রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় এই সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক গত রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। সরকারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য জানান।
ওই কর্মকর্তা জানান, গত রবিবার দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়। তারা রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ার একদল স্বেচ্ছাসেবক বুধবার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যা মোকাবিলা করছে। সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমার, অন্যান্য দেশ এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে সরকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় আইওরা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাকার্তা যাবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা।’
প্রসঙ্গত, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া ১০ সদস্য বিশিষ্ট আসিয়ান জোটের সদস্য। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজ মিয়ানমারে ত্রাণ বিতরণ করে বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থান করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্সের সচিব মোহাম্মাদ খোরশেদ আলম বলেন, ‘ত্রাণবাহী জাহাজটি বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বন্দর ত্যাগ করবে। এ জাহাজের সঙ্গে আসা প্রায় ১৯০ স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে ২৫ জন বুধবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন।’ তিনি আরও জানান, ‘৪৩ জন স্বেচ্ছাসেবক এরই মধ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করে মালয়েশিয়া চলে গেছেন এবং বাকিরা জাহাজে করে ফেরত যাবেন।’
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এক হাজার ৪৭২ টন ত্রাণ নিয়ে মালয়েশীয় জাহাজ নটিক্যাল আলিয়া মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি জেটিতে এসে পৌঁছায়। এই ত্রাণ ট্রাকে করে কক্সবাজারে নিয়ে যাওয়া হবে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি মালয়েশিয়া থেকে রওনা হয়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলেন, ‘১৫ হাজার পরিবারের মধ্যে এই ত্রাণ বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৫০০ পরিবার টেকনাফে এবং ৯ হাজার ৫০০ পরিবার উখিয়ায় অবস্থান করছে।’ তিনি আরও জানান, ত্রাণ বিতরণের জন্য দু‘টি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি জেলা পর্যায়ে, আরেকটি উপজেলা পর্যায়ে। জেলা কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কক্সবাজার। এই কমিটি ১৬ সদস্যের। আর উপজেলা পর্যায়ের কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।