২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে টিসিবির প্রস্তুতি সম্পন্ন

প্রতি বছরই রমজানকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করতে সচেষ্ট থাকে অসাধু সিন্ডিকেট। এজন্য এবার আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যেই অভিযান পরিচালনা এবং খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

আসন্ন রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল ও যৌক্তিক রাখতে বাজারে অভিযান চালাতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পণ্যবাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রতি বছরই রমজান মাসে পাঁচটি পণ্য বিক্রি করে সংস্থাটি। এবারো আসন্ন রমজান উপলক্ষে এ পণ্যগুলোর মজুদ সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া রমজান মাসে পণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে আগামী ১৫ মে থেকে খোলাবাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করবে টিসিবি।

গতবারের তুলনায় খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি আরো বেশি স্থানে হবে বলে সংস্থাটির সূত্র জানিয়েছে। এবার সারা দেশে মোট ১৮৫টি ট্রাকের মাধ্যমে ২ হাজার ৮১১ জন ডিলার টিসিবির পণ্য বিক্রি করবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, টিসিবির চেয়ারম্যান আবু সালেহ মো. গোলাম আম্বিয়ার সভাপতিত্বে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ক এক পর্যালোচনা সভা গত ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার রমজান উপলক্ষে ১৫ মে থেকে খোলাবাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে। প্রতি বছরের মতো ট্রাকে করে পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, ডাল, তেল ও খেজুর বিক্রি করবে টিসিবির ডিলাররা। এবার সারা দেশে ১৮৫টি ট্রাকের মাধ্যমে ২ হাজার ৮১১ জন ডিলার টিসিবির পণ্য বিক্রি করবেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৩টি, চট্টগ্রামে থাকবে ১০টি, অন্য বিভাগীয় শহরে ৫টি করে এবং অন্য জেলা শহরগুলোতে ২টি করে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করবে টিসিবি।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি বা মূল্য বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা নেই। চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও  মূল্য এখন স্থিতিশীল। হঠাৎ করে কোনো পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সংগত কোনো কারণ নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করা হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুসারে এ অভিযান পরিচালনার জন্য টিসিবি রূপরেখাও তৈরি করেছে। এ রূপরেখা অনুসারে ১ রমজান থেকেই বাজারে বাজারে অভিযান চালানো হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রমজানে প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের সরবরাহ, মজুদ পরিস্থিতি ও এর মূল্য ঠিক আছে কিনা তা অধিকতর যাচাই-বাছাই করা হবে। অভিযানকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, কৃত্রিম চাহিদা বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত মুনাফার অভিযোগ পেলে বিদ্যমান আইনে জেল-জরিমানা বা উভয় দণ্ড দিতে পারবেন। আগামী ২৭ বা ২৮ মে রমজান শুরু হবে।

টিসিবির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবার রমজানে দুই হাজার টন ছোলা ও ১০০ টন খেজুর বিক্রি করবে। গত বছর রমজানে প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার ৫০০ টন ছোলা বিক্রি করেছিল। এ ছাড়া তেল, চিনি ও মসুর ডালের যে মজুদ করা হয়েছে তার পরিমাণও গত বছরের চেয়ে বেশি বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, টিসিবির সারা দেশে দুই হাজার ৮০৫টি অনুমোদিত ডিলার রয়েছে। এ ছাড়া ১৭৩টি ট্রাকের মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি করে থাকে। গত বছর রমজানে অবশ্য ১৭৮টি ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। প্রথম ধাপে এক হাজার ৪০০ জন ডিলার এবং দ্বিতীয় ধাপে ৬০০ জন ডিলার টিসির পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রি করেছে। প্রতি ডিলার ৮০০ লিটার করে তেল, ৫০০-৮০০ কেজি পর্যন্ত চিনি এবং ৪০০-৬০০ কেজি পর্যন্ত মসুর ডাল সংগ্রহ করতে পারতেন। এ ছাড়া প্রতিদিন একটি করে ট্রাকে ৩০০-৫০০ লিটার তেল, ৩০০-৬০০ কেজি চিনি এবং ২০০-৪০০ কেজি পর্যন্ত ডাল বিক্রি করতেন। এবার ১৮৫টি ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করা হবে।

এ বছর বিভিন্ন পণ্যের সংগ্রহ আরো বেশি হওয়ায় ডিলার এবং খুচরা পর্যায়ে আরো বেশি পণ্য বিক্রি করতে পারবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের এ সংস্থাটি রমজানে উল্লিখিত পণ্যের দাম যেন লাগামছাড়া না হয় সে জন্য এ সব পণ্য বিক্রি করে থাকে। বাজারে কোনো পণ্যের বড় ধরনের সংকট তৈরি হলে সেখানেও পণ্য আমদানি করে বিক্রি করে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে প্রতিষ্ঠানটি।

সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এবার রজমান উপলক্ষে শুধু খেজুর বাদে সব পণ্যের মজুদ সংগ্রহ করা হয়েছে। খেজুর কেনার দরপত্র আমরা দিয়েছে। আশা করি, খুব দ্রুতই এটি সম্পন্ন হবে। বাকি পণ্যগুলোর মজুদ গত বছরের চেয়ে বেশি। আর দামের বিষয়টি রমজানের ৮-১০ দিন আগে নির্ধারণ করা হবে।

বাজার নিয়ন্ত্রণে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের বাজার যেন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে না যায়। এটা সরাসরি তত্ত্বাবধান না করলে আমরা পণ্যের সাপ্লাই বাড়িয়ে এটার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি।’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।