১৭ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ | ১৮ শাওয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  সিবিআইইউ’তে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন হয়েছে।   ●  গভীর রাতে পাহাড়ের মাটিভর্তি একটি ড্রাম ট্রাক( ডাম্পার) জব্দ করেছে কক্সবাজার বনবিভাগ   ●  অস্ত্র উদ্ধার ও ওয়ারেন্ট তামিলে জেলার শ্রেষ্ঠ হলেন এসআই খোকন কান্তি রুদ্র   ●  উখিয়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টায় হামলা   ●  কৃষকদল নেতা পরিচয়ে জমি দখল গুলি বর্ষণ আটক ১   ●  উখিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল পরিদর্শন   ●  প্রথম ধাপে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে রাজি মিয়ানমার   ●  পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি’১৮ ব্যাচের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন   ●  উখিয়া সমাজসেবা কর্মচারীর নামে বিধবা ভাতা’র টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ   ●  ‘পটভূমি পরিবর্তনের জন্য সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য’ – সরওয়ার জাহান চৌধুরী

শারদীয় দুর্গোৎসব : কক্সবাজারে শেষ তুলিতে সাজছে ২৯৩ প্রতিমা

সায়ীদ আলমগীর,(কক্সবাজার): ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। সে হিসেবে কড়া নাড়ছে সনাতনী সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষ্যে বেশির ভাগ মন্দিরে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন প্রতিমাগুলো রং করার কাজে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা। তুলির আঁচড়ে আঁচড়ে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হচ্ছে দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষী ও মহিষাসুরের প্রতিমা। জেলায় এবার মোট ২৯৩টি মন্ডবে চলবে দূর্গা পূজা। এর মধ্যে প্রতিমা ১৩৪টি ও ঘট পূজা হবে ১৫৯টি। পূজার্থীদের নিয়ন্ত্রণে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে সনাতণীদের এ উৎসব। নিরাপত্তার স্বার্থে পূঁজায় পটকা-বাজি ফোটানো এবং রং ছিটানো যাবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।
সনাতন ধর্মালম্বীরা জানান, গত মঙ্গলবার শুভ মহালয়া গেছে। মহালয়ার সাতদিন পর আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটবে। তবে মূলত মঙ্গলবার থেকেই কানে অনুরণিত হয়েছে দেবী দুর্গার আগমনধ্বনি। মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এদিন থেকে দেবীপক্ষের শুরু। দেবীর আরাধনা সূচিত হয়েছে মহালয়া উদযাপনের মাধ্যমে। মূলত দুর্গাপূজার ক্ষণ গণনাও শুরু এদিন থেকেই।
হিন্দু ধর্মমতে, মহালয়ায় দেব-দেবীকুল দুর্গাপূজার জন্য নিজেদের জাগ্রত করেন। এদিন অতি প্রত্যুষে মন্দিরে মন্দিরে চন্ডীপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে আহবান করা হয়। ভক্তরা গঙ্গাতীরে তাদের মৃত আত্মীয়-পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার সদগতি প্রার্থনা করে তর্পণ করেন।
সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার নৌকায় চড়ে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। যার ফল শস্যবৃদ্ধি। দেবী স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন (গমন) ঘোটকে চড়ে। যার ফল হচ্ছে শস্যহানি।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রণজিত দাশ ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, এবার জেলায় মোট ২৯৩টি মন্ডবে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে প্রতিমা পূজা ১৩৪টি ও ঘট পূজা হবে ১৫৯টি। এছাড়া কক্সবাজার পৌরসভায় ১১টি প্রতিমা পূজা ও ৬টি ঘট পূজা, সদর উপজেলায় প্রতিমা পূজা ৩২টি ও ঘট পূজা ৩২টি, রামু উপজেলায় ১৯টি প্রতিমা পূজা ও ১০টি ঘট পূজা, চকরিয়া উপজেলায় ৪৪টি প্রতিমা পূজা ৩৭টি ঘট পূজা, পেকুয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ৭টি, মহেশখালী উপজেলায় ১টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ৩১টি, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১২টি প্রতিমা পূজা ও ঘট পূজা ২৮টি, টেকনাফ উপজেলায় ৫টি প্রতিমা পূজা, ঘট পূজার মন্ডপ নেই ও উখিয়া উপজেলায় ৪টি প্রতিমা পূজা ও ৮টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে ঘট পূজা।
সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাপ্পী শর্মা জানান, এবার পূজা মন্ডপের খরচ বেশি। তাই বরাদ্দ বাড়াতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। আশা করছি এবার সরকারী বরাদ্দ বাড়বে।
এদিকে সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দূর্গোৎসব সম্পন্ন করতে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনোয়ারুল নাসের’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আর শারদীয় দূর্গাপুঁজা বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব। এখানে সব ধর্মের মানুষের বন্ধন এতই মধুর যে অন্যকোন দেশে এটি দেখা যায় না।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, পূঁজাকালীন আযানের সময় সকল মন্ডপের মাইক বা সাউন্ড বন্ধ থাকবে। আর ঝুঁকিপূর্ণ মন্ডপ গুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে। তবে নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে এবারে বিসর্জনের সময়ে সাগরে মহিলা ও শিশুদের সাগরে নামতে দেয়া হবে না।
সহকারী কমিশানার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট একেএম লুৎফুর রহমানের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, র‌্যাব-৭ এর কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার মেজর রুহুল আমিন, ট্যুরিষ্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়–য়া, সহকারি পুলিশ সুপার (মহেশখালী সার্কেল) রতন কুমার দাশ গুপ্ত, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এড. রনজিত দাশ, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, সহ সভাপতি রতন দাশ, কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার সাফায়েত হোসেন, সদর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ, শহর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. চন্দন শর্মা, সাধারণ সম্পাদক স্বপন গুহ।
উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক বিনয় কুমার বড়–য়া, কমিউনিটি পুলিশের ওসি একরাম, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জিএম নুর মোহাম্মদ মজুমদারসহ বিভিন্ন উপজেলার পূজা উপদযান পরিষদের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক।
দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সকল পেশার মানুষের সহযোগিতার লক্ষ্যে ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় জেলা পূঁজা উদযাপন পরিষদ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা আহবান করা হয়েছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা আরো জানান, এ বছরের দুর্গাপূজার নির্ঘন্ট অনুযায়ী ২৬ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে দশভুজা দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। অবশ্য আগের দিন ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দেবীর আগমনধ্বনি অনুরণিত হতে শুরু করবে। ২৭ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী, ২৮ সেপ্টেম্বর মহা অষ্টমী ও কুমারী পূজা এবং ২৯ সেপ্টেম্বর মহানবমী শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের দুর্গোৎসব।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।