২৪ নভেম্বর, ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ   ●  ধরে নিয়ে যাওয়া ২০ বাংলাদেশী  জেলেকে ফেরত দিল আরাকান আর্মি   ●  মেরিন ড্রাইভে ইয়াবাসহ নারী আটক   ●  সড়ক দখল করে নৈরাজ্য সৃষ্টি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারে আ.লীগের ৯১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

শহরের যমুনা গেষ্ট হাউসে তরুনী হত্যার ঘটনায় বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য

কক্সবাজার সদর থানার পেছনে যমুনা গেষ্ট হাউজের ১১৪ নং কক্ষে তরুনী হত্যার ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার না হলেও বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। উদঘাটন হচ্ছে ঘটনার ক্লো। গত ১৮ মার্চ বুধবার যমুনা গেষ্ট হাউস ( সাবেক বাহাদুর বোডিং) থেকে এক তরুনীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আবদুল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা যুবকই এ ঘটনার মূল নায়ক বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত তরুণীর নাম ফাতেমা বেগম। স্বামীকে নিয়ে থাকতেন শহরতলির বৈদ্যঘোনার কালুর নামের এক ব্যক্তির ভাড়া বাসায়। নিহত তরুণীর আদিনিবাস মিয়ানমারে। বাংলাদেশে আসার পর টেকনাফ রোহিঙ্গা টালেই ছিল তার বসবাস। গত ৪ বছর পূর্বে শারীরিক প্রতিবন্দি মঙ্গলইল্যা নামক ব্যক্তিকে বিয়ে করে। এটা অনেকেই জানেন এবং তাকে ছিনেনও শহরের একাধিক ভ্রাম্যমান নারী। শহরের লালদীঘিরপাড়, আদালতপাড়া ও আশপাশ এলাকায় ছিল মূলত এই তরুণীর বিচরণ। জৈবিক ব্যবসায় জড়িত ছিল বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার কয়েকজন সহকর্মী জানান।
একটি সুত্রে জানান, ওই তরুণী হোটেল রেজিষ্ট্রারে তার নাম খুরশিদা বেগম (২৬) ও ঠিকানা দেওয়া হয় উখিয়ার সোনাপাড়া এলাকার নিদানিয়া গ্রামের জাফর আলমের স্ত্রী হিসেবে। তবে শুরু থেকেই পুলিশ ধারনা করে আসছে , নিহত তরুনীর পরিচয় সঠিক নয়। তার পরিচয় ও তথ্যের জন্য স্থানীয় একটি দৈনিকে ২০ মার্চ “এই নারী সম্পর্কে তথ্য চাই” শিরোনামে বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করেছে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত ) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী। এর পর থেকেই বেরিয়ে আসছে নিহতের পরিচয়। তরুনীর নাম ফাতেমা। তার স্বামী একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি। নাম মঙ্গলইল্যা। হত্যার কান্ডের ঘটনার খবর পেয়েই স্ত্রীর জন্য পাগল প্র্য়া এই প্রতিবন্দিকে শহরে উঠতে দিচ্ছে না ওই বার্মাইয়া আবদুল্লাহ। পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাকে সরে দাড়ানোর হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে ঘটনার পর থেকে। এ ধরনের খবর লালদীঘিরপাড়সহ সর্বত্রই ছড়িয়ে পড়েছে। এই আবদুল্লাহকে নিয়েই এখন রহস্যের দানা বেধেছে। কেনই বা নিহত তরুণীর স্বামীকে পুলিশী ভয় দেখানো হচ্ছে। স্ত্রীর দাবী না করার জন্যও কেন চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আসলে কি এই বার্মাইয়া আবদুল্লাহই এই নির্মম হত্যার কান্ডের মূল নায়ক। নাকি ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য বিশেষ মহলের মিশন বাস্তবায়নের পথ বেঁেচ নিয়েছে। আবদুল্লাই নিহত তরুণীকে ওই হোটেলে সরবরাহ দিয়েছিল এবং ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। এ ধরনের হাজারো প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কে এই আবদুল্লা। তার পরিচয়সহ কর্মকান্ড সম্পর্কে তথ্য উদঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে গা শিহরিয়ে উঠার মতো কাহিনী। নাম আবদুল্লাহ। রোহিঙ্গা বংশোদ্ভোত হলেও নিজেকে ( শহরের কালুর দোকান চৌমুহনী) স্থানীয় পরিচয় দিচ্ছে। তার নিজস্ব কোন ঠিকানা নেই। ঠিকানাবিহীন এই অপরাধ জগতের নায়ক আবদুল্লাহ শহরের বিভিন্ন ভবঘুরে শিশু ও নারী পুরুষ সমন্বয়ে একটি বিশাল সিন্ডিকেট গঠন করে ভয়ংকর সব অপরাধ মূলক কাজ সংগঠিত করে যাচ্ছে। তার রয়েছে দুই জন রোহিঙ্গা স্ত্রী। তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা, ইয়াবা, মাদক , ছিনতাইসহ সংগঠিত অপরাধের নের্তৃত্ব দিয়ে আসছে এই বার্মাইয়া আবদুল্লাহ। এসব অপরাধে বিভিন্ন সময় নিজেকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার সোর্স ও বিভিন্ন এসআই ও খোদ ওসির নামও ভাঙ্গাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আবদুল্লাহ নামের বখে যাওয়া এই যুবকটি ছিনতাইসহ প্রতারণা মূলক অহরহ ঘটনা শহরের লালদীঘির পাড় ও হোটেল মোটেল জোনে সংগঠিত করেছে । তার গ্র“পে রয়েছে ১০/১৫ জন সদস্য। তাদের হাতে ধারালো ছুরি, চাপাতি ও আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
ব্যবসার লাইসেন্সবিহীন সাবেক বাহাদুর বোডিংকে যমুনা গেষ্ট হাউস নাম দিয়ে হোটেলে ব্যবসা চলে আসছে। ইতোপূর্বেও এই বাহাদুর বোডিং এ একাধিক নারী হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ওই সব হত্যা কান্ড গুলোও এক প্রকার চলে গেছে হিমাগারে। যমুনা গেষ্ট হাউসে তরুণী হত্যার ঘটনায় সদর থানার এস আই জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে জাফর আলমকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। নাম পরিচয় না পাওয়ায় পুলিশ গত বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। পৌর কর্তৃপক্ষ বেসরকারি লাশ দাফনকারী প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমানে ইত্তেহাদের কাছে হস্তান্তর করলে লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই কামরুজ্জামান জানান, পুলিশ জাফর আলমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলার বাদি ও সদর থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম জানান, এই তরুণীকে গলাটিপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে।
জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুলতান আহমদ সিরাজী জানান, মহিলার ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত হত্যাকান্ডের সঠিক তথ্য বলা যাচ্ছে না।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।