২১ এপ্রিল, ২০২৫ | ৮ বৈশাখ, ১৪৩২ | ২২ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  টেকনাফে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ডাকাতদলের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ১   ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবায় বিএনপির ৩০ চিকিৎসক: দেয়া হলো টিউবওয়েল ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বাংলাদেশে এই মানুষটিকে চেনেন না এমন মানুষ বোধহয় খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি শুধুই একজন চিকিৎসক নন, একাধারে সার্জারী ও ইউরোলজি বিষয়ে এফসিপিএস ডিগ্রীধারি। এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টির ডিন ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) টানা দুইবার মহাসচিব। আর এখন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) মহাসচিব ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।

আর এই বিখ্যাত মানুষটিই আজ পাঁচদিন ধরে সব আভিজাত্য ভুলে, রাজপথের সবকিছু ছেড়ে পড়ে আছেন কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী এলাকার অজপাড়া গাঁ পান বাজারে! তিনি ওখানে পান সদাই করতে আসেননি। আসেননি কোন রাজনৈতিক কোন সভা-সমাবেশে। ওইখানে তিনি ও তাঁর নেতৃত্বে ৫০ জনের একটি মেডিকেল টিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিপন্ন হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ডা. জাহিদ নিজের হাতে রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষদের হাতে তুলে দিচ্ছেন সুস্থ থাকার উপকরণ ওষুধ।

শুধু ডা. এজেএম জাহিদ হোসেনই নন, ফরেনসিক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ডা. শামীমুর রহমান, ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, ডা. শামসুজ্জামান রানার মতো প্রথিতযষা চিকিৎসকরাও টানা পাঁচদিন ধরে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবায় তাঁদের শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উদ্যোগে ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) পরিচালনায় এই মেডিকেল ক্যাম্পটিতে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে বিনা পারিশ্রমিকে চিকিৎসা ও বিনামূল্যে অষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি, খাবার স্যালাইন, এন্টিসেফটিক সাবান এবং ৪৫৮ ক্যালোরি সমৃদ্ধ বিস্কুট বিতরণ করা হচ্ছে।

ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা এখানে ছুটে এসেছি। টানা ৫ দিন ধরে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীন চিিিকৎসা দেয়া হচ্ছে। আরও একদিন এই মেডিকেল ক্যাম্প চলবে’

তিনি মনে করেন, তাদের এই মেডিকেল ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের চাহিদা পূরণ হবে না। এটি আমাদের পক্ষ থেকে একটি চেষ্টা মাত্র। সবাই মিলে প্রচেষ্টা নিলে রোহিঙ্গাদের এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।

তাঁর মতে, মিলিত ভাবে কোন প্রচেষ্টা হচ্ছে না। বরং বিএনপিকে ত্রাণ বিতরণে বাধা দেয়া হচ্ছে।

বিএনপির এই মেডিকেল টিমটির প্রধান হিসেবে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এখন পানি দরকার, মল-মূত্র ত্যাগের ব্যবস্থা দরকার। এগুলোর কোন ব্যবস্থায় এখানে নেই। এসবের ব্যবস্থা না হলে কয়েকদিনের মধ্যেই এখানে স্বাস্থ্য বিপর্যয় দেখা দেবে।’

রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা ও বিপর্যয় এড়াতে এখানে ছোট ছোট মেডিকেল ক্যাম্প করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেনাবাহিনী ও দেশের মানুষ একসাথে কাজ করলে রোহিঙ্গা সংকটে দেশের উপর চাপ কমবে।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী জানান, মেডিকেল ক্যাম্পের প্রথম দিনে ৫ হাজার ২৩২ জন, দ্বিতীয়দিন ৫ হাজার, তৃতীয়দিন ৫ হাজার ৫৫০ জন ও চতুর্থদিন ৬ হাজার রোহিঙ্গাকে এই ক্যাম্প থেকে চিকিৎসা ও পথ্য দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, খাবার পানির সংকট নিরসনে বিএনপির পক্ষ থেকে ১৬টি টিউবওয়েল ও ৪০টি স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা টিউবওয়েল ও স্যানিটারি ল্যাট্রিন বসানোর কাজ করছেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের অন্যতম সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানান, বিএনপির এই মেডিকেল টিমে ৩০ জন ডাক্তার কাজ করছেন। এছাড়াও স্থানীয় ও জেলা পর্যায়ের বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতারাও দায়িত্ব পালন করছেন।

মেডিকেল টিম প্রধান ডা. জাহিদ হোসেন জানান, ৫ দিনে মেডিকেল ক্যাম্পে হাতে ও গলায় গুলিবিদ্ধ অন্তত ৮ জন রোগী পেয়েছেন, যাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, শুধু ৬ দিনেই মেডিকেল ক্যাম্প শেষ হয়ে যাচ্ছে না। এটি চলমান থাকবে। ৬ দিন পর তাঁরা চলে গেলেও অন্য আরেকটি গ্রুপ সেই কার্যক্রম শুরু করবে।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।