কক্সবাজার প্রতিনিধি:
উৎপাদন বাড়াতে লব চাষীদের হাতেই ন্যায্যমূল্য পৌঁছানো নিশ্চিত জরুরি উল্লেখ করে শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, বর্তমান সরকার মাঠ পর্যায়ে লবণের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে আন্তরিক। প্রান্তিক পর্যায়ে লবণ চাষীদের স্বার্থে কাজ করছে শেখ হাসিনার সরকার। লবণকে রপ্তানি পণ্যে রূপান্তর করতে কক্সবাজারেই লবণ বোর্ড স্থাপনে কাজ চলছে। একই সাথে কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু লবণ ইনস্টিটিউটও করা হবে। এ ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে লবণ চাষীদের উন্নয়নে আয়োজন হবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের।
শনিবার (২৮ মে) দুপুরে কক্সবাজারের তারকা হোটেলে সায়মনের সম্মেলন কক্ষে ‘সর্বজনিন আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন’ শীর্ষক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, কোন মাঠ ভরাটে ১২ টাকা ফি দেয়া হয়। সে ক্ষেত্রে লবণ কেন কমদামে বিক্রি হবে? লবণের ন্যায্যদাম পেলে-ই মাঠে নামার আগ্রহ পাবেন চাষীরা। তাই ন্যায্যমূল্য যেন প্রান্তিক চাষীরা পান সেটা নিশ্চিত করা-ই সরকারের মূল লক্ষ্য।
মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, প্রান্তিক চাষীরা সবসময় বঞ্চিত হয়ে আসছেন। মাঠের লাগিয়ত, শ্রমের খরচের সাথে লবণের মূল্যে বৈষম্যের শিকার হলে চাষীরা পরবর্তীতে চাষ করার আগ্রহ হারায়। বছরের পর বছর লবণের চাহিদা বাড়ছে। ২০১৮ সালে ১৬ লাখ মেট্রিক টন চাহিদা ২০২২ সালে এসে ২৩ লাখে দাড়িয়েছে। জীবন সংশ্লিষ্ট সবকিছুর মূল্য বেড়েছে, কেবল বাড়েনি মাঠপর্যায়ের লবণের দাম। চাষকালে লবণের মণ প্রতি দাম ছিল ২০০-২৫০ টাকা। এ টাকা খরচও পড়েছে। কিন্তু এখন মণ প্রতি ৪০০-৪২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। মৌসুম শেষ হওয়ায় চাষীদের হাতে কোন লবণ নেই। মধ্যস্বত্বভোগীরাই বাড়তি দামটি পাচ্ছে। সিন্ডিকেট করে চাষীদের ঠকিয়ে লবণ গুদামজাত করা হচ্ছে কি না খতিয়ে দেখা দরকার। একটি স্বয়ং সম্পন্ন কৃষি ক্ষেত্র হিসেবে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে তদারকি ও প্রণোদনা দিলে লবণ উৎপাদন ক্ষেত্র আরো বাড়বে।
কক্সবাজার-৩ আসানে সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি নিয়ে গত ছয় বছরে অনেক বৈঠক, সভা, সেমিনার হয়েছে- কাজের কাজ কিছুই হয়নি। লবণ বোর্ড স্থাপন না হলে বৈঠকের গল্প কেবল গল্পই থেকে যাবে। দেশের চাহিদামতো শতভাগ উৎপাদিত কৃষি ও শিল্প পণ্য হিসেবে লবণকে আরো অগ্রগামী করতে হলে রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ে লবণ বোর্ড গঠন খুবই জরুরি।
শিল্প মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী লবণচাষীদের প্রতি খুবই আন্তরিক। পরিকল্পিত ভাবে এগুনোর কারণে সকল ক্ষেত্রে সফলতা আসছে। লবণকে রপ্তানি পণ্য করতে উদ্যোগী হতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই লক্ষ্যে পতিত জমিতেও চাষাবাদ বাড়ানোর তাগাদা দেয়া হয়েছে। এখন লবণ বোর্ড ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপণে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) এবং ইউনিসেফের সহায়তায় আয়োজিত কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সভায় বিসিকের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।