আবদুল আজিজ, বাংলাট্রিবিউনঃ রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসার আগেই জুম চাষ ও নানা কারণে টেকনাফ ও উখিয়ার পাহাড়গুলো ন্যাড়া করা হয়েছিল। ন্যাড়া পাহাড়গুলো আবারও সবুজ হতো। পাহাড়ে থাকা গাছের শেকড় থেকেই নতুন গাছ জন্মাতো। কিন্তু এখন সেইসব ন্যাড়া পাহাড়গুলো বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। সবুজের বদলে চোখে পড়ে শুধু রোহিঙ্গা ঝুপড়ি। পাহাড়গুলো একেক করে রোহিঙ্গাদের দখলে চলে গেছে। রান্না করতে পাহাড়ে থাকা গাছের শেকড়ও তুলে ফেলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, এভাবে চলতে থাকলে উখিয়া ও টেকনাফ থেকে হারিয়ে যাবে বনভূমি। যা পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
নতুন ও পুরনো মিলিয়ে এখন ১০-১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। নতুন করে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের রান্না করতে দৈনিক অন্তত ৫ লাখ কেজি লাকড়ি প্রয়োজন। তাই,কক্সবাজারের উখিয়া,টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির বনভূমিই ভরসা তাদের। তারা বনের গাছ-বাঁশ কেটে তৈরি করছে ঘর-বাড়ি। আর ব্যবহার করছে জ্বালানি কাজে। এছাড়া কাটা হচ্ছে পাহাড়। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল এরশাদ বলেন, ‘মানবিক সহায়তা করতে রোহিঙ্গাদের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ত্রাণ সামগ্রী আসছে। তবে রান্নার জন্য জ্বালানি এবং ঘর-বাড়ি তৈরির জন্য গাছ কিংবা বাঁশ দেওয়া হচ্ছে না। তাই তারা ঘর তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় বাঁশ এবং জ্বালানির কাঠ পাহাড় থেকে সংগ্রহ করছে। এতে চাপ পড়েছে বনাঞ্চলের ওপর। উজাড় হচ্ছে বনভূমি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। এ বিষয়ে সরকার কাজ করছে। আশা করি খুব দ্রুত এর একটা সুরাহা হবে।’
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা আলী কবির বলেন, ‘রোহিঙ্গারা দৈনিক রান্নার কাজে ৫ লাখ কেজির বেশি জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করছে। এই কাঠ সংগ্রহ করা হচ্ছে আশপাশের বনভূমি থেকে। এভাবে চলতে থাকলে কক্সবাজারে সবুজ আর থাকবে না।’ ত্রাণের সঙ্গে জ্বালানি কাঠ দেওয়ার পরার্মশ দিচ্ছেন এই বন কর্মকর্তা।
পরিবেশবিদদের মতে, রোহিঙ্গাদের পাহাড় থেকে সরিয়ে ৩ হাজার একরের কুতুপালং ও বালুখালী অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে আসা শেষ হলে বনভূমি রোহিঙ্গা মুক্ত হবে। এছাড়া পাহাড়ে পুনরায় বনায়ন করা হলে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।