কক্সবাজারের রামু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ছালামত উল্লাহর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতাসহ শিক্ষকদের সাথে চরম দূর্ব্যবহারের প্রতিকার দাবিতে ফুঁসে উঠছে শিক্ষক সমাজ। দূর্নীতিবাজ এই শিক্ষা অফিসারের দ্রুত অপসারণ ও বিভাগীয় শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভূক্তভোগী মহল।
অভিযোগে জানা যায়, রামু উপজেলায় শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সরকারীভাবে বরাদ্দকৃত বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের প্রাপ্য বরাদ্ধ থেকে লাখ লাখ টাকা অর্থবাণিজ্য শুরু করেন। সেই সাথে শিক্ষকদের নানা ভাবে দমন-নিপীড়ন শুরু করেন তিনি। তার ছত্রছায়ায় অফিসের কয়েকজন স্টাফও অনিয়ম-দূর্নীতিতে মেতে উঠেছেন। অভিযোগে প্রকাশ, সরকার কর্তৃক বিদ্যালয় প্রতি বছরে ৩০ হাজার টাকা বিতরন করা হয়। তিনি রামুতে যোগদানের পর থেকে কোন কারন ছাড়াই প্রতিস্কুল থেকে ১২০০/=টাকা করে আদায় করেন। তাছাড়া সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বিনামুল্যে বই বিতরনের ক্ষেত্রে রামুর প্রতিটি কিন্ডার গার্টেন (কে. জি) স্কুল থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করেন। সম্প্রতি শিক্ষক বদলীর ক্ষেত্রে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের লেনদেনের বিনিময়ে বদলীর প্রস্তাব দেন। তার প্রকৃত উদাহরন হাসনাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ টি পদ শূণ্য থাকা সত্বেও ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক গৌরাঙ্গ শর্মাকে বদলী প্রস্তাব জেলায় পেশ করেন। অথচ চাকরী নীতিমালায় সুষ্পষ্ট উল্লেখ আছে ২টি পদ শূণ্য থাকলেও তৎ বিদ্যালয় থেকে কোন শিক্ষক বদলী করা যাবেনা। ২ সপ্তাহ আগে উক্ত শিক্ষক গৌরাঙ্গ শর্মাকে নাসিরাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলীর প্রস্তাব করলেও নীতিমালার কারনে কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বদলী প্রস্তাব নাকচ করে দেন। গত ফেব্রুয়ারীর মাসের ২৮ তারিখ মেরংলোয়া মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য হয়। উক্ত শূণ্যপদের বিপরীতে শিক্ষা অফিসার দূনীর্তিবাজ একজন প্রধান শিক্ষক আজিজুল হককে মডেল বিদ্যালয়ে বদলী করার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। অথচ উক্ত শিক্ষক কয়েক বছর আগে বিনামুল্যের বই বিতরন করার সময় জনপ্রতি ২০/৩০ টাকা আদায়ের অভিযোগে ডিপিও কর্তৃক সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার প্রমান রয়েছে। এছাড়াও ইদানিংকালে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হলেও শিক্ষা অফিসার নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। এদিকে দূর্নীতিবাজ শিক্ষক আজিজুল হকের বদলী প্রস্তাব রামু মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করার খবরে অভিভাবকসহ সচেতন মহলে দারুন হতাশা বিরাজ করছে। এদিকে আরো অভিযোগ পাওয়া গেছে দূর্নীতিবাজ ওই শিক্ষা অফিসার অর্থ ছাড়া শিক্ষকদের বদলী, টাইম স্কেলসহ বিভিন্ন ফাইলে সাক্ষর করেন না। এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে সোমবার দুপুর ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কার্যালয়ে না থাকায় তার সাক্ষাত পাওয়া যায়নি। তার সাথে মোবাইলে ( ০১৮১৩৯৭০০৪২) যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রামু শিক্ষা অফিসারের দূনীর্তির বিষয় ওপেন সিক্রেট হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলছেনা। উক্ত শিক্ষা অফিসারের এহেন দূর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দূনীর্তির রাহুগ্রাস হতে রামুর সকল বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের মুক্ত করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।