আন্দোলনের নামে যারা ভূমি অফিসে আগুন দিচ্ছে তাদের জমি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, উপজেলা-জেলায় ভূমি অফিসগুলোও তারা আগুন দিয়ে পোড়াচ্ছে। ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে কাগজপত্র-দলিলপত্র পুড়িয়ে ফেলার কি রহস্য থাকতে পারে? আমি আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলেছি, যে করেই হোক এদের খুঁজে বের করতে হবে এবং যারা জরুরি দলিলপত্র পোড়াচ্ছে তাদের বাপ-দাদার যত জমি আছে সব বাজেয়াপ্ত করা হবে, কোন জমির মালিক তারা থাকতে পারবে না। ওই এলাকায় তারা থাকতে পারবে না, ওই এলাকায় কোন জমি তাদের থাকবে না। সেই ব্যবস্থাটাই আমাদের নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তি, সোহার্দ্য, অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও মানবতার ধর্ম। ইসলাম ধর্মই সব থেকে বেশি মানবতার কথা বলেছে এবং মানবতাকে উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা দেখেছি, আমাদের দেশেই পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অপব্যাখ্যা করে, ব্যবহার করে, ধর্মের বিরুদ্ধে যেমন কাজ করেছে, মানবতার বিরুদ্ধেও তেমনি কাজ করেছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আমরা দেখেছি একই ঘটনা- মানুষ হত্যা করা, অগ্নিসংযোগ করা, মা-বোনের ইজ্জত লোটা, লুণ্ঠন করা, নানা ধরনের অপকর্ম এই ধর্মের নাম ব্যবহার করে করা হয়েছে। এতে আমাদের যে পবিত্র ধর্ম ইসলাম; সেই ধর্মেরই বদনাম হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে সবসময়ই ইসলামের প্রচার ও প্রসারে কাজ করেছে। স্বাধীনতার পর ক্ষমতায় এসেই বঙ্গবন্ধু ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আপনারা জানেন, তিনি আইন করে মদ, জুয়া নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। ঘোড়া দৌড় নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন, অসামাজিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করেছিলেন। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যাতে স্বল্প খরচে সমুদ্রপথে হজে যেতে পারে সেজন্য হিজবুল বাহার নামে একটি জাহাজ কিনেছিলেন বঙ্গবন্ধু। কিন্তু পরবর্তীকালে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমান সেই জাহাজকে প্রমোদতরী হিসেবে ব্যবহার করে। মুখে ইসলামের নাম, কাজে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখলের পর মদ, জুয়ার লাইসেন্স দিতে শুরু করে।
বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় একটা করে মডেল মসজিদ তৈরি হবে; যেখানে নারীদের জন্য আলাদা নামাজ ঘর, মুসলিম পর্যটক ও অতিথিদের জন্য বিশ্রামাগার, হজ যাত্রীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের জায়গা থাকবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বজলুল হক হারুন। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসান স্বাগত বক্তৃতা করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ডের বিবরণ উপস্থাপন করেন মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামগণের পক্ষে বক্তৃতা করেন মাওলানা আবুল কালাম। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রেষ্ঠ ইমাম ও শিশু-কিশোর সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।