রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে রাখাইনে মিয়ানমারের কাছে ২৫০টি বাড়ি ঘর হস্তান্তর করেছে ভারত। এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সমঝোতা চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে আশা প্রকাশ করেছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত।
তবে বিবিসি’র এক বিশেষ প্রতিবেদনে, শুধুমাত্র হিন্দু রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়ি গুলো নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করা হলেও মিয়ানমারের সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দাবি, হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম রোহিঙ্গারাও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হবে।
রাখাইনে ভারতের সহযোগিতায় নির্মিত ২৫০টি বাড়িঘর মিয়ানমার সরকারের কাছে হস্তান্তর করেন দেশটিতে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সৌরভ কুমার। ভারত সরকারের রাখাইন উন্নয়ন প্রকল্প আরএসডিপি’র আওতায় এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে রাখাইনের উন্নয়নে আরো আড়াই কোটি ডলার ব্যয় করবে নয়াদিল্লি। ভারতের এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের সমঝোতা চুক্তির বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে জানান সৌরভ কুমার। মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, নতুন নির্মিত বাড়িগুলোতে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম রোহিঙ্গাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
উইন মিয়াত বলেন, ভারতের সহযোগীতায় নির্মিত বাড়িগুলোতে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম রোহিঙ্গা ও রাখাইনের মানুষও থাকতে পারবে। ভারতের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সমঝোতা প্রকল্পের আওতায় এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভারতের পাশাপাশি চীন, জাপানের মতো বন্ধুপ্রতীম দেশের সঙ্গেও পারষ্পরিক সহযোগিতা বাড়াটা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার ও ভারত সরকার ইতিবাচক কথা বললেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের খুব দ্রুত ফিরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। গণমাধ্যমটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে বাড়িঘর নির্মাণ করা হলেও এগুলোর একটিও মুসলিমদের জন্য নয়। বরং কেবল বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা হিন্দুদের জন্য বাড়িগুলো নির্মাণ করা হয়েছে।
এদিকে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সরকার এখনো দমন পীড়ন অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সুইজারল্যান্ডে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ UNHRC’র চলমান ৪১তম অধিবেশনে, রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি। একইসঙ্গে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার মতো অনুকূল পরিবেশ সেখানে এখনো সৃষ্টি হয়নি বলেও জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।