঠির মধ্যে আপোষের ব্যবস্থা করে তাহলে এ দাঙ্গা-হাঙ্গামা সামাল দেয়া সম্ভাব হবে। কিন্তু আপোষ হচ্ছে না! তবে এ সন্ত্রাসের ব্যাপকতার পেছনে দক্ষিন মহেশখালীর রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় অফিস পাড়া-ফকিরজুম পাড়ার রাজনৈতিক দলের সুবিধাবাদি (দালাল) গডফাদারদের অবস্থান কে দায়ী করেছেন অনেকেই।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মহেশখালী পাহাড়ের চুড়াই গহীন অরণ্যে অস্ত্রের কারখানায় রাত দিন অস্ত্র তৈরি কাজ করছেন শতাধিক কারিগর। দৈশি তৈরি লম্বা বন্দুক,কাটা বন্দুক, রাইফেল সহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তৈরিতে তারা দক্ষ। তবে এখন পুলিশের অভিযান জোরদার হওয়ায় অভিযানের মোড় কোন দিকে নিচ্ছে কারিগরদের একটি বিশাল অংশ দূর থেকে পর্যবেক্ষন করছেন।
মহেশখালী থানার নবাগত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ( পিপিএম বার) বলেন, পুলিশের চলতি অভিযান জোরদার রয়েছে, সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।