২৬ নভেম্বর, ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

রমজানের আগে সব সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণার নির্দেশ খালেদার

বিএনপিকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করতে সাংগঠনিক ইউনিটের সব কমিটি আগামী রমজানের আগে গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তিনি লিখিত ও মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ৭৮টি সাংগঠনিক ইউনিটের যে কমিটিগুলো বাকি আছে সেগুলো রমজানের আগেই গঠন করতে হবে। চেয়ারপারসনের নির্দেশনা পেয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তবে এসব কমিটি নিয়ে সমস্যা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ঘোষিত বেশ কয়েকটি কমিটিতে বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশ রয়েছে দ্রুত কমিটি গঠনের। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। ’

তবে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হয়তো সব কমিটি হবে না। কেননা এখনো ২৫ থেকে ৩০টি কমিটি বাকি রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ময়মনসিংহ উত্তর ও ময়মনসিংহ দক্ষিণ, নরসিংদী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, রংপুর মহানগর, পঞ্চগড়, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, খুলনা মহানগর, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, ফেনী, কুমিল্লা উত্তর ও কুমিল্লা দক্ষিণ, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুরসহ আরো কয়েকটি জেলা।

আর বাকিগুলোতে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলেও সেখানে চলছে বিদ্রোহ, পদত্যাগসহ নানা সমস্যা। গত ২৯ এপ্রিল রাজশাহী জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে তোফাজ্জল হোসেন তপুকে সভাপতি এবং এ কে এম মতিউর রহমান মন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। তাঁরা বর্তমান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সমর্থক। আগের কমিটি ছিল সাবেক মেয়র ও বর্তমান কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু সমর্থিত। জানুয়ারিতে প্রথম আংশিক কমিটি ঘোষণার পরপরই কেন্দ্রীয় অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন বঞ্চিতরা। আর গত শুক্রবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর উত্তেজনা আরো বেড়ে গেছে।

গত বুধবার মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে আব্দুল হাইকে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে কামরুজ্জামান রতনকে। হাইকে নিয়ে কোনো বিরোধ না থাকলেও রতন জেলার নেতা না হওয়ায় দেখা দিয়েছে কোন্দল। মুন্সীগঞ্জের রাজনীতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সফুসহ কয়েকজন নিয়ন্ত্রণ করেন। রতন বহিরাগত হওয়ায় জেলায় যাঁরা হামলা-মামলা মাথায় নিয়ে রাজনীতি করেন তাঁরা ক্ষুব্ধ। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন কয়েকজন। এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যোগ্য পদ না পেলে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে বিদ্রোহ করব। প্রয়োজনে ছাত্রদলের মতো ভাঙচুর করতেও পিছপা হব না। ’

কেন্দ্র থেকে বান্দরবান জেলার কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে দলের একাংশ। মার্চের ৪ তারিখে শহরের চৌধুুরী মার্কেটে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সাচিং প্রু জেরি গ্রুপের নেতাকর্মীরা এ সংবাদ সম্মেলন থেকে গণপদত্যাগেরও হুমকি দেয়।

ঝিনাইদহে জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এর ছয় মাস পর ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে মসিউর রহমান সভাপতি ও আব্দুল মালেক সাধারণ সম্পাদক হন। কিন্তু কেন্দ্রে পদ পেয়েছেন ওই জেলারই নেতা মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি এখন নিজের আধিপত্য কায়েমে জেলা কমিটিতে নতুন ১৭ জনকে বসাতে চাচ্ছেন বলে অভিযোগ এসেছে কেন্দ্রে।

এ ছাড়া ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় কর্মিসভা পণ্ড হয়েছে দলীয় কোন্দলে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের কর্মিসভা শেষ হয়েছে হট্টগোল আর চেয়ার ছোড়াছুড়ির মাধ্যমে। বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনে বিএনপি কার্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির ওই কর্মিসভা হয়। কেন্দ্রের দুই নেতা ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম চৌধুরী গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।

এসবের পর দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশ, আগামী রমজানের আগে সব সাংগঠনিক জেলার কমিটি ঘোষণা করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘চেয়ারপারসন খুব শিগগির সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। এটি নিয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে চাই। সরকার রাজি হলে ভালো, আর না হলে আমাদের আন্দোলনে যেতে হবে। সে জন্য সংগঠন শক্তিশালী করা দরকার। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাংগঠনিক ইউনিটগুলো হয়ে গেলে আমরা পরবর্তী সময়ে ওই ইউনিটের মহানগর-উপজেলা-পৌরসভা-থানা পর্যায়ে কমিটি করব। এসব কাজে বর্ষা মৌসুম পার হয়ে যাবে। এরপর আমরা সর্বশক্তি দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে যাব। ’

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।