কক্সবাজার সময় ডেস্কঃ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে মিয়ানমারকে একটি চুক্তির খসড়া দিয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে মিয়ানমারের মন্ত্রী টিন্ট সোয়ের বৈঠকের সময় এ চুক্তির খসড়া হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত রোহিঙ্গা এসেছে তাদের সবাইকে ফেরত পাঠাতে চায় সরকার।
২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে গত অক্টোবর থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৯০ হাজার এবং আশির দশক থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরও প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। অর্থাৎ মোট ৯ লাখ রোহিঙ্গা আছে বাংলাদেশে।
আমাদের চুক্তির মধ্যে এ বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এ চুক্তির ভিত্তি হচ্ছে ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে সম্পাদিত চুক্তি কিন্তু এর প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে।
চুক্তির উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলি হচ্ছে, আগস্ট ২০১৭-এর আগে আগত রোহিঙ্গাদের ওপর বাংলাদেশ যে জরিপ করেছে সেই তথ্য মিয়ানমারকে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এরপরে আগত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কোনও তথ্য থাকলে সেটিও মিয়ানমারকে জানানো হবে।
তথ্য দেওয়ার পর দুইপক্ষ একসঙ্গে মিয়ানমারে তাদের স্থায়ী নিবাস খুঁজে বের করবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওই চুক্তিতে।
নয়াপাড়া ও কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থিত সব নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের তথ্যও দেবে বাংলাদেশ। এ তথ্য পাওয়ার এক মাসের মধ্যে মিয়ানমার তাদের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এছাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি ফেরত যাওয়ার এক মাসের মধ্যে সব নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ফেরত যাওয়ার প্রস্তাব করা হয় চুক্তিতে।
এ চুক্তি উভয়পক্ষ মেনে নিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার গাইডলাইন নির্ধারণ করা হবে।
চুক্তির খসড়া অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অধিবাসী হিসাবে প্রমাণের জন্য তাদের স্থায়ী ঠিকানা, গৃহস্থালী সামগ্রীর তালিকা,ভূমি বা ব্যবসায়ের মালিকানা,স্কুল নিবন্ধন বা অন্য যে কোনও মিয়ানমারে থাকার প্রমাণাদি দেখাতে হবে।
এই প্রমাণ দাখিলের ৪৫ দিনের মধ্যে মিয়ানমার ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে চুক্তিতে এবং প্রথম অনিবন্ধিত ব্যাচ মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার তিন থেকে চার মাসের মধ্যে সবাইকে ফেরত নেওয়া হবে।
এছাড়া কোনও রোহিঙ্গাকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সমস্যা হলে যৌথ ভেরিফিকেশন হবে বলে উল্লেখ আছে খসড়া চুক্তিতে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।