বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার শহরে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কথিত শীর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনী প্রধান মুন্নাসহ ২৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবী তারা ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এরমধ্যে সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান মুন্নার বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে বলেও জানানো হয়। মুন্না শহরের বাঁচামিয়ারঘোনা এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে।
শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে কক্সবাজার সদর সডেল থানার কনফারেন্সে হলে আয়োজিত এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত জেলা পুলিশের চারটি টিম কক্সবাজার শহরের কাটা পাহাড়, আমতলী পাহাড়, মাটিয়াতলী পাহাড়, পোলাইন্না কাটা পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালায়। ওই সময় ১৯ মামলার আসামী মুন্নাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ২৬ জনকে আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ১ টি দেশীয় তৈরী এক নলা বন্দুক,১ রাউন্ড রাবার কার্তুজ ও ৭ টি অত্যাধুনিক টিপ ছোরা উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করেন অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে আদালতে প্রেরন প্রক্রীয়া চলছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসী মুন্না বাহিনীর প্রধান মুন্নার বাড়ি কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ারছড়ার বাঁচামিয়ারঘোনা এলাকায়। এক সময়ের শহরের আতঙ্ক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নুর জোহারের সন্ত্রাসী বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করতেন মুন্না। তারা শহরের পাহাড়তলী, এবিসিঘোনা, বাঁচামিয়ারঘোনা, সাহিত্যিকাপল্লী, রুমালিয়ারছড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় ছিনতাই, মাদক কারবার, জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকা-ের সাথে জড়িত ছিলেন। পরে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর শহরের পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ সাহিত্যিকা পল্লী সমিতি বাজার সংলগ্ন ব্রিজের নিচ থেকে নুর জোহারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নুর জোহারের মৃত্যুর পর রুমালিয়ারছড়ার আরেক সন্ত্রাসী রশিদ ড্রাইভারের ছেলে আবছারের সাথে নতুন সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেন মুন্না। কিন্তু সেই বাহিনীও টিকেনি। নেতৃত্বের দ্বন্দে¦ ২০২১ সালের শুরুর দিকে আবছারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন বাহিনী গড়ে তুলে মুন্না। তবে গত মাস দুয়েক আগে সন্ত্রাসী আবছারকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে আবছার কারাগারে।
এদিকে আবছারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর নতুন বাহিনী গড়ে তুলতে ছালেহ আহমেদ, হাবিবুল্লাহ, খাইরুল আমিনসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মুন্নাকে সঙ্গ দেয়। তাদের সহযোগিতায় প্রায় ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে মুন্না। এরমধ্যে দুই মাস আগে খাইরুল আমিন পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শহরের পর্যটন স্পটসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, মাদক কারবারসহ নানা অপরাধের জড়িত এই বাহিনী।
এই ওয়েব সাইটের কোন লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।