স্পোর্টস ডেস্কঃ চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর এই জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। আদ্রিয়েন রাবিয়টের লক্ষ্যভেদে পিছিয়ে পড়লেও রোনালদোর পেনাল্টি গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে তিন মিনিটের মধ্যে দুইবার বল জালে জড়ান রোনালদো ও মার্সেলো। অন্য ম্যাচে পোর্তোকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে লিভারপুল। পর্তুগিজ ক্লাবটির মাঠে হ্যাটট্রিক করেছেন সাদিও মানে। আর একটি করে গোল করেছেন মোহাম্মদ সালাহ ও রবার্তো ফিরমিনো।
চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ম্যাচটি। কেন ছিল, তা শুরুর বাঁশির পর থেকেই বোঝা গিয়েছে। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর উত্তাপ গায়ে মেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ম্যাচটি রিয়াল মাদ্রিদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, রোনালদোর হতাশার ছবিতে ধরা দিচ্ছিল স্পষ্টভাবে। গোলের সুযোগ নষ্ট করছিলেন, আর নিজের ওপরই ক্ষোভ ঝারছিলেন পর্তুগিজ উইঙ্গার। একবার তো পোস্টের ভেতর গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি তিনি। ফাঁকা পোস্টে গোলরক্ষক আলফোন্স আরেওলার মুখে বল মারেন। আরেকবার বল উঁচিয়ে মারেন বারের অনেক উপর দিয়ে।
রিয়ালের পরিস্থিতি যখন এই, পিএসজির অবস্থাও খুব একটা সুবিধার ছিল না। বল পায়েই রাখতে পারছিল না সফরকারীরা। বিশেষ করে নেইমারকে ‘বিশেষ’ পাহারায় রেখেছিল রিয়াল। ব্রাজিলিয়ান তারকা বল পেলেই নাচো ছিলেন প্রস্তুত। তবে এই ‘অতি গুরুত্বের’ কারণেই ৩৩ মিনিটে গোল হজম করে মাদ্রিদের ক্লাবটি। ডান প্রান্ত থেকে কাইলিয়ান এমবাপে চমৎকার ক্রস করেছিরেন রিয়ালের বক্সে। সামনে থাকা এদিনসন কাভানি চেষ্টা না করে নেইমারের জন্য ছেড়ে দিলেন বল। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের আগে নাচোর পায়ে লেগে বল চলে যায় পেছনের দিকে। তাতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া রক্ষণের পূর্ণ সুবিধা নিয়ে বল জালে জড়াতে কোনও সমস্যাই হয়নি রাবিয়টের।
ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। সুযোগ তৈরি হচ্ছিল, কিন্তু রোনালদোর ওই হতাশার দৃশ্যের মতো বার্নাব্যুর গ্যালারিতেও বারবার মাথায় হাত দিচ্ছিলেন সমর্থকরা। অবশেষে রিয়ালকে ম্যাচে ফেরার সুযাগ করে দিলেন পিএসজিরই মিডফিল্ডার জিওভানি লো সেলসো। আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার নিজেদের বক্সের ভেতর টোনি ক্রোসকে ফাউল করলে রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে স্পটকিক থেকে লক্ষ্যভেদ করতে কোনও ভুল হয়নি রোনালদোর। এই লক্ষ্যভেদে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় গোলের ‘সেঞ্চুরি’ পূরণ করেন পর্তুগিজ তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নেইমারের ক্রস থেকে শট করেছিলেন এমবাপে। ফাঁকায় থেকে শট করলেও তা দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন কেইলর নাভাস। এরপরও বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করেছে ফরাসি ক্লাব। তবে ফুটবল দেবতার কলমে লেখা ছিল অন্যকিছু। তাই ৮৩ মিনিট পর্যন্ত ১-১ সমতায় থাকার পরও ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল।
৮৩ মিনিটে মার্কো আসেনসিওর ক্রস পিএসজির গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও ‘ক্লিয়ার’ করতে পারেননি। উল্টো সামনে থাকা রোনালদোর পায়ে লেগে বল জড়িয়ে যায় জালে। মিনিট তিনেক পর আবারও সেই আসেনসিওর ক্রস, এবার গোলদাতা মার্সেলো।
ঘরের মাঠের ৩-১ গোলের জয় নিয়ে ফিরতি লেগ খেলতে পিএসজির মাঠে যাবে রিয়াল। ফরাসি ক্লাবটির ঘুরে দাঁড়ানোর মতো সব অস্ত্রই আছে। তবে প্রতিযোগিতাটি যখন চ্যাম্পিয়নস লিগ, আর প্রতিপক্ষের নাম রিয়াল মাদ্রিদ, তখন হিসাবটা তাদের খুব কঠিন।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।