২০ এপ্রিল, ২০২৫ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২১ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

রোহিঙ্গা ফেরত নিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখায়নি মায়ানমার

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান চাইলেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে মায়ানমার যথেষ্ট আন্তরিক নয়।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) বাংলাদেশে সফররত মায়ানমার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে এমন মনোভাবই স্পষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র।

২০১৬ সালের অক্টোবর ‍মাসে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে অনুপ্রবেশ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানালে তার‍া আলোচনায় বসতে রাজি হয়নি। পরে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়ে এ সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করতে বিশেষ দূত পাঠায় মায়ানমার।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মায়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিয়াও তিনের নেতৃত্বে দেশটির প্রতিনিধি দল ঢাকা পৌঁছ‍ায়। বুধবার দুপুরে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে তিন দিনের সফরের কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

এদিন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন- পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করেন মায়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিয়াও তিন।

এদিকে, কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষে কোনো পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেনি। অতিথি ভবন পদ্মার বাইরে সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কারও দেখা পাননি উপস্থিত সাংবাদিকরা। এমনকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক। বৈঠক থেকে বের হওয়ার পথে পররাষ্ট্র মন্ত্রীও একই কথা জানান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মতো মায়ানমারও রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায় বলে বৈঠকে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ সমস্যা সমাধানে মায়ানমারকে সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে হয়তো মায়ানমার এ সমস্যার সমাধান চাইছে। কিন্তু তাদের আচরণে সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কারণ তারা এখনো রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিয়ে নানা প্রকার ব্যাখা দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে এদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়েও মায়ানমারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পরিপ্রেক্ষিতেই নিজেদের নাগরিকদের ফেরত নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে মায়ানমার। কিভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে ধারণা দেয়নি মায়ানমার।

তিন দিনের সফর শেষে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) তিন সদস্যের মায়ানমার প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ছাড়বে। এ সফরের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ফল না আসলে আন্তর্জাতিকভাবে দেশটির ওপর চাপ বাড়ানোর পক্ষে কাজ করতে হবে বলে মতামত দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক দশকে কয়েকবার বাংলাদেশের সঙ্গে মায়ানমার আলোচনা করেছে। এ সমস্যা সমাধানে তারা নানা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। তবে তারা কোনোবারই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়নি। তাই দেশটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবেও চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯ জানুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের বিশেষ বৈঠক ডেকেছে মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ওই বৈঠকে অংশ নেবেন।

সম্প্রতি আসিয়ান রাষ্ট্রগুলোও রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে। মায়ানমার ওই সংস্থার অন্যতম সদস্য। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী। আসিয়ানের আরেক সদস্য দেশ মালয়েশিয়াও রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে। এছাড়া, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন পার্লামেন্ট গত ডিসেম্বরে রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করার জন্য একটি সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে।

-বাংলা নিউজ

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।