বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর বনাঞ্চল থেকে গাছ কেটে ইট ভাটার জ্বালানি হিসেবে সরবরাহ শুরু করেছে স্থানীয় লাকড়ী ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ইট ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হওয়ার সাথে সাথে জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের জন্য লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ১৫টি ইট ভাটায় ব্যাপক হারে কাঠ পোড়ানো শুরু হয়েছে।
প্রতিদিন আজিজনগর ইউনিয়নে, বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে ১’শ গাড়ি করে ফাইতংয়ের ইটভাটাগুলোতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে কাঠ।
ইট ভাটার চুল্লি গুলোতে সাধারণত গামারি, গর্জন, আকাশমনি একাশি, রেইনট্রি ও বিভিন্ন গাছের কাঠ পোড়ানো হচ্ছে । এসব কাঠের অধিকাংশ ১০০ থেকে ১২০ টাকা মণ দরে কিনছেন ইট ভাটার মালিকরা।
জানা গেছে, আজিজনগরের কাঠ এখন শুধু ফাইতং সীমাবদ্ধ নেই কক্সবাজারের চকরিয়া এবং চট্রগ্রামের লোহাগাড়ার বিভিন্ন ইট ভাটায় পাঠানো হচ্ছে এসব কাঠ।
এ ব্যাপারে আজিজনগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক একরামুল হক বাবুল বলেন, কাঠ-লাকড়ী পাচার বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আগামী কয়েক বছরে আজিজনগর ও ফাইতং হাজার হাজার একর বনাঞ্চল বৃক্ষ শূন্য হয়ে পড়বে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ইটভাটার মিস্ত্রি জানায়, ১২ লাইন প্রতি লাইনে ৫ হাজার করে মোট ৬০ হাজার ইট পোড়াতে দৈনিক ৬০০ হতে ৮০০ মন লাকড়ীর প্রয়োজন হয়। এই হিসাবে প্রতি মৌসুমে ১৮২ দিনে প্রতিটি ইট ভাটায় কমপক্ষে ১ লক্ষ ২৭ হাজার ৪’শ মন লাকড়ীর প্রয়োজন হয়।
এ ব্যাপারে লামা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের জনবল সল্পতার কারণে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করতে হয়। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে অনেক সময় আমরা চাইলেও কিছু করতে পারিনা। তবে অবৈধভাবে কাঠ পাচারের সুনির্দিষ্ট তথ্য নজরে আনলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে স্থানীয়রা মনে করছে, ইট ভাটায় কাঠের ব্যবহার দ্রুত রোধ করা না হলে সবুজে ঘেরা বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা উপজেলার প্রাকিৃতিক সৌন্দর্য্য অনেকাংশেই ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।