২৭ নভেম্বর, ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬


শিরোনাম
  ●  মহেশখালীতে তুলে নিয়ে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর হামলা   ●  ব্যাটারী চালিত ই-বাইক মালিক সমিতি মরিচ্যা ও মৌলভী পাড়া কমিটি অনুমোদন   ●  টেকনাফ সমুদ্রে গোসলে নেমে মাদ্রাসার এক ছাত্রের মৃত্যু দুই ছাত্র নিখোঁজ।   ●  মাকে হত্যার পর থানায় ছেলের আত্মসমর্পণ।   ●  মারমেইড বীচ রিসোর্টে বালিয়াড়ি দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান   ●  যারা খেলাধূলা করছে, তারা বিএনপির শক্তিকে অনুধাবন করতে পারছে না   ●  উখিয়ার নতুন ইউএনও কামরুল হাসান চৌধুরী   ●  উখিয়ায় যৌথবাহিনীর অভিযানে শক্তিশালী গ্রেনেড উদ্ধার   ●  ছয় কোটি তরুণের দেয়াল লিখন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান   ●  চকরিয়ায় ২টি ডাম্পার ট্রাক ও এক্সকেভেটর জব্দ

‘সচ্ছল’ গ্রাহকদের জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ বিল

বিদ্যুতের শিল্প, বাণিজ্যিক ও আবাসিক গ্রাহকদের আলাদা রেটে বিল দিতে হয়। এরমধ্যে আবাসিক খাতে বিল পরিশোধে বিভিন্ন ধাপ আছে। যারা কম বিদ্যুৎ পোড়ান তাদের প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিল কম। অর্থাৎ সরকার তাদের ভর্তুকি দেয়। আবার যারা বেশি বিদ্যুৎ খরচ করেন তাদের প্রতি ইউনিট বিল বেশি দিতে হয়। তারা ভর্তুকি পান না। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তাদের আয় আরও বাড়ানোর জন্য এবার নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি)।

প্রস্তাবে পিডিবি বলেছে, সচ্ছল গ্রাহকদের আরও বেশি বিল দিতে হবে। যারা বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিক, বহুতল ভবনে বাস করেন, নির্দিষ্ট পরিকল্পিত আবাসিক এলাকায় বাস করেন, যারা ৩৩ কেভি বা ১১ কেভি থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তাদের জন্য বিদ্যুতের ‘বিলিং রেট’ আরও বাড়ানো হবে। সূত্র বলছে, সারাদেশে সব সচ্ছল গ্রাহকের ক্ষেত্রে এই নতুন বিল প্রযোজ্য হবে। পিডিবি মনে করছে, এই রেট কার্যকর হলে এ খাতে রাজস্ব আদায় অনেকটা বাড়বে। জানতে চাইলে হাতিরপুলে একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত করিম রাঙ্গা বলেন, এমনিতেই বহুতল ভবনে আবাসিক গ্রাহকদের বাড়তি বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। কারণ ১১ কেভি থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ নিতে হয়। এরপর আবারও দাম বাড়ালে সেটা মেনে নেওয়া হবে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ‘সচ্ছল আবাসিক গ্রাহকের’ জন্য বিদ্যুতের দামে বিদ্যমান যে স্ল্যাব বা ধাপ প্রথা রয়েছে সেটা থাকবে না। সচ্ছল আবাসিক গ্রাহক বলতে বহুতল আবাসিক ভবন বা গুচ্ছ আবাসন প্রকল্পগুলোর ফ্ল্যাট মালিকদের বোঝানো হয়েছে। পিডিবির প্রস্তাব মতে এই শ্রেণির গ্রাহকদের প্রতি ইউনিট (কিলোওয়াট/ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম ৭ টাকা ৮০ পয়সা দিতে হবে। তাদের প্রস্তাব বিবেচনায় নিলে উলি্লখিত ‘সচ্ছল’ গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল এক লাফে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ বেড়ে যাবে। যা গ্রাহকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে প্রিপেইড গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুতের দামে ২ শতাংশ ছাড়ের প্রস্তাবও করেছে সংস্থাটি। গত মাসে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দেয় পিডিবিসহ অন্যান্য সংস্থা। প্রস্তাবটি বর্তমানে যাচাই-বাছাই করছে বিইআরসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) কাওসার আমির আলী বলেন, বহুতল আবাসিক ভবন ও সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত যৌথ বাড়ি (গুচ্ছ আবাসন প্রকল্প) বলতে তারা বুঝিয়েছেন যেসব ভবনে বা নির্দিষ্ট আবাসিক এলাকায় (যেমন রাজধানীর জাপান গার্ডেন সিটি) উচ্চ চাপে (৩৩ কেভি) ও মধ্যম চাপে (১১ কেভি) বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। এসব ভবনের বসিন্দারা দেশের অন্য নাগরিকদের তুলনায় সচ্ছল। তাই তাদের জন্য ধাপভিত্তিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুবিধা তুলে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট ট্যারিফ ধার্যের সুপারিশ করা হয়েছে।

পিডিবির প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আবাসিক খাতে এখন বিদ্যুতের দাম ১ থেকে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৩৩ পয়সা, ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৮০ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ৫ টাকা ১৪ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ৫ টাকা ৩৬ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট ৫ টাকা ৬৩ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট ৫ টাকা ৮০ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি হলে ৯ টাকা ৯৮ পয়সা। যে গ্রাহক যে পরিমাণে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তিনি সেই হারে বিল প্রদান করেন। অর্থাৎ কোনো গ্রাহক ২২০ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে তার প্রথম ৭৫ ইউনিটের দর নির্ধারণ করা হয় ইউনিট ৩ টাকা ৮০ পয়সা হিসাবে পরবর্তী ১২৫ ইউনিট (৭৬ থেকে ২০০) দর নির্ধারণ করা হয় ৫ টাকা ১৪ পয়সা এবং বাকি ২০ ইউনিটের দাম ৫ টাকা ৩৬ পয়সা হিসাবে। অর্থাৎ ২২০ ইউনিট ব্যবহারকারী গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম পড়ে কোনো রকম কর এবং সার্ভিস চার্জ ছাড়া এক হাজার ৩৪ টাকা ৭০ পয়সা। এই গ্রাহক যদি পিডিবির মতে সামর্থ্যবান বলে বিবেচিত হন তবে নতুন প্রস্তাবনা অনুসারে তার বিল আসবে এক হাজার ৭১৬ টাকা (কর এবং সার্ভিস চার্জ ছাড়া)। এতে ওই গ্রাহকের মাসিক বিদ্যুৎ খরচ প্রায় ৬৬ শতাংশ বেড়ে যাবে।

খাত-সংশ্লিষ্টদের মতে, এতে গ্রাহকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেবে। কয়েক বছর আগে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় (বারিধারা-বনানী-গুলশান) বেশি দামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা করা হয়। এজন্য জরিপও চালায় সংস্থাটি। কিন্তু বেশি দামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ কিনতে গ্রাহকরা রাজি হননি। এরপর একবার এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অভিজাত এলাকায় স্ল্যাব প্রথা বাতিল করেছিল। এতে হঠাৎ করেই গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো। পরে কমিশন সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে। নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলেও বিতর্ক দেখা দেবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।

কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম নতুন প্রস্তাবনার সমালোচনা করে বলেন, ফ্ল্যাটে বাস করলেই কাউকে বেশি দামে বিদ্যুৎ সেবা পেতে হবে তা যৌক্তিক হবে না। সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠীর বিদ্যুতের দাম বেশি হতে পারে, তবে তা হতে হবে নীতিমালার আলোকে। স্ল্যাব প্রথায় একজন গ্রাহক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে তার মাসিক বিদ্যুৎ খরচ কমাতে পারে। এটা তুলে দিলে সেই গ্রাহকের ইচ্ছার ওপর হস্তক্ষেপ করা হবে।

তবে পিডিবির মতে, ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ‘ভর্তুকি মূল্যে’ ব্যবহার করে থাকেন। কারণ, এই গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদে ইউনিটপ্রতি দাম ৩ টাকা ৩৩ পয়সা থেকে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা পড়ে। যা বিদ্যুতের সরবরাহ মূল্যের চেয়ে কম। বর্তমানে বিদ্যুতের খুচরা পর্যায়ে সরবরাহ মূল্য (উৎপাদন ব্যয় এবং সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যয় হিসাব করে) ছয় টাকা ৯০ পয়সা। তবে ৪০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকরা বিদ্যুতের সরবরাহ ব্যয়ের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনেন। ৪০০ ইউনিটের ওপরের ব্যবহারকারীদের ইউনিটপ্রতি ব্যয় গড়ে ৯ টাকার ওপরে।

পিডিবির আবেদনে বলা হয়েছে, বড় শহরগুলোয় কয়েক বছরে অনেক বহুতল আবাসিক বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। আরও বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও বিল প্রদানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। এই আবাসিক গ্রাহকরা সচ্ছল ও বিদ্যুতের প্রকৃত সরবরাহ ব্যয় পরিশোধে সক্ষম। পাশের দেশের বড় শহরে এ ধরনের গ্রাহকদের আলাদা ট্যারিফ শ্রেণি বিবেচনা করা হয়।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে কাওসার আমির আলী বলেন, যেসব আবাসিক ভবনে বহু ফ্ল্যাট (২০/৩০ এর ওপরে) রয়েছে এসব ভবন সাধারণত ১১ কেভি লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়। কিন্তু ফ্ল্যাট মালিকরা তাদের ব্যবহার অনুসারে আবাসিক ট্যারিফ কাঠামোর ধাপভিত্তিক পদ্ধতি অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিল দেন। কিন্তু ট্যারিফ চার্ট অনুযায়ী ১১ কেভি লাইন ব্যবহারকারীদের একটি পৃথক শ্রেণি রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ বিল করতে গিয়ে বিতরণ কোম্পানিগুলো সমস্যায় পড়ে। আবার বড় পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা যেমন মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটিতে ৩৩ কেভিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ট্যারিফ চার্টে ৩৩ কেভির জন্য পৃথক শ্রেণি থাকলেও এর বাসিন্দারা সাধারণ আবাসিক গ্রাহকদের মতো বিল দেন। তার মতে, এসব ভবনের বাসিন্দারা সাধারণ মানুষের চেয়ে সচ্ছল। তাই তাদের জন্য ভর্তুকি মূল্যের শ্রেণি কাঠামো তুলে দিয়ে সরবরাহ মূল্যের চেয়ে বেশি দাম ধরে একটি নতুন কাঠামো প্রস্তাব করা হয়েছে।

পিডিবির প্রস্তাবটি আরও ব্যাখ্যা করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো বহুতল ভবন ও গুচ্ছ আবাসন প্রকল্পগুলোকে একক গ্রাহক ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। কিন্তু বাসিন্দারা নিজেরা সম্মিলিতভাবে বা সমিতির মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ বিল আদায়ের বিষয়টি সমন্বয় করবেন। ফলে বিতরণ কোম্পানির জন্য বিল আদায়ে সমস্যা থাকবে না। আবার বাসিন্দাদের মধ্যেও বৈষম্য হবে না। সবার জন্য প্রতি ইউনিটের মূল্য এক হবে।

এ বিষয়ে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালিদ মাহমুদ বলেন, সচ্ছল গ্রাহকদের প্রকৃত দামেই বিদ্যুৎ কিনতে হবে। তাদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা ঠিক নয়। ভর্তুকি সুবিধা পাওয়া উচিত প্রান্তিক গ্রাহক ও কৃষি খাতের গ্রাহকদের, যা তারা দিয়ে আসছেন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনার উদ্যোগ রয়েছে সরকারের। এ জন্য দুটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে সরকার। একটি হলো সাশ্রয়ী জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো, অন্যটি গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে লোকসান কমানো। সাশ্রয়ী জ্বালানি বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের বড় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগছে। এগুলো উৎপাদনে আসতে আরও ৫ থেকে ৭ বছর লাগবে। এ সময়ে খুচরা মূল্য আর উৎপাদন খরচের মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে ভর্তুকি কমিয়ে আনার পথে হাঁটছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিদ্যুৎ সংস্থা ও কোম্পানিগুলো।

সব ধরনের গ্রাহকের দাম বাড়বে: পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে সাড়ে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। এরমধ্যে আবাসিক গ্রাহকদের ইউনিটপ্রতি ৯ থেকে ১৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া কৃষিতে ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্রশিল্পে সাড়ে আট, অনাবাসিকে ১৪, বাণিজ্যিকে সাত এবং শিল্পে সাড়ে আট থেকে নয় শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পিডিবি। পাশাপাশি সব ধরনের গ্রাহকদের সার্ভিস, ডিমান্ড চার্জ ও জামানত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য বিতরণ কোম্পানিও ১২ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে। পাইকারি পর্যায়ে প্রায় ১৫ শতাংশ (৭২ পয়সা) বৃদ্ধির আবেদন করেছে পিডিবি। এসব প্রস্তাব যাচাই-বাছাই শুরু করেছে বিইআরসি।

এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য মো. মিজানুর রহমান বলেন, পিডিবিসহ সব বিতরণ কোম্পানি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তারা সেগুলো যাচাই-বাছাই করছেন। পিডিবির প্রস্তাবও খতিয়ে দেখা হবে। গ্রাহক ও সংস্থা উভয়ের জন্য ইতিবাচক হয় এমন সিদ্ধান্তই নেওয়া হবে। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়।

সুবিধা পাবেন প্রিপেইড গ্রাহকরা: পিডিবি তাদের প্রস্তাবে প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করেছে। সংস্থাটি প্রিপেইড গ্রাহকদের বিদ্যুৎ চার্জের ওপর দুই শতাংশ রিবেট (ছাড়) দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এক্ষেত্রে পিডিবির যুক্তি হলো, সাধারণ গ্রাহকদের বিলের জন্য যেখানে দুই-আড়াই মাস অপেক্ষা করতে হয় সেখানে এ ধরনের গ্রাহকরা অগ্রিম বিল পরিশোধ করেন।

ব্যাটারিচালিত যানের বিদ্যুৎ বিল: বিদ্যুৎচালিত যানবাহনের (রিকশা/থ্রি-হুইলার) জন্য পৃথক ট্যারিফ কাঠামোর প্রস্তাব করেছে পিডিবি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথমে নিরুৎসাহিত করা হলেও দেশের জেলা-উপজেলাগুলোতে এ বাহনের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। স্বল্প দূরত্বের যাতায়াতে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেশে দুই লাখের ওপরে বিদ্যুৎচালিত রিকশা বা থ্রি হুইলার রয়েছে। তাদের জন্য প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৭ টাকা ২৫ পয়সা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

এছাড়া নির্মাণাধীন কাজের (বহুতল ভবন, ফ্লাইওভার, ব্রিজ, বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি) জন্য পৃথক ট্যারিফ প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে ইউনিটপ্রতি মূল্য প্রস্তাব ধরা হয়েছে ১০ টাকা ৩০ পয়সা।

এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।