কক্সবাজার রামু উপজেলাধীন রশিদ নগর পানিরছড়া এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ‘ইউনিক সার্ভিসের’ একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রান হারিয়েছেন ৪ যাত্রী এবং আহত হয়েছেন ২৪ জন। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ দমকল বাহিনী, অন্যন্য আইন শৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় জনতা যৌথভাবে বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে মহাসড়ক থেকে বাসটি সরিয়ে নেয় এবং মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ লাইনে আটকে থাকা শত শত যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
রামু ক্রসিং হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড় টারদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পানিরছড়া এলাকায় ‘ইউনিক সার্ভিসের’ ঢাকা মেট্টো ব ১৪- ০১০৫ নাম্বারের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে হঠাৎ এ দূর্ঘটনা সৃষ্টি হয়। এরপর উদ্ধার কর্মীরা বাসের বডি কেটে জীবিত অবস্থায় আহতদেরকে উদ্ধার করেন। পরে সেনাবাহিনী কেরেনের মাধ্যমে বাসটি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেয়। এই দূর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- কুতুবদিয়ার মোঃ আবদুল্লাহ’র ছেলে এম ডি ফারুক (২০) ও পেকুয়া টৈইটং এলাকার একই দুর্ঘটনায় আহত মোঃ শফিকুর রহমানের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (২৫), ভৈরব জেলার আবুল কাশেম (৩৫) ও চকরিয়ার মৃত কবির আহমদের স্ত্রী নুর নাহার (৪৫) ।
এছাড়া আহতরা হলেন রফিকুল ইসলামের ছেলে ইসা বাহাতউল্লাহ, আবুল,এনায়েতের ছেলে মোঃ শোয়েব, মৃত ইদ্রিসের ছেলে মনির আলম, কাদের হোসেনের ছেলে নুরুল আলম, মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে জামাল হোসেন, মৃত মোঃ হোছনের ছেলে বাদসা মিয়া, আবদুল হান্নানের ছেলে জন্নাতুল মাউয়া, আবদুল হান্নানের ছেলে মেহেদী হাসান, মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে শাকিব, আজিজুর রহমানের ছেলে সৈয়দ নুর, সৈয়দ আহমদের ছেলে মমতাজ, আহমদ কবিরের ছেলে মোঃ আবদুল জলিল, হাকিম আলীর ছেলে নুরুল আমিন, মোঃ আবুল কাসেমের ছেলে সুমন, মমতাজের ছেলে মনির, আবদুর রশিদের ছেলে নাসির উদ্দিন, আবুল হোসেনের ছেলে উম্মে কুলসুম, মোঃ শফিকুর রহমানের মেয়ে মিনফাতুল জন্নাত, মৃত আকরামের ছেলে মোঃ শফিকুর রহমান, মো: জলিলের ছেলে আবুল হোছন, শাহ আলমের ছেলে রনি, মৃত মোঃ হোছনের ছেলে লেডু মাঝি, তৈয়ব আলীর ছেলে আবদুল হাকিম, জাফর আলমের স্ত্রী নুসরাত ও রনজিত মল্লিকের ছেলে উত্তম কান্তি মল্লিক। তাদের বাড়ি রামু, কক্সবাজার শহর, চকরিয়া, টেকনাফ, চট্টগ্রাম, কুতুবদিয়া, ডুলাহাজারা, নোয়াখালী, রংপুর ও ভৈরব জেলার বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন, রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলী, উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি মোঃ নিকারুজ্জামান, সেনাবাহিনী ও বিজিবির কর্মকর্তা, রামু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর, হাইওয়ে থানার ওসি আবুল কালাম আযাদ, রশিদ নগর চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম।
এদিকে রামু স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মান্নান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
অন্যদিকে আহত যাত্রীদের বরাত দিয়ে রামু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, সকাল আটটার দিকে ইউনিক পরিবহনের বাসটি যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বাসটি সড়কের বিভিন্ন স্টেশন থেকে যাত্রীও তোলে। কিন্তু রামু রশিদনগর পর্যন্ত পৌঁছলে একটি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইককে (টমটম) ওভারটেক করতে গিয়ে বাসটি উল্টে যায়।
এদিকে এ দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চার ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে সড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন এ সড়কে চলাচলরত যাত্রী ও স্থানীয় লোকজন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।