আনছার হোসেনঃ কক্সবাজার সদর থেকে খুব কাছের উপজেলা রামুতে করোনা রোগীদের জন্য ঘোষিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন সেন্টারে এখন রোগীর সংখ্যা ১০ জন। শনিবার রাত পর্যন্ত রোগীর এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৫ জন। রোববার (২৫ এপ্রিল) একদিনেই ৫ জন করোনা রোগীকে ওই সেন্টারে আনা হয়েছে।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ভবনটিকে ৫০ শয্যার ‘ডেডিকেটেড’ আইসোলেশন সেন্টার ঘোষণা দিয়েছে।
ওই আইসোলেশন সেন্টার পরিচালনা কমিটির আহবায়ক ও কক্সবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান এবং রামু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, রামু আইসোলেশন সেন্টারটিতে রোববার মহেশখালীর ৫ জন করোনা রোগীকে আনা হয়েছে। গত শনিবার (২৪ এপ্রিল) ওই ৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
তার মতে, এতোদিন আইসোলেশন সেন্টার ফাঁকাই ছিল। এখানে প্রথমে একজন রোগী আনা হয়। তিনি হলেন কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা। পরে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার আরেকজনকে আনা হয়। তাদের পর আনা হয় টেকনাফ উপজেলার তিনজন রোগীকে। সর্বশেষ রোববার মহেশখালীর ৫ জন করোনা রোগীকে আনা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. নোবেল কুমার বড়ুয়া বলেন, আইসোলেশন সেন্টারের সকল রোগীই মোটামুটি ভালো আছেন। তাদের অধিকাংশেরই শরীরে করোনাভাইরাসের তেমন কোন উপসর্গ নেই। কারো হালকা জ্বর, কারো হালকা কাঁশি কিংবা কারো হালকা সর্দি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মতো উপসর্গ কোন রোগীরই দেখা যায়নি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যার জ্বর তাকে জ্বরের চিকিৎসা, যার কাঁশি তাকে কাঁশির চিকিৎসা। তাদের এভাবেই পর্যবেক্ষণে রাখা হবে আগামি ৭ দিন। সাতদিন পর তাদের আবারও করোনা টেষ্ট হবে।
তার মতে, এভাবে দুইদফা টেষ্টের পর করোনা ‘নেগেটিভ’ পাওয়া গেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। যদি কারো স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে তাকে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ডা. আলী এহসানও সংবাদমাধ্যমকে একই ধরণের মন্তব্য করেছেন।
তিনি জানান, রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। একই সাথে চিকিৎসা সেবা দেয়া ডাক্তার ও নার্সদের জন্যও প্রোটেকশন নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতেই রয়েছেন ৮ জন। এছাড়াও কক্সবাজার শহরে দুইজন, টেকনাফে তিনজন ও চকরিয়ার খুটাখালীতে একজন রয়েছেন। খুটাখালীর প্রথম রোগী মুসলিমা আক্তার ঢাকার কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন।
এছাড়াও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে করা টেষ্টে পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার একজনেরও করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। তিনিও এখন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন সেন্টারে রয়েছেন। তার দ্বিতীয়দফা করোনা টেষ্ট ‘নেগেটিভ’ এসেছে।
সুত্র মতে, গত ২৫ দিনে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ৭৩৩ জনের করোনা টেষ্ট হয়েছে। এদের মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ির একজনসহ ১৪ জনের করোনা টেষ্ট ‘পজিটিভ’ এসেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সন্দেহভাজন রোগীর টেষ্টের প্রক্রিয়া চলছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।